স্থায়ী কমিটি : স্টেডিয়ামে নারীদের খেলার পরিবেশ নিশ্চিতের সুপারিশ

আগের সংবাদ

দফায় দফায় বাড়ছে ওষুধের দাম : দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন ক্যাবের, দাম বাড়লে সাধারণ মানুষ রোগে ভুগে মারা যাবে

পরের সংবাদ

বাস্তবায়ন থমকে, শান্তি অধরা : শান্তিচুক্তির ২৫ বছর, সংঘাতে অশান্ত পাহাড়, বাড়ছে নতুন নতুন সশস্ত্র সংগঠন

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ডিসেম্বর ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নন্দন দেবনাথ, রাঙ্গামাটি থেকে : আজ ২ ডিসেম্বর, আস্থা অনাস্থায় পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৫তম বর্ষপূতি। চুক্তি স্বাক্ষরের দুই যুগ পার হলেও সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে টানাপড়েন ও দূরত্ব দিন দিন বাড়ছেই। পাহাড়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়নি আজো। চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে রয়েছে হতাশা ও ক্ষোভ। হানাহানি আর ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতে পার্বত্য অঞ্চল অশান্ত। সরকারের পক্ষ থেকে অধিকাংশ শর্ত পূরণের কথা বলা হলেও পার্বত্য আঞ্চলিক সংগঠনগুলো তাদের শর্তগুলো পূরণ হয়নি বলে অভিযোগ করে আসছে। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়া নিয়ে পাহাড়িদের মাঝে যেমন রয়েছে হতাশা, তেমনি পাহাড়ে বসবাসকারী বাঙালিদের মাাঝে চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে আছে প্রবল বিরোধিতা।
আর প্রধান শর্ত হিসেবে সশস্ত্র পার্বত্য আঞ্চলিক সংগঠনগুলো তাদের অবৈধ অস্ত্রই এখনও জমা দেয়নি বরং তাদের বহরে ধীরে ধীরে যুক্ত হয়েছে এসএমজি, এলএমজি, রাইফেল, স্নাইপার রাইফেলসহ অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। আর এই সব অস্ত্র ব্যবহার করে তারা পুরো পার্বত্য এলাকায় একের পর এক হত্যা, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে এলাকায় শান্তির পরিবর্তে অশান্তি সৃষ্টি করে চলেছে। শান্তি চুক্তির ২৫ বছরেও পাহাড়ে থামেনি অস্ত্রের ঝনঝনানি। এখনো গোলাগুলির শব্দে গভীর রাতে ঘুম ভাঙে এলাকায় বসবাসরত সাধারণ মানুষের। সশস্ত্র সংঘর্ষে পড়ছে লাশের পর লাশ। অব্যাহত রয়েছে পাহাড়ি আঞ্চলিক দলগুলোর সন্ত্রাসী বাহিনীর আধিপত্য বিস্তারের লড়াই। থেমে নেই পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন (সন্তু লারমার গ্রুপ) পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি, (মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা গ্রুপ) পার্বত্য জনসংহতি সমিতি সংস্কারপন্থি ও ইউনাইটেড পিপলস ডেমক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) নামের সংগঠনগুলোর সশস্ত্র কর্মকাণ্ড।
এছাড়া পাহাড়ে নতুন করে জন্ম নিয়েছে ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট’ (কেএনএফ) নামে সশস্ত্র গোষ্ঠী। তারা বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি বিলাইছড়ি সীমান্ত ঘেঁষা দুর্গম পাহাড়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসা কিছু তরুণকে জঙ্গি প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।

