খন্দকার মোশাররফ : বিএনপিকে নির্যাতন করে দমিয়ে রাখা যাবে না

আগের সংবাদ

দুই সংকটে তৈরি পোশাক খাত : সংকট কাটলে ৮ বছরে পোশাক খাতে রপ্তানি আয় ১০০ বিলিয়ন ডলারের আশা

পরের সংবাদ

পীরগাছা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নানা অনিয়ম : ‘টিও-এটিওকে টাকা দিই, তারা সব জানে’

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি : নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও শিক্ষকদের অদক্ষতার কারণে শিক্ষার্থী শূন্য হয়ে পড়েছে পীরগাছা উপজেলার বামন সরদার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রধান শিক্ষক আনোয়ারা বেগমের অনিয়ম-দুর্নীতি ও আত্মীয়করণের কারণে ভেঙে পড়েছে শিক্ষাব্যবস্থা। প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ জন শিক্ষার্থীকে পড়িয়ে প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা বেতন তুলছেন ৪ জন শিক্ষক। দীর্ঘদিন থেকে এমন অব্যবস্থাপনার মধ্যে চললেও বিষয়টি জানার পরও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি উপজেলা শিক্ষা অফিস। উল্টো শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাসিক চুক্তিতে টাকা দেন বলে প্রকাশ্যে বলেন ওই প্রধান শিক্ষক।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগে জানা যায়, ২০১২ সালে উপজেলার অন্নদানগর ইউনিয়নের বামন সরদার রেজি. প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ২০১৬ সালে জাতীয়করণ করা হয়। তখন থেকেই প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন আনোয়ারা বেগম। আর সহকারী শিক্ষক হিসেবে রয়েছেন সেলিনা আক্তার, ফাতেমা বেগম ও রুবিনা বেগম নামে তিন শিক্ষক। বিদ্যালয়টিতে কাগজে-কলমে ১১০ জন শিক্ষার্থী থাকলেও পাওয়া গেছে মাত্র ১২ জন। দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৪ জন, চতুর্থ শ্রেণিতে ৬ জন এবং পঞ্চম শ্রেণিতে ২ জন। প্রতিদিনেই ১০ থেকে ১২ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকেন বলেন জানান স্থানীয় গ্রামবাসী। প্রধান শিক্ষক আনোয়ারা বেগম ওই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য গোলাম রব্বানীর যোগসাজশে অনিয়ম আর দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছেন বিদ্যালয়টি। আর গোলাম রব্বানী ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক রুবিনা বেগমের বাবা। প্রধান শিক্ষক ও গোলাম রব্বানী মিলে বিদ্যালয় উন্নয়ন ও সংস্কারের টাকা, স্লিপের টাকা কাগজে-কলমে উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। তাদের আত্মীয়করণ ও অভিভাবকদের সঙ্গে অসদাচরণের কারণে বর্তমানে শূন্যের কোটা শিক্ষার্থী সংখ্যা।
সোমবার সরজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, ১২ শিক্ষার্থী উপস্থিত। পঞ্চম শ্রেণির ক্লাসে একটি মাত্র বেঞ্চে বসে আছেন দুজন শিক্ষার্থী। পাশে বাচ্চা নিয়ে খেলছেন শিক্ষিকা। আর চতুর্থ শ্রেণিতে ৬ এবং দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতিটি কক্ষে ২/৩ সেট ছাড়া বেঞ্চ নেই। এ সময় প্রধান শিক্ষিকা আনোয়ারা বেগম উপস্থিত গ্রামবাসীর সামনে বলেন, আমরা শিক্ষা অফিসার এবং সহকারী শিক্ষা অফিসারকে প্রতি মাসে টাকা দিই। তারা সব জানে। কারো করার কিছু নেই। এছাড়া আর কোনো তথ্য দিতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে ওই ক্লাস্টারের দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল ইকবাল বলেন, আমরাও ১৫-২০ জনের বেশি শিক্ষার্থী পাইনি। অনিয়ম আছে। ৪ শিক্ষক কীভাবে ১২ শিক্ষার্থীকে পড়িয়ে লাখ টাকা বেতন তোলেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, দেখছি কী ব্যবস্থা নেয়া যায়। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়