হাতিরঝিল লেক থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার

আগের সংবাদ

এলসি-এনডোর্সমেন্টে বিড়ম্বনা : ডলার সংকটে মূলধনি যন্ত্রপাতি-কাঁচামাল আমদানি ব্যাহত > বিদেশ যাত্রায় বিপাকে সাধারণ মানুষ

পরের সংবাদ

‘মেড ইন বাংলাদেশ সপ্তাহ’ উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী : সত্যি বদলে গেছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় বাংলাদেশ বদলে গেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৩ বছর পূর্ণ হয়ে আওয়ামী লীগের প্রায় ১৪ বছর চলছে। ২০০৮ সালে নির্বাচনী ইশতেহারে বলেছিলাম, বদলে যাবে বাংলাদেশ। সত্যিই বাংলাদেশ বদলে গেছে। ২০২১ সালের আগেই আমরা উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য অর্জন করেছি। ২০১০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত যে রূপকল্প ও প্রেক্ষিত পরিকল্পনা নিয়েছিলাম তা বাস্তবায়ন করেছি। এখন কাজ হলো ২০২১ থেকে ২০৪১ এর বাংলাদেশ। আমরা চাই, উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। জাতিসংঘ ঘোষিত এসজিডি বাস্তবায়ন করা, তার ভিত্তিতেই কাজ করছি।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে

গতকাল রবিবার বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) আয়োজিত ‘মেইড ইন বাংলাদেশ উইক’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ইন্টারন্যাশনাল এ্যাপারেল ফেডারেশনের (আইএএইফ) সভাপতি সেম অলটান, বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান, সিনিয়র সহসভাপতি এসএম মান্নান কচি। এ সময় দেশের পোশাক খাতের অগ্রগতি ও নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ক পৃথক দুটি ভিডিওচিত্র দেখানো হয়। ‘মেড ইন বাংলাদেশ সপ্তাহ ২০২২’ এর লক্ষ্য হচ্ছে দেশের পোশাক খাতের সক্ষমতা বিশ্বের সামনে তুলে ধরা।
‘মেড ইন বাংলাদেশ উইক’ এর উদ্বোধনের পর কার্নিভাল হলে ‘এক্সপেরিয়েন্স দ্য ট্রান্সফর্মেশন অব দ্য আরএমজি টুয়ার্ডস সাসটেইনেবিলিটি এন্ড ইনোভেশন’ শিরোনামের একটি ডিসপ্লে জোনও খোলা হয়েছে যা ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দুটি কফি টেবিল বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন, যার ওপর বিজিএমইএ চলতি বছরের শুরু থেকে কাজ করছে। পোশাক রপ্তানিতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ চার জন তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারককে বিশেষ সম্মাননাও দেন সরকারপ্রধান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ একটা বদ্বীপ, ঝড়ঝাঁপটা আসে। এটা মাথায় রেখে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যান করে দিয়েছি। বাস্তবায়নও শুরু করেছি। উন্নত জীবন ব্যবস্থাটা দিয়ে গেলাম। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করে এটা বাস্তবায়ন করলে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে।
সরকারপ্রধান বলেন, মাথা উঁচু করে যেন আমরা দাঁড়াতে পারি, সেটাই ছিল বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য। ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে সেই লক্ষ্যেই আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেই। বেসরকারি খাতসহ প্রতিটি খাতে যেন ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করতে পারে, সবকিছু উন্মুক্ত করে দেই। মোবাইল ফোনের প্রসার ঘটে, প্রযুক্তি শিক্ষার সুযোগ করে দেই। বিনিয়োগবান্ধর কর্মসূচি হাতে নেই।
তিনি বলেন, আমাদের জিডিপিতে সব থেকে বেশি অবদান রেখে যাচ্ছে গার্মেন্ট খাত। এটা স্বীকার করতে হবে। রপ্তানি খাত যেন আরো প্রসারিত হয় সেজন্য পণ্য ও সেবাকে দীর্ঘমেয়াদি প্রণোদনা দেই। নতুন বাজার তৈরির উদ্যোগকেও উৎসাহিত করছি। যারা গ্রিন কারখানা স্থাপন করেছেন তাদের কর কমিয়ে ১০ শতাংশে নিয়ে এসেছি। পরিবেশবান্ধব কারখানার জন্য সব সুযোগ করে দিয়েছি। সুযোগ ও প্রণোদনা সবাই কাজে লাগাতে পারে না। গার্মেন্ট শিল্প সেটা পেরেছে।
রপ্তানি বাজার বহুগুণে বিস্তৃতি লাভ করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, করোনার সময় ব্যবসায়ীরা উদ্বেগে ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার সেসময় উদ্যোগ নেয়। সুদের হার কমিয়ে ভর্তুকি দিয়েছি। রিজার্ভ থেকে বিশেষ ফান্ড করে দিয়েছি। ২৮টি প্যাকেজের আওতায় টাকা দিয়েছি। অল্প সুদে ২ দশমিক ৩৭ ট্রিলিয়ন টাকা ঋণ দিয়েছি। সব বাধা অতিক্রম করে ব্যবসাটা আপনারা চালাতে পারছেন।
ব্যবসায়ীদের জন্য সরকারের দেয়া বিভিন্ন সুযোগের বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ক্রমক্ষমতা বাড়ছে। নিজস্ব বাজার সৃষ্টি হচ্ছে। করোনাকালীন সময়ে গ্রাম পর্যায়ের যত বেশি সম্ভব অর্থ বরাদ্ধ করেছি। যারা শ্রম দেয় তারাও এই দেশের মানুষ। তাদের উন্নত ট্রেনিং দিতে চাই। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের পদধ্বনি শুনছি। এর উপযোগী মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন রোবটের পাশাপাশি আমাদের স্কিলড লেবারও দরকার। এ বিষয়ে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছি। কাপড়ের মান বাড়াতে হবে। এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। শ্রমিকদের দিকে দৃষ্টি দিচ্ছি। তাদের কল্যাণ নিশ্চিত করা, পরিবেশবান্ধব পণ্য উৎপাদন করার বিষয়ে ব্যবসায়ীদের নজর দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার রাজনীতি কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষের জন্য। তাদের দক্ষতা যোগ্যতা কাজে লাগাতে হবে। আমাদের দেশে সাড়ে ১৬ কোটির ওপরে মানুষ। তাদের খাদ্য নিরাপত্তা দিতে হবে। নিজেরা উৎপাদন করতে হবে। ভিক্ষা করে চলবো না। আমরা ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করছি। ১০০ সেতুর উদ্বোধন করেছি। যোগাযোগের বিরাট নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করেছি।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। মূল্যস্ফীতি, রাশিয়া-ইউক্রন যুদ্ধ, স্যাংকশন, পাল্টা স্যাংকশন আছে। উন্নত দেশগুলোও ভুক্তভোগী হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে যাচ্ছে। যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ নিয়ে ভাবতে হবে। উন্নত বাংলাদেশ গড়তে ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়