সংসদে অনির্ধারিত আলোচনা : বাড়াবাড়ি করলে ছাড় দেয়া হবে না : কাদের

আগের সংবাদ

একগুচ্ছ শর্ত আইএমএফের : ভর্তুকি কমানোয় জোর, ব্যয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা, অর্থনৈতিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা

পরের সংবাদ

কুষ্টিয়া শহরে নিজ বাসায় খুন স্কুল শিক্ষিকা

প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এলাকায় নিজের বাসা থেকে জিলা স্কুলের এক জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া হাউজিং ডি-ব্লকের ২৮৫ নম্বর ছয়তলা ভবনের দ্বিতীয়তলায় নিজের কক্ষ থেকে শিক্ষিকার লাশ উদ্ধার করা হয় বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবু রাসেল জানান।
নিহত মোছা. রোকশানা খানম (৫২) কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের ইংরেজি বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকা ছিলেন। তিনি কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার মধ্যবাজার এলাকার বাসিন্দা মৃত রওশন আলীর মেয়ে এবং একই উপজেলার সাতবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মানিক খুনকারের ছেলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ যশোরের হিসাবরক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান শিশিরের স্ত্রী।
এই দম্পতি নিঃসন্তান ছিলেন। রোকশানার স্বামী শিশির চাকরির কারণে যশোরেই থাকেন। সপ্তাহান্তে তিনি বাসায় আসেন। হাউজিংয়ের ছয়তলা ভবনটি রোকশানা খানম ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে করেছিলেন; সেই ঋণের কিস্তি তিনিই প্রতি মাসে পরিশোধ করতেন বলে পরিবার জানিয়েছে। ভবনের ছয়তলায় রোকশানার ভাইয়ের পরিবার ভাড়া থাকেন।
রোকশানার ভাইয়ের ছেলে নিশাদ (২২) সাংবাদিকদের বলেন, সকাল ১০টার দিকে ফুফুর বাসায় দরজা ভেতর থেকে আটকানো দেখে ডাকাডাকি করি। কোনো সাড়া না পেয়ে পরে আশপাশের প্রতিবেশীদের সাহায্যে ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ফুফুকে শয়নকক্ষে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। পরে পুলিশে সংবাদ দিলে তারা এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
রোকশানার স্বামী মোস্তাফিজুর রহমান শিশির জানান, হত্যাকাণ্ডের কথা জেনেই তিনি যশোর থেকে ছুটে এসেছেন। স্কুলের কাজে সোমবার সকালে রোকশানার যশোর শিক্ষা বোর্ডে যাওয়ার কথা ছিল।
পূর্বপরিকল্পিতভাবে রোকশানাকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে শিশির বলেন, খুনিরা বাসায় ঢুকে কেবল একটা পিসি ভাঙচুর করেছে। আর কোনো কিছুই নিতে পারেনি। কোনো টাকা-পয়সা বা মূল্যবান গয়না খোয়া যায়নি। আমি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
রোকশানা কর্মপাগল মানুষ ছিলেন এবং নিজেকে কাজের মধ্যে ব্যস্ত রাখতে পছন্দ করতেন বলে জানান কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. এফতে খায়রুল ইসলাম।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবু রাসেল বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। কারা কী কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে সে বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
বাসা থেকে মূল্যবান কিছু খোয়া যায়নি; এ ছাড়া সম্ভাব্য একাধিক বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত শুরু হয়েছে জানিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
স্বজনরা জানান, রোকশানা ভেড়ামারা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৫ সালে এসএসসি পাস করেন। পরে তিনি ভেড়ামারা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি এবং কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে ¯œাতক ডিগ্রি লাভ করেন। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।
শিক্ষাজীবন শেষে রোকশানা প্রথমে সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। পরে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে যোগ দেন। ১৯৯৭ সালে মোস্তাফিজুর রহমান শিশিরের সঙ্গে পারিবারিকভাবেই তার বিয়ে হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়