জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির সর্বশেষ রিলিজ স্লিপের মেধা তালিকা ২ অক্টোবর

আগের সংবাদ

ইউক্রেনের ৪ অঞ্চল রাশিয়ায় যুক্ত : প্রেসিডেন্ট পুতিনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা, অবৈধ বলছেন ন্যাটো নেতারা

পরের সংবাদ

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস : র‌্যাবের আচরণ বদলাতেই নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। তিনি বলেন, র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়াটা শাস্তির উদ্দেশে নয়, তাদের আচরণ বদলানো ও তাদের জবাবদিহি করতে এটা দেয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘মিট দ্য অ্যাম্বাসেডর’ অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন পিটার হাস। বাংলাদেশি বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) ও জার্মান গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফ্রেডরিখ এবার্ট স্টিফটুং যৌথভাবে এর আয়োজন করে। সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে রাজনৈতিক দলের নেতা, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও সাবেক কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ডিসেম্বরে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং বাহিনীর সাবেক ও বর্তমান সাতজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। র‌্যাবের সাবেক ডিজি হিসেবে পুলিশের বিদায়ী আইজিপি বেনজীর আহমেদও ওই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েন। আবার র‌্যাবের বিদায়ী ডিজি হিসেবে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের ওপরও একই নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আবদুল্লাহ আল-মামুন নতুন আইজিপির দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন। তবে ওই নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই স¤প্রতি জাতিসংঘে পুলিশ প্রধানদের সম্মেলনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে যান বেনজীর আহমেদ। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে ৩১ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর ওই সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের নেতৃত্বে বিদায়ী আইজিপি বেনজীর আহমেদসহ ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেয়।
নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গ টেনে পিটার হাস বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এটা খুব ভালো সংকেত। আমরা আশা করছি, র‌্যাবের আচরণের পরিবর্তন হবে। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সহযোগিতার লক্ষ্যে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। কাজ করছে। ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল (আইপিএস) নিয়ে পিটার হাস বলেন, এটি এমন একটি কৌশল, এখানে যোগ দেয়া না দেয়াটা কোনো বিষয় নয়। এটি কোনো ক্লাব নয়। এটি কতগুলো ভিত্তির ওপর গড়ে উঠেছে, যেমন-মুক্ত, নিরপেক্ষ, প্রাণবন্ত এবং সমৃদ্ধ নীতির ওপর। প্রত্যেক দেশেরই তার নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতা রয়েছে। বাংলাদেশ এটিকে সমর্থন করছে না, আমি বিষয়টাকে এমনভাবে দেখছি না। তবে এতে বাংলাদেশের যোগ দেয়া না দেয়াটা কোনো বিষয় নয়। এটি বাংলাদেশ কীভাবে নেয়, সেটাই দেখার বিষয়। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে পিটার হাস বলেন, চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে (বিআরআই) যোগ দেয়াটা বাংলাদেশের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশ কোন জোটে যোগ দেবে, সেটা তাদের বিষয়।
‘মিট দ্য অ্যাম্বাসেডর’ অনুষ্ঠানে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচন নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠে। এক প্রশ্নের জবাবে পিটার হাস বলেন, নির্বাচন শুধু একটি দিনের ঘটনা নয়। বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচন স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছভাবে হবে কিনা, তা নির্ভর করছে বেশ কয়েকটি বিষয়ের ওপর। কারণ, রাজনৈতিক দলগুলো স্বাধীনভাবে তাদের কর্মসূচি পালন করতে পারছে কিনা, গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজ তাদের মতপ্রকাশের সুযোগ পাচ্ছে কিনা, তার ওপর নির্ভর করছে এটি। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে যে রাজনৈতিক সহিংসতা চলছে, তা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহায়ক নয়। নির্বাচনের আগে ও পরের ঘটনা একটি অবাধ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অংশ, তাই বাংলাদেশের বর্তমান সহিংসতার ঘটনা যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও বিশ্ব স¤প্রদায় নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দলকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে না বলে জানালেন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। শ্রম অধিকারের বিষয়ে হাস বলেন, রপ্তানিমুখী শিল্পের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এখনে উদ্বেগ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র চায়, বাংলাদেশে শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার সুযোগ থাকুক। এতে করে তারা নিজেদের অধিকার আদায়সহ বিভিন্ন ইস্যুতে দর কষাকষি করতে পারবে।
গুমের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত জানান, গুমের অভিযোগ তদন্তের জন্য যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীন প্রক্রিয়া দেখতে চায়। যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ না জানানোর বিষয়ে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, গণতন্ত্র একটি সংগ্রাম। প্রতিনিয়ত এটি নিয়ে কাজ করতে হয়। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছি। আমরা গণতন্ত্র নিয়ে কাজ করছি। বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ নিয়ে তিনি বলেন, বিনিয়োগ নিয়ে বাংলাদেশে একটি প্রতিযোগিতা রয়েছে। বিনিয়োগকারীরা উপযুক্ত বাজার খুঁজবেন। সেক্ষেত্রে যেখানে নিরাপত্তা থাকবে, নিরাপদ পরিবেশ থাকবে; সেটাই তারা বেছে নেবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়