ঢাকা কলেজ : ক্যান্টিনে খাওয়া নিয়ে দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১০

আগের সংবাদ

ভাঙা সড়কে খোঁড়াখুঁড়ির মচ্ছব : সড়ক খনন নীতিমালা উপেক্ষিত > তিন মাসের কাজ বছরজুড়ে > সেবা সংস্থার কাজে সমন্বয় নেই

পরের সংবাদ

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব সেতু উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী : আমরা উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চাই

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দেশে উন্নয়নের অদম্য ধারা অব্যাহত রাখার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা চাই দেশে যে উন্নয়নের গতি ধারাটা চলছে, সেটা অব্যাহত থাকুক। আর সেজন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ দিয়ে একটি সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় আমরা কাজ করছি। আমরা জানি, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, বিদ্যুৎ সরবরাহ আর কর্মসংস্থান সৃষ্টি একটি দেশের অগ্রগতির জন্য অপরিহার্য। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে আমরা এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে কাজ করে যাচ্ছি। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিশ্চিত করার পাশাপাশি তৃণমূলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছি।
গতকাল রবিবার পিরোজপুরের বেকুটিয়ায় কচা নদীর উপর বহুল আলোচিত ১ হাজার ৪৯৩ মিটার ‘বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয় থেকে ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী অনুষ্ঠানে একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। অপরপাশে সেতু এলাকায় পশ্চিম আর পূর্বপাড়ে অনুষ্ঠিত দুটি সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম ও সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, পিরোজপুর জেলা পরিষদের প্রশাসক মহিউদ্দিন মহারাজ। এ সময় প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় জনগণের সঙ্গে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত ছিল। কারণ তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেক খর¯্রােতা বড় বড় নদী পাড়ি দিয়ে জীবিকা ও চিকিৎসার জন্য রাজধানীতে আসতে হতো। আমি ৯৬ সালে বরিশালের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগের জন্য শিকারপুর-দোয়ারিকা সেতু নির্মাণ করে দেই এবং কীর্ত্তনখোলা নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণের কাজ হাতে নেই। গাবখান

ব্রিজও আমারই করা। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নেও একের পর এক সেতু আমরা করে দিচ্ছি। এই বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব অষ্টম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু উদ্বোধনের ফলে ঢাকার সঙ্গে পিরোজপুরের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। জনগণ পিরোজপুরের তাজা পেয়ারা এবং আমড়া রাজধানীতে বসেই পাবে। এই অঞ্চলের শীতল পাটিও বিখ্যাত। জেলার বাসিন্দারা অন্যান্যের পাশাপাশি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প স্থাপন করতে পারে- যা জেলা ও অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তনে ব্যাপক অবদান রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে আমরা পায়রা বন্দরের উন্নয়ন হাতে নিয়েছি। অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাড়াতে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলছি। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করতে আমরা আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন করছি। ঢাকায় মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প, গাজীপুর থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার র‌্যাপিড বাস ট্রানজিট, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল এবং ১০ লেনের টঙ্গী সেতু নির্মাণসহ বিভিন্ন প্রকল্প আমরা বাস্তবায়ন করছি। এই প্রকল্পগুলো সম্পন্ন হলে আমাদের অর্থনীতি আরো গতি পাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা চেয়েছিলেন একদিকে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও অপরদিকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। যার সুফল আপনারা আজ পাচ্ছেন এবং আমাদের লক্ষ্য দেশকে আরো উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। কেননা, আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করাতে সারাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাওয়াটাকে আমাদের কর্তব্য বলেই মনে করি। তিনি বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি-জামায়াত দেশব্যাপী তাণ্ডব, লুটপাট, হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ চালায়। সেই বিভীষিকাময় স্মৃতি নিশ্চই পিরোজপুর, ভোলা, বরিশাল বরগুণাসহ দক্ষিণাঞ্চলবাসী ভুলে যাননি।
উৎপাদন বাড়ানোর ওপর আবারো জোর দিয়ে সরকার প্রধান বলেন, আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। আপনাদের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষকে আরো উৎপাদনমুখী হতে হবে। আমাদের গবেষণালব্ধ তরিতরকারি, ফল, মূল ও সবজি এখন সারাবছর উৎপাদিত হয়। সেগুলোর যেন আরো ব্যাপকভাবে উৎপাদন হয়, মৎস্য সম্পদ উৎপাদন বাড়ানো এবং বাজারজাত করারও বড় একটা সুযোগ আপনারা পেয়ে যাচ্ছেন। বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম এবং পণ্য আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় আমাদের নিজেদের ব্যবস্থা নিজেদেরই করতে হবে। আমাদের যুব সমাজকে বলব চাকরীর পেছনে না ছুটে স্বপ্রণোদিত ব্যবসাবাণিজ্য গড়ে তুলতে হবে, যাতে করে অপরকে চাকরি দিতে পারেন।
মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘আমার মাটি আছে, মানুষ আছে তা দিয়েই আমি এই দেশকে গড়ে তুলব’। আমিও দৃঢ়ভাবেই তা বিশ্বাস করি। এই মাটি ও মানুষ দিয়েই এ দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে আমরা সক্ষম হব। বাংলাদেশকে নিয়ে জাতির পিতার যে চিন্তাচেতনা ও আদর্শ ছিল সেটাই আমাদের চলার পথের পাথেয়। আর আমরা চাই, আমাদের এই অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়