এশিয়া কাপ : হংকংকে লজ্জায় ডুবিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আগের সংবাদ

বন্ধুত্ব সুসংহত করার প্রত্যয় : বাংলাদেশে চীনা বলয় ঠেকাতে চায় দিল্লি > পানিসহ সীমান্ত সুরক্ষায় সমাধান চায় ঢাকা

পরের সংবাদ

চরম জনদুর্ভোগে এলাকাবাসী : শৈলকুপায় দীর্ঘ এক যুগেও সংস্কার হয়নি ভাঙা ব্রিজ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মনিরুজ্জামান সুমন, শৈলকূপা (ঝিনাইদহ) থেকে : উপজেলার হাটফাজিলপুর-নিত্যানন্দনপুর বাওড় সড়কের গোলকনগর এলাকার জিকে খালের ওপর ব্রিজটির অবস্থান। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এখন ব্রিজটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এ নিয়ে অনেকবার সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে ধরনা দিয়েও কোনো কাজ হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। ব্রিজটি সংস্কার না হওয়ায় জনদুর্ভোগ এখন চরমে উঠেছে। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সেতুটির পাটাতন ভেঙে আছে। ভাঙা সেতুর খাদে পড়ে একজন মারাও গেছেন। আহত হয়েছেন কয়েকজন। এখনো ঝুঁকি নিয়ে সেতুর ওপর দিয়ে হাজারো মানুষ ও ছোট ছোট যানবাহন চলাচল করছে। তবে বন্ধ রয়েছে ভারি যানবাহন চলাচল।
জানা যায়, ষাটের দশকে ৩০ গ্রামের মানুষের যাতায়াতের জন্য একমাত্র সড়কে খালের ওপর নির্মিত হয় জিকে ব্রিজ। হাটফাজিলপুর বাজারের পাশ দিয়ে জিকে সেচ প্রকল্পের একটি খাল চলে গেছে। এটি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থেকে বেরিয়ে শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ হয়ে মাগুরার মধ্যে চলে গেছে। এটি প্রকল্পের প্রধান সেচ খাল হিসেবে বহমান। ব্রিজের দক্ষিণে নিত্যানন্দনপুর ইউনিয়ন ও উত্তরে আবাইপুর ইউনিয়নের কমপক্ষে ৩০টি গ্রাম। পাশেই রয়েছে বিশাল হাটফাজিলপুর বাজার। এই ব্রিজ দিয়েই যেতে হয় শৈলকুপা উপজেলা শহর হয়ে জেলা পর্যন্ত। তাই প্রতিদিন তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও মালামাল সরবরাহে এই ব্রিজের ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় এই ব্রিজটির মাঝখানের অংশ ভেঙে যাওয়া ও রেলিং না থাকায় পথচারীসহ যানবাহন চলাচলে সমস্যা দেখা দিয়েছে। দিনে কোনো রকম পার হলেও রাতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এর আগে ব্রিজের নিচে পড়ে গিয়ে প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বহু বছরের পুরাতন হওয়ায় মানুষের চলাচলে মরণ ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ব্রিজটি। ব্রিজটির ঠিক মাঝখানে ১৫ ফিট লম্বা ও ১০ ফিট চওড়া হয়ে ভেঙে গেছে। একটি অংশে বাঁশের চরাট বানিয়ে কোনো রকম চলাচল করছে সাধারণ মানুষ। ব্রিজটির কোনো রেলিং নেই। বড় কোনো যানবাহন চলাচলেরও উপায় নেই এই ব্রিজ দিয়ে। তবে ছোট ছোট যানবাহন চলাচলের পাশাপাশি অসংখ্য পথচারী পারাপার হন প্রতিদিন। সেতুর ভাঙা স্থানে যানবাহন ধরে পার করতে হচ্ছে। মোটরসাইকেলের চালকেরা সাবধানে সেতু পার হচ্ছেন। দেখে মনে হয়, যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ব্রিজের পাশে বসে কথা হয় কুমিরাদহ গ্রামের ইসলাম আলী জোয়ারদারের সঙ্গে। তিনি বলেন, হাটফাজিলপুর বাজার থেকে একটি সড়ক নিদ্যানন্দপুর বাঁওড় পর্যন্ত চলে গেছে। বাঁওড়ের অপর প্রাপ্তে ঝিনাইদহের হরিশংকরপুর ইউনিয়ন। সেখানকার মানুষও খেয়া পেরিয়ে এই সড়কে চলাচল করে। তিনটি ইউনিয়নের কমপক্ষে ১৫ গ্রামের মানুষ সড়কটি ব্যবহার করে। এর মধ্যে চন্দ্রজানি, শিতারামপুর, পরানপুর, বাকড়ী, পানামী, কাকুড়িয়াডাঙ্গা, ভবানীপুর, সমশপুর, ফাজিলপুর উল্লেখযোগ্য। এই সড়কের হাটফাজিলপুর ও ভবানীপুর এলাকায় পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। শিক্ষার্থীরা এই সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করেন।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, নতুন সেতু নির্মাণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যালয়, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে অসংখ্যবার ধরনা দিয়েছেন, কিন্তু কোনো প্রতিকার হয়নি। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে সেতুর খাদে পড়ে একজন মারা গেছেন। আরো অনেকে আহত হয়েছেন।
আবাইপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন মোল্লা বলেন, জিকে খালের ওপর অবস্থিত এই ব্রিজটি এক যুগ ধরে ভাঙা অবস্থায় পড়ে থাকলেও এর সংস্কারে কোনো ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এই ব্রিজের ওপর দিয়ে প্রতিদিন ২০ গ্রামের কমপক্ষে ৫০ হাজার লোকজন চলাচল করে। এমন গুরুত্বপূর্ণ ব্রিজ হওয়া সত্ত্বেও দিনের পর দিন সংস্কারের অভাবে পড়ে আছে। যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে শৈলকুপার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী বিকর্ণ সাহা বলেন, এই ব্রিজের ব্যাপারে জিকে আইপি প্রজেক্টে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে, প্রজেক্ট এখনো পাস হয়নি। অচিরেই ফল পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ তাদের। এছাড়াও শৈলকুপা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের মাধ্যমেও কাজটি করার জন্য চেষ্টা করছেন। যত দ্রুত সম্ভব ব্রিজটি সংস্কার করে জনদুর্ভোগ ও মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়