ব্যবসায়ীদের জরিমানা

আগের সংবাদ

নাগালের বাইরে ওষুধের দামও

পরের সংবাদ

সাবেক ইসি মাহবুব তালুকদার আর নেই

প্রকাশিত: আগস্ট ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : সাবেক নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার মারা গেছেন। গতকাল বুধবার দুপুরে শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে সেখানকার চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। মাহবুব তালুকদারের বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মাহবুব তালুকদারের মেয়ে আইরিন মাহবুব মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বাবা দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। এছাড়া বার্ধক্যজনিত আরো অনেক রোগে ভুগছিলেন তিনি। আজ (বুধবার) সকালে তার শারীরিক অবস্থার খুব অবনতি হয়। ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক করেন। পরে দুপুর ১টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে তিনি মারা যান। ইউনাইটেড হাসপাতালের জনসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তা সাজ্জাদুর রহমান জানান, গতকাল মাহবুব তালুকদারকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়, তবে তাকে বাঁচানো যায়নি।
বারবার ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেয়া এই সাবেক কমিশনারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য চার কমিশনার ও ইসি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এক শোক বার্তায় ইসির পক্ষ থেকে এ শোক জানানো হয়। এছাড়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও মাহবুব তালুকদারের মৃত্যুতে গভীর প্রকাশ করেছেন।
২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি মাহবুব তালুকদারকে কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সদস্য হিসেবে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ নিয়োগ দেন। তিনি ইসির কাজেরই সমালোচক হিসেবে বারবার আলোচনায় এসেছেন।
১৯৪২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন মাহবুব তালুকদার। নবাবপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। মাহবুব তালুকদার একজন কবি ও শিশুসাহিত্যিক। তিনি কর্মজীবনের শুরুতে দৈনিক ইত্তেফাকে সাংবাদিকতা করেন। শিক্ষকতা পেশায়ও নিয়োজিত ছিলেন। তিনি তৎকালীন জগন্নাথ কলেজ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপত্য বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে শিক্ষকতা করেন।
মাহবুব তালুকদার ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এবং মুজিবনগর সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ে চাকরিতে যোগ দেন। পরে তিনি সরকারি চাকরির ধারাবাহিকতায় বঙ্গভবনে ৫ বছর অবস্থানকালে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর বিশেষ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। এরপর রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ উল্লাহর জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকাকালে তিনি তার সহকারী প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পান তিনি। ১৯৯৯ সালে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে চাকরি থেকে অবসর নেয়ার আগ পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় অধিষ্ঠিত ছিলেন মাহবুব তালুকদার। তিনি ২০১২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কারে ভূষিত হন।
তার তিন সন্তানের মধ্যে বড় মেয়ে ঢাকায় বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকেন। বাকি দুই সন্তান থাকেন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায়। তার বড় মেয়ে আইরীন মাহবুব জানান, আপাতত তার বাবার মরদেহ গোসল শেষে বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হবে। মাহবুব তালুকদারের নিউইয়র্ক ও কানাডা প্রবাসী দুই সন্তান দেশে এলে দাফনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। গুলশান আজাদ মসজিদে মাহবুব তালুকদারের জানাজা হবে বলে জানিয়েছেন তার বড় মেয়ে আইরীন মাহবুব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়