রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য : শিশুবক্তা রফিকুলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য পেছাল

আগের সংবাদ

ঢাবি সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি : বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে স্বচ্ছতা থাকতে হবে

পরের সংবাদ

উলিপুরে স্কুলের কমিটি গঠনে অনিয়ম ও টাকা আত্মসাৎ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

তৈয়বুর রহমান, কুড়িগ্রাম থেকে : কুড়িগ্রামের উলিপুরে রামপ্রসাদ মতিউল্লাহ পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবাহানের বিরুদ্ধে কমিটি গঠনে অনিয়মসহ সিøপের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। প্রধান শিক্ষক তার পিতা ও দুই সহোদরকে ম্যানেজিং কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করে এসব দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি অভিভাবক সদস্যরা কমিটি গঠনে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিকার চেয়ে উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত আবেদন করলেও প্রতিকার না পাওয়ায় তাদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়।
লিখিত অভিযোগ ও অনুসন্ধানে জানা গেছে, রেজি. প্রাথমিক বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠালগ্নে জমিদাতা হোসেন আলীর ছেলে আব্দুস সোবাহান প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ হয়। ওই সময় প্রধান শিক্ষক তার বড় ভাই আবুল কাসেমকে সভাপতি, পিতা হোসেন আলীকে সহসভাপতি ও নিজের পছন্দ মতো সদস্য নিয়ে কমিটি গঠনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে ইচ্ছামতো প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে আসছেন। ২০২০-২১ অর্থবছরে বিদ্যালয়টির দোতলা ভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দ এলে স্থান নির্বাচন নিয়ে দাতা সদস্য হোসেন আলী পরিবারের সঙ্গে শিক্ষা বিভাগের জটিলতা সৃষ্টি হয়।
এদিকে সমালোচনার মুখে প্রধান শিক্ষক আবারো অত্যন্ত গোপনে তার ছোট ভাই মাইদুল ইসলামকে সভাপতি, বড় ভাই আবুল কাসেমকে সহসভাপতি, চাচাতো ভাইয়ের স্ত্রী মাসুমা বেগম ও ভাগ্নে বউ মারুফা বেগমকে সদস্য করাসহ নিজের পছন্দের লোক দিয়ে গোপনে কমিটি গঠন করেন। পদাধিকার বলে ইউপি সদস্য সান্তনা বেগমকে কমিটিতে রাখা হলেও তার সঙ্গে কোনো আলোচনা কিংবা স্বাক্ষর গ্রহণ করা হয়নি বলে জানান তিনি। অভিযোগ রয়েছে, কমিটি গঠনে দাখিলকৃত রেজুলেশনের অধিকাংশ স্বাক্ষর জাল। এছাড়া দাতা হোসেন আলী জীবিত থাকলেও কমিটি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রধান শিক্ষক দাতা পরিবর্তন করে কমিটি গঠন করেন বলে জানা গেছে।  কোনো প্রকার নির্বাচন কিংবা সাধারণ সভা ছাড়াই কমিটি দাখিল করায় অভিভাবক মহলে তোলপাড় শুরু হয়। এ রকম পরিস্থিতিতে বিদ্যালয়ের অধিকাংশ ছাত্রের অভিভাবক প্রত্যক্ষ নির্বাচনে কমিটি গঠন, আর্থিক দুর্নীতির প্রতিকার চেয়ে উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভাপতিসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। কিন্তু প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণে কর্তৃপক্ষের রহস্যজনক নীরবতায় ক্রমেই পরিস্থিতির অবনতি হয়।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক ২০১৮-১৯ অর্থবছর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটির অনুমোদনক্রমে বিদ্যালয় মেরামত ও সংস্কার কাজের জন্য দেড় লাখ টাকা উত্তোলন করেন। উল্লেখিত টাকা কী কাজে কোথায় ব্যয় করা হয়েছে তা স্থানীয় অভিভাবকরা অবগত নন। এছাড়া ২০২১-২২ অর্থবছরের সিøপের ৬০ হাজার ও প্রাক প্রাথমিকের জন্য ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ এলে ভুয়া বিল ভাউচার দাখিলের মাধ্যমে সব টাকা তুলে পকেটস্থ করা হয়েছে। এভাবেই দাতা পরিবার ও প্রধান শিক্ষক পকেট কমিটি করে ২০১৩ সাল থেকে বিদ্যালয়ের অনুকূলে আসা সিøপের টাকা প্রাক প্রাথমিকের টাকা ও উন্নয়ন বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ করেন।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবাহানের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, স্কুলে নিরাপদ জায়গা না থাকায় এসব মালামাল ক্রয় করা হয়নি। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. নাদিরুজ্জান বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত চলছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়