পাচার অর্থ ফেরাতে আট দেশের সঙ্গে চুক্তি চায় দুদক

আগের সংবাদ

টেকসই জ্বালানি নিরাপত্তায় নজর : দেশীয় গ্যাস-কয়লা উত্তোলন, তেলের মজুত ও পরিশোধন সক্ষমতা বাড়ানো, পাইপলাইনে ডিজেল আমদানি

পরের সংবাদ

শিবালয়ে অবৈধ ড্রেজার ব্যবসা : দিনে যমুনার বালু লুট রাতে চরের মাটি চুরি

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সুরেশ চন্দ্র রায়, শিবালয় (মানিকগঞ্জ) থেকে : শিবালয় উপজেলার আরুয়া ইউনিয়নের বড়রিয়া এলাকার সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের পাশে যমুনা নদীতে বলগেট থেকে বালু আনলোড বাণিজ্য চলছে। কিন্তু সন্ধ্যা হলেই পাল্টে যাচ্ছে তাদের কার্যক্রম। তখন মাটি ব্যবসায়ীরা আনলোড কার্যক্রম গুটিয়ে সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে রাতের আঁধারে ড্রেজারের সাহায্যে অনতি দূরের চর কেটে করে বালু বাণিজ্য।
জানা যায়, এ ড্রেজার বাণিজ্যের মূল দলপতি ঝড়িয়ারবাগ এলাকার মো. হাসান। তার ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে রয়েছেন রুহুল, আলমগীর, বিষ্ণু, আতিকুল, রশিদ প্রমুখ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ড্রেজার ব্যবসা করতে গিয়ে হাসান অনেকবার মোটা অঙ্কের জরিমানা দিয়েছেন এবং বেশ কয়েকবার তার ড্রেজারের পাইপ প্রশাসনের লোকজন ধ্বংস করে দিয়েছেন। এতে তিনি এখন যেন আরো দুর্দমনীয় ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এলাকার রাস্তাঘাট, বাড়িঘর ও পার্শ্ববর্তী ফসলি জমির ক্ষতি সাধন করে তারা দিনের পর দিন ড্রেজার ব্যবসা করে উপার্জন করছেন লাখ লাখ টাকা।
বড়রিয়া এলাকার জহিরুল ইসলাম জানান, মাটি ব্যবসায়ীদের ড্রেজারের পানিতে এখন পর্যন্ত তাদের প্রায় ৩ বিঘা জমি পানির নিচে ডুবে আছে। তিনি বলেন, আমরা যদি এখন জমি চাষ করতে না পারি সংসার চালাব কীভাবে? ড্রেজার ব্যবসায়ী হাসানকে শত অনুরোধ করেও ড্রেজার বাণিজ্য বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে কথা বললে ড্রেজার ব্যবসায়ীরা আমাদের সঙ্গে রাগারাগি করেন। এখন নীরবে সব অত্যাচার সহ্য করে যাচ্ছি।
এলাকার কয়েকজন সচেতন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ড্রেজার ব্যবসায়ী হাসান গংয়ের দাপটে সাধারণ মানুষ অসহায়। কোনো লোক ড্রেজার বন্ধের বিষয়ে তাদের অনুরোধ করলে তারা নানারকম ভয়ভীতি দেখান। তাদের চালচলন, আচার, ব্যবহার ও কথাবার্তায় মনে হয়, তারা যেন ড্রেজার ব্যবসার বৈধ লাইসেন্স পেয়েছেন।
গত মঙ্গলবার আরুয়া ইউনিয়নের সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের পাশে যমুনা নদীর তীর ঘুরে দেখা গেছে, হাসান গং ড্রেজার দিয়ে বলগেট থেকে বালু আনলোড করছেন। তখন স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দিনের বেলায় ড্রেজার দিয়ে যে বালু আনলোড করা হয় এটি হচ্ছে তাদের অবৈধ ড্রেজার ব্যবসার বৈধ সাইনবোর্ড। কিন্তু রাতের বেলা তারা তাদের মূল ব্যবসায় ফিরে যান। তখন আনলোড বন্ধ করে অনতি দূরের চর থেকে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বালু কেটে বিভিন্ন পয়েন্টে অবাধে বিক্রি করেন।
অভিযুক্ত আলমগীর হোসেন বলেন, আমি হাসানের সঙ্গে ড্রেজার ব্যবসায় যুক্ত নই। অনেকেই আমার সম্পর্কে অনেক কিছু বলতে পারেন। কিন্তু তার কোনো ভিত্তি নেই। কেউ যদি আমার নাম বলে থাকে সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
ড্রেজার ব্যবসায়ী মো. হাসান বলেন, আমার ব্যবসায়িক অংশীদার হিসেবে আছেন আলমগীর, রুহুল, আতিকুল, বিষ্ণু এবং ঘিওরের রশিদ। রাতের আঁধারে মাটি কাটার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমি রাতের আঁধারে কোনো চর কাটি না। আমি বৈধ ব্যবসা করি। প্রশাসন যদি অন্য দশটা লোড-আনলোড ব্যবসা চালাতে দেয় সে ক্ষেত্রে আমারটাও চালাতে দিতে হবে।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাহিদুর রহমান ভোরের কাগজকে বলেন, নদীতে ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই। রাতের বেলায় তারা যদি এহেন কাজ করে থাকেন তবে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়