হাজারীবাগের বিস্ফোরণ : পা হারানো দিলীপসহ শঙ্কাজনক অবস্থায় ২

আগের সংবাদ

পাঁচ কারণে বাড়ছে ডেঙ্গু!

পরের সংবাদ

সমাবেশে হুঁশিয়ারি : সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা করা হলে কোনো ছাড় নয়

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামে সামাজিক স¤প্রীতি সমাবেশে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ অন্যরা বলেছেন, সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি বিনষ্ট করতে যারা চেষ্টা করবে তাদের বিন্দুমাত্র ছাড় নেই। দুর্গোৎসব বা পূজামণ্ডপ ঘিরে কেউ নাশকতার পরিকল্পনা করলে কিংবা উসকানি দিলে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। দেশ বিরোধী কর্মকাণ্ড কঠোর হাতে দমন করা হবে। এ দেশে কোনো অপশক্তি যাতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
অসা¤প্রদায়িক চেতনায় ধর্মীয় এবং সামাজিক বন্ধনকে এগিয়ে নিতে এবং ধর্মীয় উগ্রবাদ-জঙ্গিবাদ, সহিংসতা ও সন্ত্রাসবাদকে প্রতিহত করার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এই সামাজিক স¤প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গতকাল মঙ্গলবার সকালে নগরীর ষোলশহরে এলজিইডি মিলনায়তনে সমাবেশের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর অসা¤প্রদায়িক সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে শপথবাক্য পাঠ করান জেলা প্রশাসক। সমাবেশ শেষে সামাজিক স¤প্রীতি র‌্যালি বের করা হয়। সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আর কয়েকদিন পরই হিন্দুদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ উৎসবকে ঘিরে উন্নয়ন বিরোধী একটি মহল দেশের সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি নষ্ট করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। যে কোনো মূল্যে চট্টগ্রামে সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি রক্ষা করা হবে। এলাকায় কারা সন্ত্রাসী, জঙ্গি, উগ্রবাদী কিংবা অপকর্মের হোতা তাদের নজরে রাখতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে এমন তথ্য পেলে তাৎক্ষণিক জানাতে হবে।
সমাবেশে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এস.এম শফিউল্লাহ বলেন, দেশে সাপ্রদায়িক স¤প্রীতি বিনষ্ট ও দৃশ্যমান উন্নয়নের ধারা বাধাগ্রস্ত করতে একটি গোষ্ঠী উঠেপড়ে লেগেছে। শুধু দুর্গাপূজা নয়, কোনো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়া যাবে না। সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি বজায় রাখতে হবে। দুর্গোৎসব বা পূজামণ্ডপ ঘিরে কেউ নাশকতার পরিকল্পনা করলে কিংবা উসকানি দিলে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. বদিউল আলমের সঞ্চালনায় সামাজিক স¤প্রীতি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ, জেলার ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরোয়ার কামাল দুলু, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সার্ধারণ সম্পাদক মো. মফিজুর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম এহেছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুর রহমানসহ বিভিন্ন উপজেলার চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, সরকারি কর্মকর্তা, ধর্মীয় নেতারা, বীর মুক্তিযোদ্ধা, পৌর মেয়র, রাজনৈতিক নেতরা, ইউপি চেয়ারম্যান, গণমাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের নেতারা।
এদিকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে গঠিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কমিটির সমাবেশ গতকাল মঙ্গলবার বিকালে নগরীর নন্দনকাননস্থ থিয়েটার ইনস্টিটিউট হলে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চসিক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আফরোজা কালাম। চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে আবৃত্তি শিল্পী কঙ্কন দাশের সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন-শিক্ষাবিদ অধ্যাপক হাসিনা জাকারিয়া, নারী নেত্রী জেমিন সুলতানা পারু, চট্টগ্রাম জেলা রেড ক্রিসেন্টের সাধারণ সম্পাদক আবদুল জাব্বার, মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমদ, আন্দরকিল্লা জামে মসজিদের খতিব মাওলানা গোলাম মোস্তফা নুর নবী, মন্দিরের পুরোহিত অরুন চক্রবর্তী, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের হিল্লোল সেন, চসিক প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার প্রমুখ। ভারপ্রাপ্ত মেয়র আফরোজা কালাম বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের পরাজিত শত্রæরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে এখনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এসব ষড়যন্ত্রকারী যাতে গুজব ছড়িয়ে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ ও সতর্ক দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি মণ্ডপে পূজা চলাকালে ভক্ত, পুজারি ও দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কমিটি ও পূজা কমিটির নেতারা, স্বেচ্ছাসেবকসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেন। সমাবেশে দুর্গোৎসব চলাকালে পূজামণ্ডপে জেনারেটর, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা, পর্যাপ্ত আলোকসজ্জা, পানীয় জলের সুব্যবস্থা এবং পূজার্থী ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তাসহ বিজয়া দশমীর দিন পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিমা বিসর্জনের সব প্রস্ততি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানানো হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়