ঢাবি সাংস্কৃতিক : সংসদের আয়োজন চিঠি লেখা যাবে ‘প্রিয় বঙ্গবন্ধু’কে

আগের সংবাদ

নান্দনিক বঙ্গবন্ধু

পরের সংবাদ

বিক্ষোভে উত্তাল ‘চা জনপদ’ : মজুরি বাড়ানোর দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে শ্রমিকরা

প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : মজুরি বাড়ানোর দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেছেন চা শ্রমিকরা। ক্ষুব্ধ শ্রমিকদের আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে দেশের চা বাগান অধ্যুষিত এলাকাগুলো। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল শনিবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হয় শ্রমিকদের ধর্মঘট। কাজে যোগ না দিয়ে বাগানে বাগানে দিনভর বিক্ষোভ করেন হাজার হাজার শ্রমিক। এদিন আন্দোলনে নামেন সিলেটের চা শ্রমিকরাও। সকালে বিভিন্ন চা বাগান থেকে সড়কে এসে বিক্ষোভ করেন শত শত চা শ্রমিক। এ সময় সিলেট বিমানবন্দর সড়ক প্রায় আধাঘণ্টা অবরোধ করে রাখেন তারা। আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
সিলেট ব্যুরো : বেশ কয়েকদিন ধরে চলে আসা আন্দোলনে সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন সিলেটের লাক্কাতুরা, মালনিছড়া, খাদিমনগর, কেওয়াছড়া, দলদলি, জাফলং, লালাখালসহ সব বাগানের শ্রমিক। আন্দোলনরত শ্রমিকরা সকাল থেকে সিলেট শহরতলীর লাক্কাতুরা এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে বিমানবন্দর সড়কে অবস্থান নিলে প্রায় আধাঘণ্টা সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। পরে চা শ্রমিকরা মিছিল নিয়ে নগরীর চৌহাট্টায় এসে অবস্থান নেন।
শ্রমিকদের দাবি সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা ভোরের কাগজকে বলেন, চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা- যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে একেবারেই অযৌক্তিক। এই মজুরি বৃদ্ধি করে ৩শ’ টাকা করার দাবিতে আমরা গত ৮ আগস্ট থেকে আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু আমাদের দাবি কেউ মেনে নিচ্ছেন না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের দাবি নিয়ে বৃহস্পতিবার মালিকপক্ষ ও শ্রমিকদের নিয়ে একটি বৈঠক ডাকে বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তর। বৈঠকে মালিকপক্ষের কেউ আসেননি, তাই কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ জন্য শনিবার সকাল ৬টা থেকে দেশের সব চা বাগানের শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু করেন।
ভোরের কাগজের সঙ্গে আলাপকালে রাজু গোয়ালা বলেন, আগামীকাল (আজ) সাপ্তাহিক ছুটি ও সোমবার জাতীয় শোক দিবসের জন্য আমাদের কর্মসূচিতে সাময়িক বিরতি দেয়া হবে। এরপর আগামী মঙ্গলবার থেকে ৩শ’ টাকা মজুরির দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি চলবে। প্রতিশ্রæতি না পাওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন থেকে সরবো না। তিনি বলেন, আমাদের চুক্তিতে বলা আছে, রেশন হিসেবে ৬ মাস চাল, আর ৬ মাস আটা দেবেন। কিন্তু তারা সেই প্রতিশ্রæতিও রাখেন না। আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া, রোগব্যাধিতে চিকিৎসার জন্য ১২০ টাকা কোনোভাবেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
বিকুল চক্রবর্তী, শ্রীমঙ্গল থেকে : শ্রীমঙ্গলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয়ে ইউনিয়নের বৈঠক শেষে সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বলেন, নায্য অধিকার আদায়ের জন্য মাঠে নেমেছেন শ্রমিকরা। কর্মসূচি লাগাতার চলবে। তবে রবিবার সাপ্তাহিক ছুটি ও সোমবার জাতীয় শোক দিবস থাকায় দুদিন বাগানে কাজ নেই। তাই এই দুদিন কর্মসূচি হবে না। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মাখন লাল কর্মকার জানান, শুক্রবার রাতে বাংলাদেশ শ্রম অধিদপ্তরের ডিজি এক লিখিত চিঠিতে চা পাতা উত্তোলনের চলমান ভরা মৌসুমে আন্দোলন না করে সমঝোতার মাধ্যমে বিষয়টি শেষ করার আহ্বান জানান। এ বিষয়ে শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় শ্রীমঙ্গলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে বৈঠক হয়।
শফিকুল আলম চৌধুরী, হবিগঞ্জ থেকে : দৈনিক মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে হবিগঞ্জের ২৪টি চা বাগানে গতকাল

থেকে আবারো শ্রমিক ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছে। চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল শুক্রবার এক সমাবেশে এ ঘোষণা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার সকাল থেকে তারা ফের আন্দোলনে নামেন।
চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল জানান, এ দেশে চা শ্রমিকরা খুব অবহেলিত। এ যুগে এসে আমাদের দৈনিক মজুরি মাত্র ১২০ টাকা। অথচ দ্রব্যমূল্য, গাড়ি ভাড়া সব বেড়েছে। এটি কোনো অবস্থাতেই হতে পারে না। যেখানে একজন দিনমজুর দৈনিক পান ৫শ’ টাকা, সেখানে চা শ্রমিকরা কেন ৩শ’ টাকা পেতে পারে না। আমরা তো খুব বেশি দাবি করিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়