ইকুয়েডর রুখে দিল ডাচদের

আগের সংবাদ

১০ দফা দাবিতে নৌশ্রমিক ধর্মঘট : সারাদেশে পণ্য পরিবহন বন্ধ

পরের সংবাদ

বেপরোয়া চকরিয়ার ৩ ইউপি সদস্য : ফসলি জমি থেকে অবাধে তোলা হচ্ছে বালু

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মিজবাউল হক, চকরিয়া (কক্সবাজার) থেকে : কক্সবাজারের চকরিয়ায় ভেকু মেশিন দিয়ে ফসলি জমি থেকে বেপরোয়াভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে তিন ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। কৃষিজমি ও মাতামুহুরী নদীর তিনটি পয়েন্ট থেকে অবৈধভাবে এই বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। দৈনিক ৪০-৫০টি ডাম্প ট্রাকে করে এই বালু অন্যত্র নিয়ে গিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন ফসলি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে, অন্যদিকে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব এবং নদীভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
অভিযুক্ত ওই তিন ইউপি সদস্য হলেন- কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের নাসির উদ্দিন নাছু, ৮ নং ওয়ার্ডের শফিকুল ইসলাম ও ৯ নং ওয়ার্ডের আবু নঈম রুমি।
চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের কামারপাড়ার কৃষক নুরুল কবির, মকছুদ আহমদ, নুর খান, এমরানুল হক বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব কিছু কৃষিজমি রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ওই কৃষিজমিতে ফসল উৎপাদন করছি। এবার জমিতে বাদাম, বেগুন, মরিচ, টমেটো ও মুলা চাষ করেছি। কিন্তু হঠাৎ করে ফসল তোলার আগে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বাদাম ক্ষেতের মাঝখানে গর্ত করে বালু উত্তোলন করছেন কাকারা ইউনিয়নের তিন ইউপি সদস্য। তারা কৃষিজমি সুরক্ষা আইন মানছেন না।’
তারা আরো জানান, ওই তিন ইউপি সদস্য অন্তত ৩০ জন কৃষকের জমি দখল করে বালু উত্তোলন করছেন। গভীরভাবে খনন করে বালু উত্তোলন করায় আশপাশের জমি ভেঙে পড়ছে। এতে কৃষকরা সব সময় আতঙ্কে থাকেন কখন কার জমি পাশের গর্তে ভেঙে পড়ে। একই সঙ্গে প্রতিদিন প্রায় অর্ধশতাধিক ট্রাক চলাচল করায় গ্রামের রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, কাকারা ইউনিয়নের ওই তিন সদস্যসহ আরো কয়েকজন মিলে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। গভীরভাবে জমি খনন করে বালু উত্তোলন কাজে জড়িত রয়েছেন তারা। একই সঙ্গে মাতামুহুরী নদী থেকেও বালু উত্তোলন করছে তারা। ফলে বর্ষা েেমৗসুমে দুই পাড় ভেঙে মাতামুহুরী নদীর মূল মানচিত্র পরিবর্তন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। অভিযোগ রয়েছে, কাকারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এই সিন্ডিকেটকে মদদ দিচ্ছে।
এদিকে স্থানীয় কৃষকরা বালু ব্যবসায়ী তিন ইউপি সদস্যসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। যদিও অভিযোগ দেয়ার পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। এতে তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আর সাধারণ কৃষকদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। এ বিষয়ে ৮ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কারো জমি থেকে বালু উত্তোলন করছি না। উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়ে কোনো লাভ হবে না। মাতামুহুরী নদীর জেগে ওঠা চর থেকে বালু উত্তোলন করছি।’ চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান বলেন, ‘মাতামুহুরী নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট ও জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের খবর পেয়েছি। স্থানীয় কিছু কৃষক লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে কয়েকজনকে জেল ও জরিমানাও দিয়েছি।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়