প্রতিনিধি, ঈশ্বরদী (পাবনা) : ঈশ্বরদী উপজেলায় লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) বা চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে গরু। গত ২ মাস ধরে এ রোগের প্রাদুর্ভাব চলছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা বেড়ে চলায় খামারিদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত কোন গরু মারা যায়নি। গরুর সঠিক পরিসংখ্যান না জানলেও উপজেলায় এখন পর্যন্ত ৫৫টি গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তবে খামারিরা বলছে আক্রান্তের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে গেছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এলএসডি রোগটি একধরনের চর্মরোগ হলেও এতে গরুর মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে। এই রোগ মানুষের মধ্যে না ছড়ালেও গরুর ক্ষেত্রে এটি ভাইরাসজনিত ছোঁয়াচে রোগ। সাধারণত বর্ষার শেষে শরতের শুরুতে অথবা বসন্তের শুরুতে মশা-মাছির বংশবিস্তারের সময় রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগে আক্রান্ত গরুর-বাছুর প্রথমে জ্বরে আক্রান্ত হয় ও একপর্যায়ে খাওয়া বন্ধ করে দেয়। জ্বরের সঙ্গে মুখ ও নাক দিয়ে লালা বের হয়, পা ফুলে যায়। একপর্যায়ে আক্রান্ত গরুর শরীরের বিভিন্ন জায়গার চামড়া পিণ্ড আকৃতি ধারণ করে, লোম উঠে যায় এবং ক্ষত সৃষ্ট হয়। ধারাবাহিকভাবে এই ক্ষত শরীরের অন্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। গরু ঝিম মেরে থাকে ও কাঁপতে শুরু করে। কিডনির ওপর প্রভাব পড়ার ফলে গরু মারাও যায়। সরেজমিন উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে জানা যায়, উপজেলার সব ইউনিয়নেই এই রোগের প্রাদুর্ভাব রয়েছে। তবে মুলাডুলি, সাহাপুর ও সাঁড়া ইউনিয়নে এই রোগে আক্রান্ত গরুর সংখ্যা বেশি। মুলাডুলি ইউনিয়নের গোয়ালবাধান গ্রামের নাজমুল হক বলেন, আমার বাড়িতে ২টি গরু ছিল। ২টি গরুই এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। গরুগুলো নিয়ে আমরা সবাই খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি।
খামারি আমিরুল ইসলাম বলেন, সংক্রামণ এড়াতে তিনি খামার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখছেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. নাজমুল হোসাইন বলেন, এই রোগ এমনি ভালো হবে। এলএসডি রোগে মৃত্যুহার একেবারেই কম, তবে গরু চরম দুর্বল হয়ে পড়ে। বাছুরদের প্রতি সচেতন থাকতে হবে। প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ক্যাম্প স্থাপন ও উঠানবৈঠক করে এই রোগের ব্যাপারে খামারিদের সচেতন করে দিকনির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।