ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি : ছাতকে গোয়া বিলে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ পাথর শ্রমিক আবুল হোসেনের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজের ২৪ দিন পর মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের গোয়া বিলের পাশে একটি ঝোঁপ থেকে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে। পাথর শ্রমিক আবুল হোসেন (৫৫) ছাতকের ইসলামপুর ইউনিয়নের সৈদাবাদ গ্রামের মৃত আব্দুল মনাফের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে গোয়া বিলের পাড়ে গরু চরাতে গিয়ে মন্তাজনগর গ্রামের আমির উদ্দিনের ছেলে সালেহ আহমদ একটি লাশ দেখে গ্রামের লোকজনদের খবর দেন। খবর পেয়ে নিখোঁজ আবুল হোসেনের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে লাশ দেখে শনাক্ত করেন। শরীরের অন্যান্য অংশ থেকে মাথার খুলি ছিল বিচ্ছিন্ন। তবে মেরুদণ্ডসহ বুক ও হাত-পায়ের হাড়ের সঙ্গে কর্দমাক্ত একটি গেঞ্জি ও লুঙ্গি পাওয়া গেছে। লাশের পাশে লুঙ্গি ও গেঞ্জি দেখে আবুল হোসেনের লাশ বলে তার পরিবারের লোকজন শনাক্ত করেন।
বিকালে ছাতক থানার ওসি মাহবুবুর রহমান ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ মর্গে পাঠান। আবুল হোসেনের পরিবারের লোকজন জানান, প্রতিদিন ভোরে জাল দিয়ে গোয়া বিলের পাড়সংলগ্ন উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরতে যান আবুল হোসেন। বিল এবং বিলের আশপাশে গোপনে মাছ ধরার অপরাধে প্রায়ই বিলের পাহারাদাররা তাকে গালিগালাজসহ হুমকি-ধামকি দিত। কিন্তু কিছুতেই তাকে মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে পারেননি তারা। এভাবেই অন্যদিনের মতো ২১ অক্টোবর ভোরে গোয়া বিলসংলগ্ন উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরতে যান আবুল হোসেন। কিন্তু সেদিন আর তিনি বাড়ি ফিরে আসেননি।
আবুল হোসেন মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজের ঘটনায় প্রতিবাদী হয়ে ওঠে এলাকার লোকজন। তারা বিষয়টি মৌখিকভাবে থানা পুলিশকেও অবহিত করেন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান না পেয়ে ঘটনার পরে ২ নভেম্বর আবুল হোসেনের স্ত্রী সবতুন বেগম বাদী হয়ে বিলের পাহারাদার সৈদাবাদ গ্রামের ইন্তাজ আলীর ছেলে শুকুর আলী, মন্তাজনগর গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে মনির উদ্দিন ও সফিক উদ্দিনসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ আমল গ্রহণকারী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা (নং-৪৮৮/২০২২) দায়ের করেন। আদালত ৭ নভেম্বরের মধ্যে সবতুন বেগমের অভিযোগটি থানায় এফআইআর করতে ছাতক থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে গোয়া বিলের পাশে উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরার অপরাধে আসামিরা আবুল হোসেনকে অপহরণ ও হত্যা করে লাশ গুম করতে পারে। ২১ অক্টোবর ভোর থেকেই আবুল হোসেন নিখোঁজ হয়। তবে এ ঘটনায় জড়িত কাউকে এখনো আটক করা হয়নি।