সাগর-রুনি হত্যা মামলা : তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পেছাল ৯৩ বার

আগের সংবাদ

গ্যাস সংকট তীব্র হওয়ায় শঙ্কা : ৩৮০ কোটি ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে বিতরণ ২৬০ কোটি ঘনফুট

পরের সংবাদ

সংসদে প্রতিমন্ত্রী : গ্যাসের মজুতে সাড়ে ১০ বছর চলবে

প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, সর্বশেষ চলতি বছরের ১ জুলাই প্রাক্কলন অনুযায়ী দেশে মোট উত্তোলনযোগ্য প্রমাণিত ও সম্ভাব্য মজুত গ্যাসের পরিমাণ ২৮ দশমিক ৫৯ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। তবে শুরু হতে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে ক্রমপুঞ্জিভূত গ্যাস উৎপাদনের পরিমাণ ১৯ দশমিক ৫৩ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। সে হিসেবে বর্তমানে উত্তোলনযোগ্য অবশিষ্ট মজুতের পরিমাণ ৯ দশমিক শূন্য ৩ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে বর্তমানে দৈনিক গড়ে প্রায় ২ হাজার ৩ শত মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বিবেচনায় অবশিষ্ট মজুত গ্যাস প্রায় ১০ দশমিক ৮ বছর ব্যবহার করা সম্ভব হবে। গতকাল মঙ্গলবার শহীদুজ্জামান সরকারের লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি সংসদকে এসব তথ্য জানান।
বিএনপি জামায়াত সরকার ও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গ্যাস ফিল্ড ও গ্যাস উৎপাদনের তুলনা করে বলেন তিনি, বিএনপি সরকারের সময় যেখানে দৈনিক ১৪ এমএনসিএফ গ্যাস উদপাদন করা হতো সেখানে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ৩৯ দশমিক ৮৯ থেকে ১৪৫ এমএনসিএফ গ্যাস উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে। ২০০৯-১২ সালের মধ্যে আমরা ১০০০ এমএনসিএফ গ্যাস বাড়াতে পেরেছি। আমরা মোট ২৭০০ এমএনসিএফ থেকে পর্যায়ক্রমে ২৩০০ এমএনসিএফ গ্যাস উৎপাদনে সক্ষম হয়েছি। যেখানে বিএনপি আমলে তারা উৎপাদন করত মাত্র ১৩০০ এমএনসিএফ। ২০০৯-২২ সালের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার মেগাওয়াট পাওয়ার গ্যাস সেক্টরে যোগ হয়েছে। ইণ্ডাস্ট্রি কানেকটিভিটি হয়েছে প্রায় আড়াই হাজারের ওপর।
নসরুল হামিদ বলেন, বিএনপি জামায়াত জোট সরকার মনে করতো, বাংলাদেশ নাকি গ্যাসের ওপরে ভাসছে। তাই তারা বিদেশে গ্যাস রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার বিশেষ করে শেখ হাসিনা যদি প্রবল বাধা না দিতেন তাহলে আমরা আরো ১০ বছর আগেই দেউলিয়া হতাম।
তিনি বলেন, ১টি চুলার দুটি বার্নারে যে গ্যাস ১ মাস ধরে ব্যবহৃত হয় তা যদি আমরা গার্মেন্টসকে দেই তাহলে ১৫০ লোকের কর্মসংস্থান হয়। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার সরকার আসার পরে বিদ্যুতের ক্ষেত্রে ৩ হাজার মেগাওয়ার্ট থেকে ২৫ হাজার মেগাওয়ার্টে আনতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের ইন্ডাস্ট্রি বেড়েছে। আমাদের সাপ্লাইয়ের চেয়ে ডিমান্ড বেড়েছে। বাকি যে গ্যাপটা আছে ৭০০-৮০০ এমএনসিএফ, এটা আমাদের ঘাটতি, আমরা কাতার ও ওমান থেকে ইমপোর্ট করছি ৫০০-৬০০ এমএনসিএফ। বাকি ৩০০-৪০০ আমরা ওমান থেকে ৩৫ ডলারে কিনতাম। এখন ৬২ ডলারে উঠে গেছে। আমরা অপেক্ষা করছি, কত দ্রুত এটার সমাধান করা যায়।
বিএনপি দলীয় এমপি রুমিন ফারহানার প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, কেউ জানতে পারেনি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এলপিজি ও তেলের দাম এতটা বেড়ে যাবে। যার ফলে আমাদের অনেক বেশি দামে এসব কিনতে হচ্ছে। বিশ্ববাজারে সব কিছুর মূল্য বেড়ে গেছে। তবে আমরা তা সামলে নিয়েছি। আপনারা এসব বিষয়ে দয়া করে অপপ্রচার করবেন না।
মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের কাছে বিদ্যুৎ বিভাগের পাওনা ১৮৯৩ কোটি টাকা : সরকারদলীয় সংসদ মোজাফফর হোসেনের এক প্রশ্নের জবাবে গতকাল বিদ্যুৎ জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী সংসদকে জানান, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের কাছে বিদ্যুৎ বিভাগের পাওনা ১ হাজার ৮৯৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এর মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের কাছে পাওনা ৯০৫ কোটি ২১ লাখ টাকা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে ৩৯৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
নসরুল হামিদ বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন সরকারি বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থা নিয়মিতভাবে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করায় বিপুল অঙ্কের বিল বকেয়া আছে। তবে তদারকি জোরদার করে মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করায় গত কয়েক বছরে বিদ্যুৎ বিলের বকেয়ার পরিমাণ কমানো সম্ভব হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে ৮৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, জননিরাপত্তা বিভাগের কাছে ৬৪ কোটি ২২ লাখ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের কাছে ৬৩ কোটি ৬১ লাখ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের কাছে ৪৩ কোটি ৫৬ লাখ এবং স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে ৩৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের।
বিদ্যুৎ বিলের বকেয়া আদায়ে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ বিলের বকেয়া কমানোর জন্য পর্যায়ক্রমে সব গ্রাহককে প্রিপেইড/স্মার্ট মিটারের আওতায় আনা হচ্ছে। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৫১ লাখ ৭ হাজার ৪৫২টি প্রি-পেইড/স্মার্ট মিটার স্থাপন করা হয়েছে। আগামী এক বছরের মধ্যে আরো ২০ লাখ প্রি-পেইড/স্মার্ট মিটার স্থাপন করা হবে।
নিজাম উদ্দিন হাজারীর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সংসদকে জানান, বর্তমান সরকারের তিন মেয়াদে বিদ্যুৎ খাতে ২৮ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগ হয়েছে ৯ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়