এমন সংবাদের ভিত্তিতে এইসব দুর্গম এলাকায় সেনাবাহিনী ও র‌্যাবের সন্ত্রাস বিরোধী চিরুনি অভিযান চালিয়ে জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’র ৭ জন এবং পাহাড়ি বিছিন্নতাবাদী সংগঠনের ৩ জনসহ মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এসময় তাদের কাছ থেকে বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়। বর্তমানেও বান্দরবানের রুমা ও রোয়াংছড়িতে যৌথবাহিনীর এ অভিযান চলছে।
এছাড়া পার্বত্য অঞ্চলে চারটি সংগঠনের পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের বেপরোয়া চাঁদাবাজি এবং বাঙালি-পাহাড়িদের ভূমি জটিলতাও প্রকট আকার ধারণ করেছে। এমন এক অবস্থার কারণে পাহাড়ে এখনও ফিরেনি শান্তির পরিবেশ। ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতে পাহাড়ে ঝরছে রক্ত। থামেনি অভ্যন্তরীণ হানাহানি। এ কারণে শান্তি চুক্তির এই ২৫ বছরে এসে ওই চুক্তির কিছু ধারা পরিবর্তন বা ‘রিভিউ’ করার জোরালো দাবি তুলেছেন পার্বত্য অঞ্চলের সাধারণ বাঙালি নেতারা।
১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ও সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জন সংহতি সমিতির মধ্যে পার্বত্য শান্তিচুক্তি সই হয়। এই চুক্তির মাধ্যমে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের অবসান হয়েছিল। পাহাড়ে তার একটা ইতিবাচক প্রভাবও পড়তে শুরু করে। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই সেই চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। তবে আন্তর্জাতিক মহলে এই চুক্তি প্রশংসিতও হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির অভিযোগ শান্তিচুক্তি এখনো পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। অপরদিকে চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটি তথা সরকার চুক্তির অধিকাংশ শর্তই বাস্তবায়ন হয়েছে বলে দাবি করে আসছে। সরকারের ভাষ্যমতে, চুক্তির ৭২টি ধারার মধ্যে ৪৮টি ধারা সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত হয়েছে এবং ১৫টি ধারা আংশিক বাস্তবায়িত হয়েছে। অপরপক্ষ পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির দাবি, ৭২টির মধ্যে মাত্র ২৫টি ধারা বাস্তবায়িত হয়েছে, ১৮টি ধারা আংশিক বাস্তবায়িত হয়েছে। অবশিষ্ট ২৯টি ধারা সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয়নি।
পার্বত্য শান্তি চুক্তির পর সরকার দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিসহ সব ক্ষেত্রেই ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। ওই শান্তি চুক্তির ফলে সাময়িকভাবে বন্ধ হয় দীর্ঘদিন ধরে চলা সশস্ত্র সংঘাত। কিন্তু সেটি বেশিদিন বিরাজ করেনি। বরং শান্তি চুক্তির বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে পাহাড়িদের একটি পক্ষ। যার অন্যতম হচ্ছে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)। যদিও বিভিন্ন সময়ে সংবাদ সম্মেলনে পার্বত্য শান্তি প্রতিষ্ঠা না হওয়ার জন্য সরকারকেই দোষারোপ করেন প্রতিমন্ত্রীর সুযোগ-সুবিধা ভোগকারী সন্তু লারমা। হুঁশিয়ারি দিয়ে সন্তু লারমা আরোও বলেন, ‘দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। পেছনে যাওয়ার আর কোনো পথ নেই। পার্বত্য অঞ্চলের জুম্ম জনগণ তাদের অস্তিত্ব সংরক্ষণে বদ্ধপরিকর।’
জানা যায়, জেএসএসের (সন্তু লারমা) সঙ্গে সরকারের চুক্তির ফলে সব সুবিধা ভোগ করার সুযোগ পান সন্তু লারমা। ফলে জেএসএস ভেঙে তাৎক্ষণিক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া হিসেবে প্রসীত খীসার নেতৃত্বে গঠন হয় সশস্ত্র সংগঠন ‘ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ-প্রসীত)’। এরপর হয় ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) ও জেএসএস (সংস্কার)। নতুন নতুন সংগঠন ও বাহিনী গঠিত হয়ে জড়িয়ে পড়ে চাঁদাবাজি, হত্যা, ধর্ষণ ও অপহরণের মতো অপকর্মে। এই সংগঠনগুলোর অভ্যন্তরীণ দ্বন্ধ এবং আধিপত্যের কারণে বেড়েছে রক্ষক্ষয়ী সংঘাত। অভিযোগ রয়েছে, বেপরোয়াভাবে ওইসব অপকর্ম ঘটালেও কঠোরভাবে তাদের দমন করা হচ্ছে না। উল্টো ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সুযোগ নিয়ে সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীসহ পার্বত্য অঞ্চলের নিরীহ বাঙালিদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে তারা।
চুক্তির পরে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে চার আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল জড়িয়ে পড়ে ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এই সংঘাতে প্রাণ হারাচ্ছে বহু মানুষ। এই সময় পাহাড়ে একমাত্র শান্তিপূর্ণ এলাকা ছিল বান্দরবান। কিন্তু এখানেও স¤প্রতি মগবাহিনী নামে তৈরি হয় একটি সশস্ত্র গ্রুপ। এই বাহিনী গঠনের পর থেকে আওয়ামী লীগ ও জেএসএস উভয় দল থেকে নিহত হন অনেক নেতাকর্মী। এর কারণ হিসেবে পাহাড়ি নেতারা চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়াকেই দায়ী করছেন।
সরকার ক্রমান্বয়ে শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা সত্ত্বেও পার্বত্য আঞ্চলিক দলগুলো সরকারকে সহযোগিতা না করে চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারের আন্তরিকতা নেই মর্মে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া জেএসএস ও ইউপিডিএফের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা প্রতিনিয়ত সংঘর্ষ, অপহরণ, গুম, হত্যা, চাঁদাবাজি ইত্যাদি অপরাধমূলক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে পাহাড়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করছে। আর আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোর এইসব অপতৎপরতা শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নকে যেমন ব্যাহত করছে তেমনি পার্বত্য চট্টগ্রামে বিরাজমান শান্তিও বিনষ্ট করছে। এই প্রেক্ষাপটে পাহাড়ে শান্তি রক্ষায় এবং শান্তিচুক্তি বাস্তবায়নের স্বার্থে পাহাড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখা, অবৈধ অস্ত্রধারীদের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান পরিচালনা করা প্রয়োজন। একই সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠায় পাহাড়ে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ, সহযোগিতা, সহাবস্থানের মনোভাব ও সাম্প্রদায়িক বৈরিতা-বৈষম্য ভুলে সমান অধিকার প্রতিষ্ঠায় পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নে সম্মিলিতভাবে কাজ করার তাগিদ অভিজ্ঞ মহলের।

পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের অন্যতম চ্যালেঞ্জ ছিল পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি-নিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন, ২০০১। কিন্তু সেটা অকার্যকর। এ আইনটি ২০০১ সালে প্রণীত হলেও এ আইনের কিছু ধারা পার্বত্য চুক্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় সেসব ধারা সংশোধনের জন্য ১৫ বছর সময় লেগেছিল। এ বিষয়টি উল্লেখ করে সম্প্রতি ঢাকায় এক সেমিনারে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, ২০১৬ সালে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি-বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন- ২০০১’ সংশোধিত হলেও এই আইনের বিধিমালা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ফলে কমিশনের কাছে দুই দফায় জমাপড়া প্রায় ২২ হাজারের অধিক আবেদনের কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না।
বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান বলেন, পাহাড়ে এখনো শান্তি আসেনি। পাহাড়ে এখনো স্বাধীনভাবে চলাফেরা, মতপ্রকাশ করা ও মানুষের অধিকার নিশ্চিত হয়নি। এই অবস্থায় পার্বত্য শান্তি চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তিনি।
আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ইন্টু মনি চাকমা বলেন, পার্বত্য চুক্তির ফলে পাহাড়ের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা ছিলো। কিন্তু চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন না হওয়ায় পাহাড়ের আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি। তিনি পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পাহাড়ে মানুষের অধিকার নিশ্চিতের দাবি জানান।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মুজিবুল হক বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের বাঙালিরাও চায় চুক্তি বাস্তবায়িত হোক। তবে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের ফলে যে ধারাগুলোর দ্বারা বাঙালিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে সেই ধারাগুলে বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। আমরাই চাই পার্বত্য অঞ্চলের সব সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করুক।
রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. মুছা মাতব্বর বলেন, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নে মূল বাধা হচ্ছে অবৈধ অস্ত্র, অবৈধ অস্ত্রের কারণে পাহাড়ে চাঁদাবাজি দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সরকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করতে পারছে না। পাহাড়ের মানুষের শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার আন্তরিক হলেও জনসংহতি সমিতি পার্বত্য অঞ্চল থেকে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে উঠেপড়ে লেগেছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার বলেন, চুক্তির পর এখানে যে একেবারেই উন্নয়ন হয়নি তা বলা যাবে না। উন্নয়ন হয়েছে কিন্তু তা যান্ত্রিক। চুক্তিতে বলা রয়েছে আঞ্চলিক পরিষদের কাছে পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ড ও পার্বত্য জেলা পরিষদগুলো ন্যস্ত থাকবে। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানগুলো কখন কী কাজ করছে তা আঞ্চলিক পরিষদকে জানানো হচ্ছে না। যার কারণে সুষম উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। যতটুকু উন্নয়ন মানুষ ভোগ করার কথা তা ভোগ করতে পারছে না। চুক্তির সব ধারা বাস্তবায়িত হলে মানুষ সুষম উন্নয়নের ফল ভোগ করতে পারবে।
তিনি আরো বলেন, পাহাড়ের অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কোনো অবৈধ অস্ত্রধারী সংগঠন নেই। আর যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হয়তো হতাশাগ্রস্ত কিছু লোক। যারা চুক্তি বাস্তাবায়ন না হওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছে। সরকার তাদের নিষিদ্ধ করুক। আমরা অস্ত্র উদ্ধারে সহযোগিতা করব।

২৯৯ নম্বর রাঙ্গামাটি সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেন, পার্বত্য চুক্তির মাধ্যমে রাঙ্গামাটির আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমান সরকার শান্তিচুক্তি করেছিল এবং শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন ও মানুষের জীবনমান উন্নত করার জন্য কাজ করছে। শান্তি চুক্তির ফলে বাংলাদেশের অন্যান্য সমতল এলাকার মানুষের মতো পার্বত্যাঞ্চলের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু পার্বত্যাঞ্চলের সব অধিবাসীদের পক্ষে চুক্তি সম্পাদনকারী জনসংহতি সমিতি বার বার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে বাধা দিচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়