মোজাম্মেল-প্রণয় সাক্ষাৎ : কলকাতার থিয়েটার রোডের সেই বাড়িটি চেয়েছে বাংলাদেশ

আগের সংবাদ

কাদের সঙ্গে ডায়লগ করব? মহিলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্ন

পরের সংবাদ

৩ শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানি বন্ধ ৯ মাস : ২০ হাজার শ্রমিকের মানবেতর জীবন

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা : সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার তিন শুল্ক স্টেশন বড়ছড়া, চারাগাঁও ও বাগলী (বীরেন্দ্রনগর) দিয়ে প্রায় ৯ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে কয়লা আমদানি। ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছেন চার শতাধিক আমদানিকারক। আমদানি বন্ধ থাকার কারণে এবং বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের মার্চ থেকে কয়লা আমদানি বন্ধ রয়েছে। গত প্রায় ৯ মাস ধরে আমদানি বন্ধ থাকায় তারা অনেক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তারা আরো জানান, বড়ছড়া, বাগলী ও চারাগাঁও শুল্ক স্টেশন দিয়ে নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকে ভারত থেকে কয়লা আমদানি শুরু হয়। ২০১৪ সালে ভারতের মেঘালয়ের একটি পরিবেশবাদী সংগঠনের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবেশগত ক্ষতির কথা বিবেচনা করে কয়লা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেশটির ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল। পরে টানা প্রায় সাত মাস বন্ধ থাকে কয়লা আমদানি।
এরপর পুনরায় আমদানি শুরু হলেও তা আর নিয়মিত হয়নি। বছরে তিন-চার মাস চলে আমদানি আর ৮-৯ মাস বন্ধ থাকে। অন্যদিকে, কয়লা আমদানি বন্ধ থাকায় প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অনেকে এলাকা ছেড়ে কাজের সন্ধানে অন্যত্র চলে গেছেন।
বড়ছড়া শুল্ক স্টেশনের কয়লা আনলোড শ্রমিক সামছুল হক বলেন, কয়লা আমদানি বন্ধ থাকায় ২০ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে খুব কষ্টের মধ্যে জীবন চালাচ্ছে। আশায় আছি সরকার আমাদের দিকে একটু নজর দিবে।
শুল্ক স্টেশনের জয়বাংলা বাজারের ব্যবসায়ী বাছির মিয়া জানান, স্টেশনে আমদানি চালু থাকলে বেচাকেনা বাড়ে। কারণ শ্রমিকদের হাতে টাকা থাকে। বন্ধ থাকলে শ্রমিক বেকার, আমাদের ব্যবসায় ধস নামে। শুল্ক স্টেশনগুলো চালু থাকলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করবে। অন্যদিকে শ্রমিকরাও বাঁচবে আমরাও বাঁচব।
আমদানিকারক হাজী মুজিবুর রহমান তালুকদার বলেন, এ তিনটি শুল্ক স্টেশন থেকে সরকার বছরে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। কিন্তু নানা কারণে আমদানি বন্ধ থাকায় সরকার যেমন রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, তেমনি আমরা আমদানিকারকরাও হচ্ছি ক্ষতিগ্রস্ত। দেশে ভারতীয় কয়লার প্রচুর চাহিদা রয়েছে। আমদানি বন্ধ থাকায় ইন্দোনেশিয়ার কয়লার চাহিদা বাড়ছে। এখানকার কয়লা সারাবছর আমদানি করতে পারলে শুল্ক স্টেশনগুলোতে প্রাণচাঞ্চল্য থাকবে, সরকারও পাবে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।
তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন তালুকদার ভোরের কাগজকে বলেন, কয়লা আমদানি করতে বাংলাদেশে কোনো সমস্যা নেই। ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকার এলসি করা আছে। আমাদের দাবি, শ্রমিক ও আমদানিকারকদের ক্ষতি এবং বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে সরকার এ বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আবারো উপজেলার তিনটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানি শুরু করবে।
তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি আলকাছ উদ্দিন খন্দকার বলেন, ভারতের সমস্যার কারণে কয়লা আমদানি বন্ধ থাকায় শুধু ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় না, সরকারও কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা আশা করছি, সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে আবারো তিনটি শুল্ক স্টেশন দিয়ে কয়লা আমদানি শুরু করতে ব্যবস্থা নেবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়