ডাকসু নির্বাচন ঘিরে পদাবনতি : স্বপদে ফিরছেন ঢাবি শিক্ষক শবনম

আগের সংবাদ

ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ১১ আরোহীর মৃত্যু, দায় কার : গেটম্যানের অনুপস্থিতি নাকি মাইক্রোবাস চালকের অবহেলা > গেটম্যান নাজিম আটক

পরের সংবাদ

কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী : পরনির্ভরশীলতা কমাতে হবে

প্রকাশিত: জুলাই ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ২৯, ২০২২ , ১২:১৯ পূর্বাহ্ণ

** প্রবাসীদের বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান ** বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ একটু কম-বেশি হবেই **
কাগজ প্রতিবেদক : শুধু রেমিট্যান্সের ওপর নয়, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে রপ্তানির ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে শুধু রেমিট্যান্সের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে রপ্তানিনির্ভর বিদেশি মুদ্রা অর্জনের দিকে বেশি মনোযোগ দিতে হবে। পণ্যের বহুমুখীকরণের মাধ্যমে দেশের রপ্তানি বাস্কেটকে আরো সমৃদ্ধ করতে হবে। বিদেশে নতুন বাজার খুঁজে বের করতে হবে। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে, পরনির্ভরশীলতা আমাদের কমাতে হবে। নিজেদের পায়ে নিজেরা দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সেন্টেনিয়াল কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ দেশের বিভিন্ন উপজেলায় নির্মিত ২৪টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এ অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রবাসীকল্যাণ সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন ও বিএমইটির মহাপরিচালক মো. শহিদুল আলম।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ একটু কম-বেশি হবেই। নানা লোকজন আছে, যারা এটা নিয়ে নানা রকম মন্তব্য আর গুজব ছড়িয়ে বেড়ায়। আমাদের ৩ মাসের খাদ্য কেনার রিজার্ভ থাকলেই যথেষ্ট। তবে ভোগ্যপণ্য আর খাদ্যপণ্যে পরনির্ভরশীলতা কমিয়ে নিজের দেশে উৎপাদন বাড়াতে হবে। আমাদের যে উর্বর জমি ও জনসংখ্যা আছে তাতে উদ্যোগ নিলে সেটা করতে পারি। শুধু উৎপাদন নয়, খাদ্যপণ্য সংরক্ষণ আধুনিকীকরণ করতে হবে। খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পও ব্যাপকভাবে গড়ে তুলতে হবে। এতে করে দেশের মানুষের জন্য বাজার তৈরি হবে এবং বিদেশেও আমরা রপ্তানি করতে পারব।
প্রবাশীদের বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠালে আমাদের শ্রমিকদের কষ্টার্জিত অর্থ এজেন্টরা নিজেদের পকেটে ভরে। ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠালে তাদের টাকা নিরাপদ থাকে। হয়তো দুয়েক টাকা বেশি লাগতে পারে কিন্তু টাকাটা নিরাপদে থাকে। ব্যাংকে থাকলে প্রবাসীদের পরিবার প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যাংক থেকেই পাবে। বিভিন্ন দেশে যেখানে আমাদের শ্রমিক বেশি আছে সেখানে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের শাখা অথবা মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থা করা হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করবে। মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থা এসব দেশে করতে হবে।
বিদেশে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে সব মন্ত্রণালয়কে একযোগে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাসপোর্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শ্রমবাজার খুঁজবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয় সার্টিফিকেট দেবে আর প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় মানুষ পাঠাবে। এক্ষেত্রে আমাদের প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয়কে যৌথ ও মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

এসব কাজের জন্য প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিয়ে একটি কমিটি করে স্ব উদ্যোগে কাজ করতে হবে। তাহলে সব কাজ এক জায়গায় বসে সহজেই করা সম্ভব হবে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কেও সম্পৃক্ত করার পরামর্শ দেন তিনি।
বিদেশে দক্ষ কর্মী পাঠাতে প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে আরো স্কিল সংযোজনের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, যানবাহন চালক হিসেবে যে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে তার সঙ্গে ভারী যানবাহন চালনার বিষয়টিও যুক্ত করতে হবে। এতে করে আরো ব্যাপক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে।
দালালের খপ্পরে পড়ে সোনার হরিণ ধরতে ভিটেমাটি বিক্রি করে কেউ যেন প্রবাসের পথে পাড়ি না জমান সে ব্যাপারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এভাবে গেলে তারা বিপদে পড়ে। সরকারের পক্ষ থেকেই তাদের উদ্ধার করতে হয়। অথবা ভূমধ্যসাগরে তাদের সলিল সমাধি হয়। এটা দুর্ভাগ্যজনক। এভাবে না গিয়ে প্রয়োজনে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে যান। এখানে বিনা জামানতেও ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করা আছে। আমরা যে টিটিসি করে দিচ্ছি, তার মাধ্যমে ভবিষ্যতে আরো দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি সম্ভব হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ক্ষমতায় এসে গত সাড়ে ১৩ বছরে ৫৫টি নতুন শ্রমবাজার তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। বিএনপি-জামায়াত আমলে শ্রমবাজার কমে আসে। সেই সিন্ডিকেটের দুর্নীতি আর হয়রানি বন্ধ করে বিদেশগামী শ্রমিকদের হয়রানি লাঘবে আমরা সক্ষম হয়েছি। ২০০৫-০৬ সালে জোট সরকারের বিদেশে কর্মী পাঠানোর সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৫২ হাজার ৭০২ জন, আর রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ৪ দশমিক ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সেখানে আমরা ২০২১-২২ অর্থবছরে তা ৫ গুণ বাড়াতে সক্ষম হয়েছি। বিভিন্ন দেশে ৯ লাখ ৬৬ হাজার ৫০৫ জন কর্মী পাঠানো হয়েছে। ২১ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। কাজেই যারা এখন সমালোচনা করেন তাদেরই জবাবটা দিতে চাই কারণ, তাহলে আর বিভ্রান্তি ছড়াতে পারবে না। তাদেরও হিসাবটা জানা উচিত, তারা ক্ষমতায় থাকতে কী অবস্থা ছিল দেশে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়