এশিয়া কাপ : হংকংকে লজ্জায় ডুবিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আগের সংবাদ

বন্ধুত্ব সুসংহত করার প্রত্যয় : বাংলাদেশে চীনা বলয় ঠেকাতে চায় দিল্লি > পানিসহ সীমান্ত সুরক্ষায় সমাধান চায় ঢাকা

পরের সংবাদ

কিশোরগঞ্জ : আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে শতাধিক আহত

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় আওয়ামী লীগ-বিএনপির সংঘর্ষে শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পুলিশ বিএনপির প্রায় ১০-১২ জনকে আটক করে। অন্যদিকে ঠাকুরগাঁওয়ে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে একজন গুলিবিদ্ধ ও বিএনপি অফিসে আগুন দেয়া হয়েছে। তাছাড়া নেত্রকোনার বারহাট্টায় মঞ্চে অগ্নিসংযোগ করে বিএনপির সম্মেলন পণ্ড করা হয়েছে। এসব ঘটনা ঘটেছে গতকাল শনিবার। এ সম্পর্কে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট-
কিশোরগঞ্জ : কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার সৈয়দগাঁও রোডে গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিএনপির নেতাকর্মীরা মিচিল নিয়ে পাকুন্দিয়া উপজেলা সদরে আসার সময় পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এসময় পুলিশ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। বিএনপির কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বিএনপির নেতাকর্মীরা ১০-১২ জন করে বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন।
ধাওয়া-পাল্টাধায়ার সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে পাটমহল বাজার প্রদক্ষিণ করার সময় এলোপাতাড়ি ইট-পাটকেল নিক্ষেপে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। পুলিশ বিএনপির প্রায় ১০-১২ জনকে আটক করে। পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করায় বিএনপির নেতাকর্মীরা রাস্তার মোড়ে মোড়ে অবস্থান নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের টহল অব্যাহত রয়েছে।
ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়ায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ ২০ জন আহত ও মাহিন (২১) নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হন। সংঘর্ষে আওয়ামী লীগের উত্তেজিত নেতাকর্মীরা রুহিয়া থানা বিএনপি অফিস ভাঙচুর ও অফিসে অগ্নিসংযোগ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৩ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। আহতরা ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এর মধ্যে আনসারুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
গতকাল শনিবার বিকালে একই দিনে রুহিয়া থানা বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি ও থানা মহিলা আওয়ামী লীগের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ সময় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রুহিয়া থানা এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় ধাওয়া- পালটা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনসারুল ইসলামসহ কয়েকজন আহত হন। এর মধ্যে আনসারুলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়া দোকানপাট ভাঙচুর করাসহ ৫টি মোটরসাইকেলে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্থান থেকে সভাস্থলে আসার সময় আওয়ামী লীগ কর্মীরা তাদের মারপিট করে। তারা আমাদের সভামঞ্চে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে, অফিসে ভাঙচুর চালিয়েছে এবং অগ্নিসংযোগ করেছে। আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত করেছে।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অরুনাংশু দত্ত টিটো বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে থানা মহিলা আওয়ামী লীগ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল। দুপুরে হঠাৎ করেই বিএনপির নেতাকর্মীরা এমপি রমেশ চন্দ্র সেনের বাসায় হামলা চালায়। এসময় তারা একজন সাংবাদিককে মারপিট করে। পরে আমাদের ছেলেরা এগিয়ে এলে তারা তাদের মারপিট করে পালিয়ে যায়। তারা আমাদের ৪-৫টি গাড়ি ভাঙচুর করেছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে রুহিয়া থানার ওসি সোহেল রানা বলেন, দুটি দল একই সময় সভা ডেকেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুটি দলকে আলাদা সময়ের কথা বলা হয়েছিল। তবে একই সময়ে উপস্থিত হয়ে তারা এই অপ্রিতিকর ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে।
ঠাকুরগাঁও- ৩ আসনের সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমান এমপি জানান, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালায়। এ ঘটনার তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে আমরা অনুরোধ করছি।
বারহাট্টা (নেত্রকোনা) : নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের মঞ্চে গতকাল শনিবার দুপুরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিএনপির পূর্বনির্ধারিত এই সম্মেলনটি বারহাট্টা উপজেলা শহরের গোপালপুর ফায়ার সার্ভিস কার্যালয় মোড়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
নির্ধারিত সময়ে সম্মেলনের জন্য মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়। কিন্তু দুপুর দেড়টার দিকে বারহাট্টা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাঈনুল হক কাশেমের নেতৃত্বে উপজেলা সদরে বিএনপির নৈরাজ্য বিরোধী একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি গোপালপুর বাজারের ফায়ারসার্ভিস মোড়ে পৌঁছে বিএনপির সম্মেলনের মঞ্চে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। তবে এসময় কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য ও বারহাট্টা উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মানিক আজাদ বলেন,আমরা উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের জন্য পুলিশ প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে অত্যন্ত ছোট পরিসরে একটি সম্মেলন করার প্রস্তুতি নেই। কিন্তু দুপুরে উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে কয়েকজন দলীয় নেতাকর্মী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের সম্মেলন পণ্ড করে এবং মঞ্চে আগুন লাগিয়ে দেয়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে, বারহাট্টা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাঈনুল হক কাশেম বলেন, বিএনপির নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। পরে আমরা খবর পাই, স্থানীয় বিএনপি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে জড়ো হচ্ছে। একারণে আমরা মঞ্চটি ভেঙে দিয়েছি। বারহাট্টায় কোনো নৈরাজ্য করতে দেয়া হবে না।
বারহাট্টা থানার ওসি মো. লুৎফুল হক দুপুর আড়াইটার দিকে বলেন, আমরা এমন কোনো সংবাদ পাইনি। বারহাট্টায় কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। এবিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগও করেনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়