প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
চবি প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট এলাকায় দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা এবারই প্রথম নয়। গত তিন বছরে চারটি পৃথক দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে এই ১ নম্বর গেট এলাকায় প্রাইভেট কারের ধাক্কায় নিহত হলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আফতাব হোসেন (৪১)। ওই সময় তিনি মোটরসাইকেলে চড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরছিলেন। গত বছরের ২০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট এলাকায় বাসের ধাক্কায় দুই শ্রমিক নিহত হন। এর পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ১ নম্বর গেট এলাকায় জেব্রাক্রসিং, ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন। শুক্রবার রাতে সেই একই স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষক আফতাব হোসেন নিহত হওয়ার পর সবার টনক নড়েছে। ১ নম্বর গেটের সামনে সড়কে জেব্রাক্রসিং দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আক্ষেপ করে বলছেন, ‘লাল রক্তের বিনিময়ে সাদা জেব্রা ক্রসিং’। এই মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে সমালোচনার ঝড়।
গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট এলাকায় জেব্রা ক্রসিংয়ের কাজ শুরু হয়। এছাড়া স্পিড ব্রেকারের কাজও শুরু হবে বলে জানিয়েছেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিদুল আলম। তিনি বলেন, যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে জেব্রা ক্রসিংয়ের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। যেটি সড়ক ও জনপদ
অধিদপ্তরের মাধ্যমে অনেক আগেই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। স্পিড ব্রেকার নির্মাণের কাজও আজকের (শনিবার) মধ্যে শুরু হবে। এখানে একটি ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের যে পরিকল্পনা ছিল তার দ্রুত বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। সড়ক বিভাগও এ বিষয়ে আন্তরিক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের শুরু থেকেই নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। আমরা সবাই মিলে কাজগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, আমরা সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরকে এর আগেও অনেকবার বলেছিলাম এখানে স্পিড ব্রেকার নির্মাণ করতে। এখন আবারো বলেছি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। আমরা হাটহাজারী থানা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গেও এ ব্যাপারে কথা বলেছি। তারা জেব্রাক্রসিং ও স্পিড ব্রেকারের কাজ ইতোমধ্যে শুরু করে দিয়েছে।
এদিকে নিহত শিক্ষক আফতাব হোসেনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল শনিবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বেলা আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
পাঁচলাইশ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাদেকুর রহমান জানান, চবি শিক্ষক আফতাব হোসেন শুক্রবার রাতে সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন। তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার মধ্যরাতে মোটরসাইকেল চালিয়ে হাটহাজারীর দিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দিকে ফিরছিলেন আফতাব হোসেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটের সামনে রাস্তা পার হয়ে মেইন রোড থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাস্তায় ঢোকার সময় শহরের দিক থেকে আসা একটি প্রাইভেটকার তাকে জোরে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরবাইকসহ রাস্তায় ছিটকে পড়েন তিনি। গুরুতর আহত অবস্থায় আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় প্রাইভেটকারের চালক মাসুদ পারভেজকে আটক করেছে পুলিশ। দুর্ঘটনার পর ১ নম্বর গেট এলাকায় চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়ক প্রায় ৩ ঘন্টা অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটের সামনে স্পিড ব্রেকার দিতে হবে ও ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করতে হবে।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।