হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি : হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর জয়নুল উলুম আলিম মাদ্রাসায় অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী নিয়োগে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. কামরুল আহসান দুলাল ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ২৪ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরে ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তার ইচ্ছেমতো মনগড়া নিয়োগ কমিটি গঠন করে ওই পদে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগকারী ভুক্তভোগীরা হলেন- মো. তারিকুল ইসলাম, রবিউল হোসেন, রাশেদুল ইসলাম, মোহাম্মদ আজিজুর রহিম ও মোহাম্মদ আবদুল মোতালেব।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, অফিস সহকারী পদে ৩৯টি আবেদনের মধ্যে ২৭ জনকে ইন্টারভিউ কার্ড পাঠায়নি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। যদিও এমন অভিযোগের বিষয়টি মানতে নারাজ অভিযুক্ত মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। অন্যদিকে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
সূত্র জানায়, উপজেলার মির্জাপুর জয়নুল উলুম আলিম মাদ্রাসা পাঁচটি শূন্য পদে (অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী, নৈশপহরী ও আয়া) জনবল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গত ১৮ অক্টোবর প্রকাশ করে।
এতে অফিস সহকারী পদে ৩৯টি আবেদন জমা পড়ে। তবে এর মধ্যে মাত্র ১২টি আবেদনপত্র নিয়োগ কমিটির সামনে উপস্থাপন করা হয়। বাকি আবেদনগুলো গায়েব করে গত ২২ অক্টোবর মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মনগড়া নিয়োগ কমিটি দিয়ে পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। এক্ষেত্রে বাকি ২৭ জনের কাউকে পরীক্ষার জন্য কোনো ধরনের মেসেজ কিংবা ফোন কল করা হয়নি।
ভুক্তভোগীরা জানান, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের যোগসাজশে তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে নিয়োগ দিতে গঠিত মনগড়া কমিটি তাদের খেয়াল-খুশিমতো ব্যক্তিকে নিয়োগ দিয়েছে। এমতাবস্থায় আমরা সুষ্ঠু তদন্ত করে পুনরায় স্বচ্ছ নিয়োগ পরীক্ষা দিতে উপজেলা প্রশাসনের শরণাপন্ন হয়েছি।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির এক সদস্য জানান, কমিটির দুয়েকজন তাদের কাছের লোকজনকে নিয়ে মনগড়া কমিটি গঠনের মাধ্যমে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজনপ্রীতি করে অফিস সহকারী নিয়োগ দিয়েছে।
অথচ নিয়োগ কমিটিতে মাদ্রাসার শিক্ষক প্রতিনিধি ও অভিভাবক প্রতিনিধি কাউকে রাখা হয়নি। তাছাড়া অফিস সহকারী পদে ৩৯টি আবেদনের মধ্যে ২৭ জনকে ইন্টারভিউ কার্ড পাঠানো হয়নি। ম
াদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা রফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি। বরং তিনি মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতির সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. কামরুল আহসান দুলাল জানান, নিয়োগ পরীক্ষায় কোনো অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি হয়নি। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহিদুল আলম জানান, এ বিষয়ে তদন্তের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি সত্যতা যাচাইয়ের জন্য কাজ করছেন। অনিয়মের সত্যতা পাওয়া গেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।