প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
বর্তমান বাস্তবতায় বলতে হয়, বাংলাদেশে দুর্নীতি বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ হলো রাজনৈতিক দলগুলোর জনগণের প্রতি রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও ঘোষণা বাস্তবায়নে অধিক উদাসীনতা। বিপরীতে উচ্চ পর্যায়ের অপরাধীদের যথাযথ বিচারের আওতায় না আনা ও শাস্তি না হওয়া। দেশে সরকারি কর্মকর্তাদের ভয়াবহ দুর্নীতি, ব্যাংক খাতে অবারিত দুর্নীতি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা, জালিয়াতি, ভূমি-নদী-জলাশয় দখল, সরকারি ক্রয় খাতে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের কারণে দুর্নীতি এক ধরনের ছাড় পেয়ে যাচ্ছে, যা কাম্য নয়। কারণ রাজনৈতিক ও ব্যক্তিপর্যায়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাদের স্বার্থের দ্ব›দ্ব প্রকটভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। আমাদের প্রশাসনে, সরকারি ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ও ব্যক্তি অবস্থানকে ব্যক্তিস্বার্থের জন্য প্রভাব খাটিয়ে দুর্নীতির সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যতক্ষণ পর্যন্ত আইনের সঠিক প্রয়োগ না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত সুশাসন নিশ্চিত হবে না, দুর্নীতি প্রতিহত করা যাবে না। গত মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। এরই মধ্যে আমরা সাফল্য পেতে শুরু করেছি। আমার বিশ্বাস করি, দুর্নীতি প্রতিহত ও সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী যে পদক্ষেপই নেবেন, জনগণ তাতে সার্বিক সহায়তা দেবে।
এক্ষেত্রে আমাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে দুর্নীতি প্রতিহত করা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করা উচিত। নিজ নিজ জায়গা থেকে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় না দিয়ে বরং কঠোর হতে হবে, তাহলেই অধস্তনরা দুর্নীতি করার সাহস পাবে না। তাই আগে নিজেকেই ঠিক হতে হবে। এক্ষেত্রে আমি যদি অনিয়ম না করি, তাহলে অফিসের অন্যরাও অন্যায়-অনিয়ম করার সাহস পাবে না। এভাবে একে একে বদলাবে সবাই। প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের জবাবদিহির ব্যাপারে অবহেলা করা যাবে না। কাউকে বড় কোনো কাজের দায়িত্ব দেয়ার আগে তার যোগ্যতা, দক্ষতা, প্রজ্ঞা, সততা, বিচক্ষণতা, নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষমতা, সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতা ইত্যাদি বিবেচনায় নিতে হবে। অনেক সময় অযোগ্য ব্যক্তি গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে। সেসব জায়গায় ভালো কাজ হয় না। তার দুর্বলতার সুবাদে দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়। এ বিষয়ে নজর দিতে হবে। বাস্তবায়নে প্রত্যেক সেক্টরে জবাবদিহিতা বাধ্যতামূলক করতে হবে। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের উপযুক্ত শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আমাদের নৈতিক শিক্ষার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রতিটি বিদ্যাপীঠে নৈতিকতার শিক্ষা দিতে হবে। কেবল আইন বা চাপ প্রয়োগ করে দেশ থেকে দুর্নীতি ও অসামাজিক কার্যকলাপ রোধ করা সম্ভব হবে নয়, যদি না জনগণ নিজ নিজ জায়গা থেকে এটা প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারেন। সরকারকে উক্ত চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে দুর্নীতিরোধে শক্ত অবস্থান নিতে হবে। একটি দুর্নীতিমুক্ত সুন্দর সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাই হোক সরকার তথা সবার ব্রত।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।