মর্টার শেল নিক্ষেপ,: রোহিঙ্গা নিহত, আহত ছয়জন

আগের সংবাদ

মাঠে মারমুখী আওয়ামী লীগ

পরের সংবাদ

যেভাবে পরীক্ষা দিলেন ঘুমধুমের ৪১৬ শিক্ষার্থী

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

উখিয়া (কক্সবাজার) ও নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) প্রতিনিধি : আতঙ্ক ও উদ্বেগ নিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিলেন বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪১৬ জন শিক্ষার্থী। গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয়ে এসব শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেন। শেষ হয় দুপুর ১টায়। তবে পরীক্ষা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪১৯ জন পরীক্ষার্থী থাকলেও অংশ নেন ৪১৬ জন শিক্ষার্থী। দুজন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত রয়েছেন।
উখিয়ার কুতুপালং ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. হেলাল উদ্দিন জানান, মিয়ানমারের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাতে খবর আসে ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এসএসসি পরীক্ষা দেবে উখিয়ার কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে। এ কারণে রাতভর পরীক্ষা কেন্দ্রের সিট থেকে শুরু করে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। ফলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।
কক্সবাজার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন জানান, স্বাভাবিকভাবে একস্থান থেকে অন্যস্থানে পরীক্ষা দিতে আসলে মাথায় অনেকটা টেনশন কাজ করে। তাই পরীক্ষা শেষে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে এসব শিক্ষার্থীর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দূর করার চেষ্টা করা হয়েছে। আশা করি আগামী সব পরীক্ষা নিয়মানুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক শফিউল আলম জানান, সীমান্ত পরিস্থিতি এখনো থমথমে। আমরা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছি। অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের সন্তানদের অন্য জায়গায় পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত।
ঘুমধুম সীমান্তে উত্তেজনা : ঘুমধুম সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রটি সরিয়ে নেয়া হয়েছে। শনিবার সকালে ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের বাসে করে ১৭ কিলোমিটার দূরে পার্শ্ববর্তী জেলা কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা ফেরদৌস জানান, বর্তমানে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমা?ন্তের পরিস্থিতি ভালো না। আমি সীমান্তে ঘটে যাওয়া ঘটনার পরিস্থিতি এবং সরিয়ে নেয়া এসএসসি পরীক্ষর্থীদের নতুন কেন্দ্রে সুবিধা-অসুবিধার খবরাখবর নেয়ার জন্য পরির্দশনে এসেছি। যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ঘুমধুমের এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রটি সরিয়ে নিকটবর্তী উখিয়ার কুতুপালং কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ঘুমধুম কেন্দ্রের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের উখিয়ার কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে উখিয়া থানার পুলিশ দুটি বাসের ব্যবস্থা করেছে। সকালে তাদের ওই বাসে করে কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। এছাড়া কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে অন্য যানবাহনে করে শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাসগুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিয়ে কেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে উখিয়া থানার পুলিশ। ঘুমধুম থেকে কুতুপালং কেন্দ্রে পৌঁছতে বাসের সময় লাগে ৩৫ থেকে ৪৫ মিনিট।
উখিয়ার কুতুপালং কেন্দ্রে সহজে আসা-যাওয়ার জন্য কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের মরিচ্যা থেকে কুতুপালং পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার সড়ক যানজটমুক্ত রাখা

হয়। গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় শুরু হয় বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা। পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থীদের আবারো বাসে করে ঘুমধুমে পৌঁছে দেয় পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, যতদিন দরকার ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীদের জন্য ততদিন বাসের এই সুবিধা দেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেল এসে পড়ে সীমান্তের নো-ম্যান্স ল্যান্ডে। নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড কোনারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সেটি বিস্ফোরণে সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত মো. ইকবাল (১৭) নামে এক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হন আরো পাঁচ জন।
এর আগে শুক্রবার বিকালে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে আহত হন উইনু থোয়াইং তঞ্চঙ্গ্যা (২২) নামে এক তরুণ। এই পরিস্থিতির কারণে ঘুমধুমের এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালংয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়