মিল মালিকদের সঙ্গে সরকারের বৈঠক : লিটারে ১৪ টাকা কমল সয়াবিন তেলের দাম

আগের সংবাদ

এত আয়োজনেও কমছে না ডেঙ্গু

পরের সংবাদ

সংকট কাটিয়ে মালয়েশিয়া শ্রমবাজার উন্মুক্ত হোক

প্রকাশিত: জুলাই ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘদিন পর মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নতুন করে বাংলাদেশের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার খবরে আমরা আশান্বিত হয়েছিলাম। কিন্তু সিন্ডিকেটের দাপটে তা আবারো ঝুলে গেছে। গতকাল ভোরের কাগজে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়। গত মাসে ঢাকায় যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে শ্রমবাজার খোলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে জুনের মধ্যে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর বিষয়ে ঘোষণা দেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। কিন্তু ১ হাজার ৫২০টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে সমান অধিকার দেয়া নিয়ে চিঠি চালাচালি এবং সিন্ডিকেট করা না করা নিয়ে দীর্ঘসূত্রতায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে জট খুলছে না। সিন্ডিকেট ইস্যুতে দিন দিন জটিলতা বাড়ছে। বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো যেমন সিন্ডিকেটের বিরোধিতা করে আসছে; তেমনিভাবে আন্দোলন চলছে মালয়েশিয়ায়ও। বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার সংসদেও এ নিয়ে আলোচনার ঝড় বইছে। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম প্রধান খাত জনশক্তি রপ্তানি। আর মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো এখনো জনশক্তি রপ্তানির প্রধান টার্গেট। তবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে জনশক্তি রপ্তানির বাজার দিন দিন সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলতে সরকার নানাভাবে তৎপরতা চালিয়ে আসছে। সরকারিভাবে (জিটুজি পদ্ধতি) কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের ১০ প্রতিষ্ঠান (সিন্ডিকেট) দুর্নীতি করায় গত ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কর্মী নিয়োগ স্থগিত রয়েছে। মালয়েশিয়া শ্রমবাজার চালুর বিষয়ে বিভিন্ন পর্যায় থেকে কমপক্ষে পাঁচবার ইতিবাচক ঘোষণা এলেও ওই সিন্ডিকেটের জন্যই তা শেষ পর্যন্ত ভেস্তে গেছে। এর ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। একই সঙ্গে সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশি অনিয়মিত শ্রমিকদের বিরুদ্ধে নানা রকম হয়রানি শুরু হয়, যা আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে। মালয়েশিয়াতে আমাদের বিশাল এক শ্রম অভিবাসী কাজ করছেন। মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে অবশ্যই আগের ভুলত্রæটি মোকাবিলা করে এই শ্রমবাজারে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় করতে হবে। সেক্ষেত্রে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে সহনশীল ব্যয়ের মাধ্যমে কর্মী প্রেরণ করাটাই এখন বড় কর্তব্য। সিন্ডিকেট সমস্যাটি এখানে প্রকট। কেউ কেউ জনশক্তি নিয়োগের বিষয়টি জনশক্তি রপ্তানিকারকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা বলছেন। তবে অনেকে মনে করেন, অনিয়ম-প্রতারণা বাড়বে। এই অবস্থার মধ্যেই মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির বাজার সম্প্রসারণ ও স্বচ্ছতা বাড়ানোর জন্য অভিবাসন ও উন্নয়নবিষয়ক সংসদীয় ককাসের ২৪ দফা প্রস্তাব পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে এ খাতে দুর্নীতি ও সিন্ডিকেটের প্রভাব থাকবে না বলে সরকারের একটি মহল মনে করছে। কোনোভাবেই সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে যাতে ব্যয় বেড়ে না যায়, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে যাতে কেউ নতুন করে সিন্ডিকেট গড়ে তুলতে না পারে, সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়