প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের ফল ১৪ ডিসেম্বর

আগের সংবাদ

১৭২ দেশে শ্রমবাজার : রেমিট্যান্স কমছে যে কারণে

পরের সংবাদ

পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি : শুল্কমুক্ত কাগজ আমদানির দাবি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : মিল মালিক ও কাগজ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটে দেশজুড়ে কাগজের সংকট দেখা দিয়েছে। দ্রুত এ সিন্ডিকেট দমন করে বিদেশ থেকে শুল্কমুক্ত কাগজ আমদানি করতে হবে। তা না হলে আগামী বছর নির্ধারিত সময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যবই তুলে দেয়া সম্ভব হবে না। একুশে বইমেলাসহ শিক্ষা ব্যবস্থায় স্থবিরতা তৈরি হবে। শিক্ষার্থীরা লেখার কাগজ পাবে না। এমনকি ডায়েরি-ক্যালেন্ডার ও কাগজের ব্যাগ তৈরির কাজও থমকে যাবে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি এমন তথ্য তুলে ধরে। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মো. আরিফ হোসেন ছোটন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দেশের বাজারে মুদ্রণ ও লেখার কাগজের সংকট তৈরি হয়েছে। একটি সিন্ডিকেট চক্র এ পরিস্থিতি তৈরি করেছে। কাগজের যে আকাশচুম্বী মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে, তা স্বাধীন বাংলাদেশে অতীতের যে কোনো সময়কে ছাড়িয়ে গেছে। এটি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আগামী বছরের কোটি কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন বিঘœ ঘটবে, তেমনি ২০২৩ সালে অমর একুশে বইমেলায় বইয়ের দাম বেড়ে যাবে, প্রকাশকরা নতুন বই প্রকাশ করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন।
আরিফ হোসেন বলেন, করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বেশি প্রভাব পড়েছে আমাদের কাগজের বাজারে। দেশের নানা প্রকাশনার মূল উপাদান এবং শিক্ষার প্রধান উপকরণ কাগজ। বিশ্ববাজারে কাগজ তৈরির কাঁচামাল পাল্প ও পরিবহন ব্যয় বেড়েছে। যে পরিমাণ বেড়েছে তার চেয়ে দুই থেকে আড়াই গুণ বেশি দাম দেশের কাগজ মিলগুলো আদায় করছে। এতে দেশের শিক্ষা ও প্রকাশনা শিল্প বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপাতে গিয়ে সরকার বর্তমানে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে। বলা হয়েছে, ২০২১ সালে ৮০ গ্রাম অফসেট এক রিম কাগজের মূল্য ১ হাজার ৫০০ টাকা হলেও বর্তমানে দাম বেড়ে তা ৩ হাজার টাকা হয়েছে। ১০০ গ্রামের একই কাগজ ১ হাজার ৭৫০ থেকে বেড়ে ৪ হাজার ২০০ টাকা দাঁড়িয়েছে। ২০ বাই ৩০ ইঞ্চি নিউজপ্রিন্ট কাগজের রিম ৩৮০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা হয়েছে। অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে কোনো দুষ্টচক্রের ইন্ধন রয়েছে কি না তা সরকারকে খতিয়ে দেখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
কাগজের বাজার স্বাভাবিক করতে তারা ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো-অস্বাভাবিক কাগজের দাম বৃদ্ধির কারণ তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া, দ্রুততম সময়ে বিদেশ থেকে কাগজ আমদানিতে শুল্কমুক্ত ঘোষণা, দেশে সব ক্ষেত্রে ব্যবহৃত কাগজ রিসাইক্লিং কাজে ব্যবহার করার ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখা, কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীর গুদামজাতকৃত কাগজ স্বাভাবিক মূল্যে বিক্রির ব্যবস্থা ও শুল্ক হ্রাস/মুক্ত করা এবং ভর্তুকি বা প্রণোদনামূলক ছাড় দেয়া। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জাবাবে সংগঠনের সহসভাপতি শ্যামল পাল বলেন, বিশ্ববাজারে কাগজ তৈরির কাঁচামাল পাল্পের যে পরিমাণে দাম বেড়েছে তার চেয়ে দুই থেকে আড়াই গুণ দাম মিল ও কাগজ ব্যবসায়ীরা আদায় করছেন। তাদের মধ্যে একটি সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। স্বল্প পরিমাণে পাল্প আমদানি করে কাগজের সংকট তৈরি করে চড়া দামে বিক্রি করছেন তারা।
তিনি বলেন, কাগজ সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই তৈরি বন্ধ হয়ে গেছে। আগামী বইমেলায় নতুন বই প্রকাশনা কমে যাবে, মূল্য বাড়বে। শিক্ষার্থীদের সহায়ক বই, লেখার খাতাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের জন্য কাগজ পাওয়া যাবে না।
শ্যামল পাল বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে শুল্কমুক্ত কাগজ আমদানির ঘোষণা দিতে হবে। সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের ঘোষণা দেয়া হলে আগামী ৭ দিনের মধ্যে কাগজের দাম কমে যাবে বলে মনে করেন প্রকাশকরা।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন মাজহারুল ইসলাম, মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, মির্জা আলী আশরাফ কাসেম, জ্ঞান ও সৃজনশীল পুস্তুক প্রকাশক সমিতির সাবেক সভাপতি ওসমান গণি, সাবেক সভাপতি আমলগীর সিকদার লোটন প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়