নাইক্ষ্যংছড়ি : ডিজিএফআই কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় মামলা

আগের সংবাদ

তিন কারণে ভালো ফলাফল : সংক্ষিপ্ত সিলেবাস, প্রশ্নপত্রে সুবিধা ও সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের প্রভাবে পাসের হার বেড়েছে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায়

পরের সংবাদ

বাংলা একাডেমিতে সেমিনার : মুনীর চৌধুরী বাঙালির হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন হাজার বছর

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : তুমুল জনপ্রিয়তা আর তুখোড় মেধার কারণেই পাক সেনাবাহিনীর দোসর আল-বদরের সদস্যদের নীলনকশার প্রথম সারিতে ছিল মুনীর চৌধুরীর নামটি। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বাসা থেকে তাকে ধরে নিয়ে যায় পাকসেনারা। বাংলাদেশকে পঙ্গু করে দেয়ার মহাযজ্ঞে একজন একজন করে সোনালি সন্তান হারিয়ে যেতে থাকে রায়েরবাজারের বধ্যভূমিতে। রায়েরবাজারের সেই বধ্যভূমি থেকে অন্য আরো অনেক বুদ্ধিজীবীর মতোই আলাদা করে আর শনাক্ত করা যায়নি মুনীর চৌধুরীকে। গতকাল রবিবার ছিল একাত্তরের বধ্যভূমিতে হারিয়ে যাওয়া সেই নক্ষত্রের জন্মদিন।
এ উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘শহীদ অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী : একজন আদর্শ শিক্ষকের প্রতিকৃতি’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি সচিব মো. আবুল মনসুর। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর পর্ষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শহীদ অধ্যাপক মুনীর চৌধুরীর কনিষ্ঠপুত্র সংস্কৃতি এবং মানবাধিকারকর্মী আসিফ মুনীর। আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হক। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের জনশিক্ষা বিভাগের কিপার কবি শিহাব শাহরিয়ার।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মো. আবুল মনসুর বলেন, মুনীর চৌধুরী এমন একজন প্রতিভাবান মানুষ ছিলেন, যিনি বাংলা ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন। শুনেছি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ও ইংরেজি বিভাগের পাঠদান ক্লাসে ছিলেন সবচেয়ে জনপ্রিয় শিক্ষক। গুণীজনরা বেঁচে থাকেন তাদের রেখে যাওয়া কাজের মধ্যে। তিনিও সেভাবে বেঁচে থাকবেন।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, শহিদ অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী খুব সংক্ষিপ্ত জীবনে অনেক কিছু অর্জন করেছেন। বাংলা টাইপ রাইটার মেশিনের প্রচলন তার মাধ্যমেই শুরু হয়। স্বাধীন বাংলাকে মেধাশূন্য করার লক্ষ্যে মুনীর চৌধুরীর মতো বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, বাঙালি জাতি তার এই বীর সন্তানদের স্মরণ করবে শ্রদ্ধাভরে। সৈয়দ আজিজুল হক বলেন, বাংলা সাহিত্যের দিকপাল, অসম্ভব মেধাবী মুনীর চৌধুরী হাজার বছর বেঁচে থাকবেন বাঙালির হৃদয়ে। তার জ্ঞানার্জনের আকাক্সক্ষা মানুষের মনে অনুপ্রেরণা যোগায়। বাংলাদেশের অভূতপূর্ব প্রতিভাবান ব্যক্তিদের মধ্যে মুনীর চৌধুরী অন্যতম।
মূলপ্রবন্ধে আসিফ মুনীর বলেন, মুনীর চৌধুরীর সবচেয়ে বেশি সফলতা আধুনিক বাংলা নাটকের জনক হিসেবে। শিক্ষক হিসেবেও অনবদ্য সাফল্যের কথা শোনা যায় তার সমসাময়িক বন্ধু-ছাত্র-গুণমুগ্ধদের কাছ থেকে। কৈশোর থেকে পরিণত বয়স এবং বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের আগে পর্যন্ত দেশি-বিদেশি গদ্য সাহিত্য, নাটক, বাংলা ভাষা, ভাষাতত্ত্ব নিয়ে পাঠ ছিল মুনীর চৌধুরীর নেশা। শ্রেণিকক্ষে তার পাঠদান এবং রাজনৈতিক, সাহিত্য বা সাংস্কৃতিক সমাবেশে বক্তৃতাগুলো মনোমুগ্ধকর ছিল। তিনি আরো বলেন, বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্যের প্রচুর পড়াশোনা থাকায় এই দুই ভাষাতেই তার শব্দের ভাণ্ডার অত্যন্ত সমৃদ্ধ ছিল। তার পাঠদানের মধ্যে তিনি বিভিন্ন দেশি-বিদেশি সাহিত্যের উদাহারণ টেনে আনতেন এবং অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় পাঠের বিষয়বস্তু উপস্থাপন করতেন। স্বাগত বক্তব্যে মো. কামরুজ্জামান বলেন, বাংলা সাহিত্যের দিকপাল, অসম্ভব মেধাবী মুনীর চৌধুরী হাজার বছর বেঁচে থাকবেন বাঙালির হৃদয়ে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়