জাহাঙ্গীর কবির নানক : বিএনপির মানবতার শিক্ষা নেয়া দরকার

আগের সংবাদ

এপার ওপার সুড়ঙ্গ সংযোগ : কর্ণফুলীর তলদেশে ‘বঙ্গবন্ধু টানেল’ উদ্বোধনের অপেক্ষায়

পরের সংবাদ

আশ্রয়ণ প্রকল্পের নামে বালু তুলে অন্যত্র বিক্রি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মাসুম বাদশাহ, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) থেকে : সিংগাইর উপজেলার দক্ষিণ চারিগ্রামের ভাঙনপ্রবণ কালিগঙ্গা নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর নামে ওই বালু উত্তোলন করছেন চারিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান মো. রিপন হোসেন। অথচ এই বালু বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে। এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন ওই ইউনিয়নের মেম্বাররা।
গতকাল শনিবার অবৈধ ওই বালু ব্যবসা বন্ধে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওর শরণাপন্ন হন মেম্বাররা।
জানা গেছে, এর আগে অন্য একটি গ্রুপ প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক গৃহীত আশ্রয়ণ প্রকল্প ভরাটের নামে ওই নদী থেকে বালু উত্তোলন করে অন্যত্র বিক্রি করে। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আসলে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে গত ৮ নভেম্বর থেকে ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ভাঙনপ্রবণ এলাকা থেকে ড্রেজার ও বলগেট বসিয়ে বালু উত্তোলন শুরু হয়। আর এ বালু দেদার বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হচ্ছে না কোনো ব্যবস্থা।
শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, দক্ষিণ চারিগ্রাম ও বরাটিয়া বাজার সংলগ্ন এলাকায় বলগেট লাগিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলতে গেলে এগিয়ে আসেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মহসিন। তিনি জানান, ইউএনও ওই চেয়ারম্যানকে বালু উত্তোলনের দায়িত্ব দিয়েছেন। আগামী দুইদিনের মধ্যে আশ্রয়ণ প্রকল্পে মাটি ভরাটের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এদিকে, এই স্থানের অদূরে বরাটিয়া বাজারের পশ্চিম পাশে স্থানীয় ই¯্রাফিল, পাপলু ও খোরশেদ গং বালু উত্তোলন করে পাইপের মাধ্যমে অন্যত্র জমা করছেন। তাদের এ বালু উত্তোলনের ছবি তুলতে গেলে তারা বাধা দেন। একপর্যায়ে তারা সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়ে বলেন, ‘আমরা অন্য জায়গা থেকে বালু ক্রয় করে ব্যবসা করছি।’
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, গত ছয়দিন ধরে বালু উত্তোলন করলেও আশ্রয়ণ প্রকল্পে মাত্র একদিন সামান্য কিছু বালু ফেলা হয়েছে। বাকি পাঁচদিনের উত্তোলন করা বালু ট্রলার ও ট্রলিযোগে অন্যত্র বিক্রি করা হচ্ছে।
চারিগ্রাম ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুল হালিম বলেন, ‘সামান্য কিছু বালু আশ্রয়ণ প্রকল্পে ফেলে বাকি প্রায় ৩০ বলগেট বালু রাতের আঁধারে অন্যত্র বিক্রি করা হয়েছে। আমরা সব মেম্বার মিলে উপজেলা চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে বিষয়টি ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি।’ দক্ষিণ চারিগ্রামের বাসিন্দা এডভোকেট রকিব-উল হাসান জানান, বিধি মোতাবেক নদী ভাঙন এলাকা ছাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পে বালু ভরাট করলে সমস্যা নেই। কিন্তু দুঃখের বিষয় ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলানো জায়গার আশপাশ থেকেই এ বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
চারিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান মো. রিপন বলেন, ‘এর আগে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে আশ্রয়ণ প্রকল্প ভরাটের সময় অনিয়ম হওয়ায় প্রশাসন তা বন্ধ করে দেয়। এখন ডিসি স্যারের অনুমতি নিয়ে ইউএনও স্যার আমাকে বালু ভরাটের দায়িত্ব দিয়েছেন।’ অন্যত্র বালু বিক্রির কথা অস্বীকার করেন তিনি।
এ ব্যাপারে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিপন দেবনাথ ইউপি চেয়ারম্যানকে তিনদিন আগে বালু ভরাটের দায়িত্ব দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘সরকারি বরাদ্দ আমরা এখনো পাইনি। নদী ভাঙনপ্রবণ এলাকার আশপাশ থেকে বালু উত্তোলন করতে নিষেধ করা হয়েছে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়