সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী : সাম্প্রদায়িক সম্প্রীরীতি রক্ষায় সজাগ থাকতে হবে সবাইকে

আগের সংবাদ

পঞ্চগড়ে নৌকাডুবিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫০, এখনো নিখোঁজ অন্তত ২৭ : মরদেহের অপেক্ষায় স্বজনরা

পরের সংবাদ

সেতু নির্মাণের দাবি : দুই উপজেলাকে বিচ্ছিন্ন করেছে কান্তার খাল

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ওপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার সর্ববৃহৎ প্রাচীন বাজার চাতলপাড়, এপারে একই জেলার সরাইল উপজেলার সর্ববৃহৎ বাজার অরুয়াইল। মাঝখানে কান্তার খাল এই দুই উপজেলাকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। প্রতিদিন অন্তত দুই থেকে আড়াই হাজার মানুষকে এই খাল পাড়ি দিয়ে চলাচল করতে হয়। খালটিতে একটি সেতু নির্মাণের জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে এলেও সুফল পায়নি। তাই যুগের পর যুগ ধরে বাধ্য হয়েই খেয়া নৌকায় করে মানুষদের খালটি পারাপার হতে হচ্ছে।
এমনকি রাতের বেলা কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নেয়ার পথে এই খালের কাছে এসে আটকে যায়। কারণ তখন খেয়া ঘাটে নৌকা থাকে না। খেয়া ভাড়া দেয়ার অভাবে অনেক বাচ্চাও নিয়মিত স্কুলে যায় না।
জানা যায়, নাসিনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের ২০ গ্রামের মানুষ খালটি পাড় হয়ে সরাইল উপজেলার অরুয়াইল বাজারে যাচ্ছে। আবার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল, পাকশিমুল ও চুন্টা ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের মানুষ খালটি পাড় হয়ে চাতলপাড় বাজারে যাচ্ছে। এর মধ্যে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীও রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, চাতলপাড় বাজারের আশপাশের অর্ধশতাধিক গ্রাম নাসিনগর উপজেলায় অন্তর্ভুক্ত হলেও এসব গ্রাম তাদের উপজেলা সদর থেকে অন্তত ২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। তাই এসব গ্রামের মানুষ খালের ঠিক ওপারে অবস্থিত সরাইল উপজেলার অরুয়াইল থেকে বাজার, শিক্ষা-চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকে। এসব মানুষের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে অরুয়াইল বাজারে। এ দুই উপজেলার মানুষকে প্রতিদিনই ব্যবসা-চিকিৎসা-শিক্ষাসহ নানা কাজে ও আত্মীয়তার সূত্রে অরুয়াইল বাজারে আসতে হয়। একটি সেতুর অভাবে তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
নাসিনগর উপজেলার চাতলপাড় গ্রামের কামাল হোসেন বলেন, ‘এই জীবনে এখানে সেতু দেখতাম পারমু কিনা সন্দেহ আছে। ভাটি এলাকার দুই উপজেলাবাসী চরম দুর্ভোগে আছি। দুপাশে রাস্তা আছে, সেতু নাই। কান্তার খালে এসে আটকে যাই। নৌকা দিয়ে পাড় হতে হয়।’
সরাইল উপজেলার ধামাউড়া গ্রামের গৃহিণী খোদেজা বেগম (৫০) জানান, আবহাওয়া খারাপ হলে কান্তার খালে নৌকা থাকে না। খাল দিয়ে অন্য নৌকা গেলে তখন ডেকে এনে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে পার হতে হয়। সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া জানান, একটি সেতুর জন্য দুটি উপজেলার মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। কয়েক বছর আগে এই খালে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। সেতুর দুই পাড়ে সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি কোনো কাজে আসেনি। আস্তে আস্তে সেতুটি ভেঙে বিলীন হয়ে গেছে।
নাসিনগর উপজেলার চাতলপাড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, সরাইল ও নাসিনগর উপজেলা পাশাপাশি হওয়ায় সরাইল উপজেলার মানুষ নাসিনগরে ও নাসিরনগর উপজেলার মানুষ সরাইল উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে। এছাড়া এই দুই উপজেলা পাশাপাশি হওয়ায় আত্মীয়-স্বজনও বেশি। কিন্ত খালটিতে সেতু না থাকায় দুই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
সরাইল উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম মিয়া বলেন, ‘আমি সরাইলে যোগদান করেছি মাত্র কয়েকদিন হলো। দেশ যখন উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে, তখন কান্তার খালেও সেতু হবে ইনশাআল্লাহ। কয়েকদিনের মধ্যেই কান্তার খাল পরিদর্শন করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়