বাম গণতান্ত্রিক জোটের হুঁশিয়ারি : দমন-পীড়ন করে গদি রক্ষা করা যাবে না

আগের সংবাদ

চার কারণে ভ্যাট আদায়ে বিপর্যয়

পরের সংবাদ

সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে সম্মত : কথা ও কাজে বাস্তবায়ন দেখতে চাই

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

সীমান্তে সংযত আচরণে ভারতের প্রতিশ্রæতি সত্ত্বেও বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশিদের নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেই চলেছে। সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন দুই শীর্ষ নেতা। গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শীর্ষ বৈঠক নিয়ে যৌথ বিবৃতি প্রচার করা হয়েছে। ৩৩ অনুচ্ছেদের ওই বিবৃতিতে রাজনীতি, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, বাণিজ্য, সংযুক্তি, পানিসম্পদ, উন্নয়ন সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক, জনগণের মেলবন্ধনসহ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার সব বিষয়ে আলোচনা করেছেন। বিগত দিনের বৈঠকে সীমান্তে হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার ঘোষণা দেয়া হলেও কার্যকর হয়নি। এবার আমরা কথা ও কাজের বাস্তবায়ন দেখতে চাই। প্রতি বছর সীমান্ত সম্মেলনে হত্যার বিষয়টি আলোচিত হলেও কার্যকর কোনো ভূমিকা দেখা যায় না। সীমান্তে সংযত আচরণে ভারতের প্রতিশ্রæতি সত্ত্বেও বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশিদের নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেই চলেছে। যুদ্ধাবস্থা ছাড়া বন্ধুভাবাপন্ন দুই দেশের সীমান্তে এ রকম প্রাণহানি অস্বাভাবিক, অমানবিক। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবির তথ্য বলছে, ২০১৫ থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত সীমান্তে ২০২ বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ৪৩৮ জন। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত এক দশকের মধ্যে কেবল ২০১৮ সালে সীমান্তে হত্যার ঘটনা দুই অঙ্কের নিচে ধরে রাখা সম্ভব হয়েছিল। ওই বছর সরকারি হিসাবে তিনজন হত্যার শিকার হন। ওই সময়ে সীমান্তের পরিবেশও ছিল স্বস্তিদায়ক। অথচ পরের বছরই তা এক লাফে ১৩ গুণ বেড়ে যায়। অথচ বিভিন্ন সময় ভারতীয় শীর্ষ পর্যায় থেকে বলা হয়েছে, সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার নীতিতে কাজ করা হবে। সীমান্ত হত্যা রোধে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফের হাতে প্রাণঘাতী অস্ত্র দেয়া হবে না বলেও প্রতিশ্রæতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সেসব প্রতিশ্রæতির বাস্তবায়ন নেই। কয়েক দশক ধরে গুলি করে হত্যা করে চোরাকারবার ঠেকানো গেছে কি? দুদেশের মধ্যে সমঝোতা এবং এ সম্পর্কিত চুক্তি অনুযায়ী যদি কোনো দেশের নাগরিক অননুমোদিতভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে, তবে তা অনুপ্রবেশ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার কথা এবং সেই মোতাবেক ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে বেসামরিক কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের নিয়ম। গুলি করে নিরস্ত্র মানুষ হত্যা করা কেন? যেখানে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা, মানুষ পাচার এবং চোরাচালান বন্ধে যৌথ উদ্যোগ ও দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর মধ্যে সহযোগিতা ও আস্থা বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে দুই দেশ কাজ করছে, সেখানে সীমান্তে গুলি-হত্যা কোনোভাবেই কাক্সিক্ষত নয়। সীমান্তে যে কোনো অপরাধ দমনের ক্ষেত্রে অপরাধীদের বিদ্যমান আইনে বিচার হবে এবং এটাই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হওয়া উচিত। ভারত বারবার বলেছে, তারা সীমান্তে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করছে না। কিন্তু পরিস্থিতি যা দেখা যাচ্ছে, তাতে তাদের এই বক্তব্য অন্তঃসারশূন্য হয়ে পড়ছে। আমরা আর সীমান্তে হত্যার বর্বরতা দেখতে চাই না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়