ডাকসু নির্বাচন ঘিরে পদাবনতি : স্বপদে ফিরছেন ঢাবি শিক্ষক শবনম

আগের সংবাদ

ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ১১ আরোহীর মৃত্যু, দায় কার : গেটম্যানের অনুপস্থিতি নাকি মাইক্রোবাস চালকের অবহেলা > গেটম্যান নাজিম আটক

পরের সংবাদ

দেশে হিন্দু জনসংখ্যা কমছে : সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন ও কমিশন গঠন সময়ের দাবি

প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যা ৮ কোটি ১৭ লাখ ১২ হাজার ৮২৪ জন এবং নারীর সংখ্যা ৮ কোটি ৩৩ লাখ ৪৭ হাজার ২০৬ জন। ধর্মভিত্তিক জনসংখ্যায় দেখা গেছে, মুসলমান ৯১ শতাংশ। সনাতন ধর্মাবলম্বী ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ। ২০১১ সালের জনশুমারিতে হিন্দু ছিল ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ। কমেছে বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের হারও। দেশে হিন্দু জনসংখ্যার হার ক্রমাগত কমছে। গত ৫০ বছরে মোট জনসংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। হিন্দুদের ক্ষেত্রে তা হয়নি। হিন্দুদের সংখ্যা প্রায় ৭৫ লাখ কমেছে। বিষয়টি উদ্বেগের। স্বাধীন দেশে প্রথম জনশুমারি হয় ১৯৭৪ সালে। তখন হিন্দু জনসংখ্যা ছিল ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ। এরপর আরো চারটি জনশুমারি হয়েছে। বিবিএসের ২০১১ সালের জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রতিবেদনে দেশে হিন্দু জনসংখ্যা কমে যাওয়ার দুটি কারণ উল্লেখ করা হয়। প্রথমত, হিন্দুরা দেশ ছাড়ছে। দ্বিতীয়ত, হিন্দু জনগোষ্ঠীর মধ্যে মোট প্রজনন হার তুলনামূলক কম। অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক কারণে সংখ্যালঘুদের দেশত্যাগের বিষয় নিয়ে তিন দশকের বেশি সময় ধরে গবেষণা করছেন অর্থনীতি গবেষক অধ্যাপক আবুল বারকাত। তিনি বলেছেন, ‘কোনো মানুষ নিজের মাতৃভূমি, নিজের বাড়িঘর, ভিটামাটি ছেড়ে অন্য দেশে যেতে চান না। অত্যাচারের কারণে বাংলাদেশের হিন্দুরা দেশ ছাড়ছেন, তাদের সংখ্যা দ্রুত কমছে। শত্রæ (অর্পিত) সম্পত্তি আইনের কারণে অনেকে নিঃস্ব হয়ে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। এটা বেশি ঘটেছে গ্রামের দুর্বল হিন্দুদের ক্ষেত্রে। কারণ আরো আছে। রাজনীতিক কারণ প্রধান ইস্যু এখন। বাংলাদেশ থেকে সংখ্যালঘুদের বিতাড়িত করতেই তাদের বাড়িঘর, দোকানপাট ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে নির্বিচারে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা আমরা অতীতে দেখেছি। একই সঙ্গে তাদের বসতিতে অগ্নিসংযোগ, নারীর ইজ্জত লুণ্ঠন, হত্যা, জখম ও নানা ধরনের মানবতাবিরোধী নৃশংস অপরাধ কম হয়নি। এখনো থেমে নেই সাম্প্রদায়িক হামলা। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর একটি বিশেষ ভোটব্যাংকের তকমা নিয়ে সংখ্যালঘুদের ওপরে যে হামলা চালানো হয় তা ১৯৪৭, ১৯৫০, ১৯৬৪, ১৯৯০, ১৯৯২ সালের সংখ্যালঘু নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় ঘটেছে। পরবর্তীতে ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছিল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে। আমাদের সংবিধানেও ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক নীতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু গত ৫০ বছরের ইতিহাসে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ ক্রমাগত হয়রানি, হুমকি ও নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে। এসব কারণে নীরবে দেশত্যাগের ঘটনাও অব্যাহত রয়েছে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন, মন্ত্রণালয় ও কমিশন গঠনের দাবি দীর্ঘদিনের। এটি সময়ের দাবি। আইন প্রণয়ন করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা করা না গেলে হিন্দু সম্প্রদায় এভাবে হ্রাস পাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়