সংসদে অনির্ধারিত আলোচনা : বাড়াবাড়ি করলে ছাড় দেয়া হবে না : কাদের

আগের সংবাদ

একগুচ্ছ শর্ত আইএমএফের : ভর্তুকি কমানোয় জোর, ব্যয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা, অর্থনৈতিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা

পরের সংবাদ

১০০টি সেতু উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী : বিশ্বের কোথাও সমস্যা দেখা দিলে সেই অভিঘাত বাংলাদেশেও আসে > প্রতিটি ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী হতে হবে

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সারাবিশ্বে যে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিচ্ছে তা মোকাবিলায় বেশি বেশি খাদ্য উৎপাদনের তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, এই আঘাতটা আসবেই। বিশ্ব এখন গেøাবাল ভিলেজ। কোনো জায়গায় একটা সমস্যা দেখা দিলে এর অভিঘাতটা বাংলাদেশেও এসে পড়ে। প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের বিদ্যুৎ ব্যবহারে খুবই সাশ্রয়ী হতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে গতকাল সোমবার সকালে ২৫টি জেলায় ১০০টি সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত ঘোষণাকালে তিনি এসব কথা বলেন। ১০০টি সেতু নির্মাণে ব্যয় হয় ৮৭৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। অনুষ্ঠানের অন্যপ্রান্ত সুনামগঞ্জ, বরিশাল, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামে সংশ্লিষ্ট সুবিধাভোগীরা যুক্ত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী সেতুগুলোর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন। অনুষ্ঠানে সেতুর ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
সুবিধাভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করার সময় প্রধানমন্ত্রী চলমান কোভিড-১৯ মহামারি থেকে উদ্ভূত বৈশ্বিক সংকট এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক মন্দা ও বিশ্বে খাদ্য সংকট সৃষ্টির আশঙ্কা থেকে মুক্তি পেতে সবাইকে সাশ্রয়ী ও বিদ্যুৎ-জ্বালানি ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শ দেন।
উৎপাদন বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক এলাকায় আপনারা যত পারবেন খাদ্য উৎপাদন করবেন। তরিতরকারি যেটা পারেন উৎপাদন করবেন, হাঁস মুরগি ছাগল, ভেড়া-যেটা পারেন সেটা পালন করতে হবে। অর্থাৎ নিজেদের খাদ্য সংস্থান নিজেদের করার চেষ্টা করতে হবে। কেননা, বিশ্বব্যাপী যে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিচ্ছে এর ধাক্কা যেন বাংলাদেশকে খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করতে না পারে।
দেশের যোগাযোগ খাতের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নের সুফল পাচ্ছে দেশের তৃণমূলের মানুষ। আওয়ামী লীগ কাজ করছে বলেই মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। আমরা ক্ষমতায় আসার পর দেশে আর কোনো অভাব হয়নি। শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের ফলে পার্বত্য অঞ্চলেও উন্নয়ন হচ্ছে। সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নয়ন হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়, আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। সরকার এমনভাবে সেতু সড়ক ও মহাসড়কগুলো নির্মাণ করছে, যেন শুধু দেশের অভ্যন্তরেই নয়, আমরা এশিয়ান হাইওয়ে এবং

এশিয়ান রেলের সঙ্গে যুক্ত হতে পারি। ট্রান্স এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আমাদের যোগাযোগ যাতে আরো এগিয়ে যেতে পারে সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিয়েছি। আমরা বাংলাদেশকে উন্নয়নের জন্য রূপকল্প ২০২১ ঘোষণা দিয়েছিলাম। সেভাবেই কাজ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। পার্বত্য চট্টগ্রামে যেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক ছিল না, সেখানে সেটা করেছি। কেননা, দুর্গম এলাকা পর্যন্ত আমরা ব্রডব্যান্ড এবং বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১-এর মাধ্যমে সংযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি। এ কারণেই আজ বিভিন্ন জেলা যুক্ত করে একযোগে ১০০টি সেতুর উদ্বোধন করতে পারছি। সারাদেশে কানেক্টিভিটি বাড়াতে আমরা কাজ করছি। সারাদেশে, সড়ক, নৌ এবং আকাশপথে যোগাযোগ বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছি। সারাদেশে একযোগে ১০০টি সেতু উদ্বোধন একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এটি দেশের সার্বিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করবে। সবচেয়ে বড় কথা হলো আমরা ১০০টি সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নকে দ্রুততর করতে পারব। সেতুগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সহায়তা করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে যে কোনো দুর্যোগে মানুষকে সাহায্য করা সহজ হবে, পণ্য পরিবহন এবং বিপণনও দ্রুত এবং সহজ হবে। সেতুগুলো রাজধানীর সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করেছে। ৩৩টি রুট ফেরি পরিষেবা থেকে মুক্ত করেছে, যা সড়ক যোগাযোগকে অবাধ, দ্রুত, সহজ ও নিরাপদ করবে।
তিনি বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের অংশ হিসেবে ১৪ বছরে আমরা বিভিন্ন মহাসড়কে ১ লাখ ১৩ হাজার ৩০৩ মিটার সেতু নির্মাণ বা পুনর্নির্মাণ এবং ২১ হাজার ২৬৭ মিটার কালভার্ট নির্মাণ বা পুনর্নির্মাণ করেছি। তাছাড়া বহু সড়ককে মহাসড়কে উন্নীত করেছি।
প্রধানমন্ত্রী জানান, সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নে জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতু নির্মাণকাজ সমাপ্তকরণসহ খুলনা, পাকশী ও আশুগঞ্জে তিনটি বৃহৎ সেতু নির্মাণ করা হয়, যা মহাসড়ক নেটওয়ার্ককে নিরবচ্ছিন্ন করে তুলেছে। একুশ বছর পর ক্ষমতায় এসে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ মেয়াদে ১৯ হাজার বৃহৎ, মাঝারি, ছোট সেতু ও কালভার্ট নির্মাণের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়