ট্রেনে আসন সংখ্যা কম : ছাদে ও বগিতে গাদাগাদি ভ্রমণ, ভোগান্তি চরমে

আগের সংবাদ

জ্বালানি সাশ্রয়ে কৃচ্ছ্রতার কৌশল

পরের সংবাদ

মিল মালিকদের সঙ্গে সরকারের বৈঠক : লিটারে ১৪ টাকা কমল সয়াবিন তেলের দাম

প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটার প্রতি ১৪ টাকা কমিয়ে ১৮৫ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমে যাওয়ায় দেশের বাজারেও দাম কমানোর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
গতকাল রবিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে তেলের মিল ও পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে সরকার নতুন দাম নির্ধারণ করে দেয়। বৈঠক শেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে দেশীয় বাজারে দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরই আলোকে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে দাম পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। সোমবার থেকে এ মূল্য তালিকা কার্যকর হবে।
তিনি আরো জানান, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৬৬ টাকা, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৮৫ টাকা এবং পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৯১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সয়াবিন তেলের পাশাপাশি পামতেলের দামও ছয় টাকা কমানো হয়েছে। বর্তমানে পামতেলের নির্ধারিত দাম ১৫৪ টাকা। সেটির নতুন দাম ১৪৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দরপতন অব্যাহত থাকলে আগামীতেও এর সুফল ভোক্তারা পাবেন বলেও জানান সিনিয়র সচিব তপন কান্তি।
প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক বাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যে ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে চলতি বছরে ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ জুন পর্যন্ত তিন দফায় লিটারপ্রতি ৫৫ টাকা বাড়ানো হয়েছিল সয়াবিন তেলের দাম।
এরপর ২৬ জুন বোতলজাত সয়াবিন লিটারে ছয় টাকা এবং গতকাল ১৪ টাকা কমানোর ঘোষণা এলো।
গত ২৬ জুন তেলের দাম লিটারে ৬ টাকা কমিয়ে ১৯৯ টাকা করা হয়েছিল। তবে সরকার দাম কমানোর ঘোষণা দেয়ার পর দীর্ঘ দিন ধরেই আগের দাম লিটারে ২০৫ টাকা দরে কিনতে বাধ্য হয় ক্রেতারা। ব্যবসায়ীদের দাবি, এই তেল তাদের আগের কেনা, নতুন চালান না আসা পর্যন্ত দাম কমানো যাবে না।
অথচ যখন দাম বাড়ার সিদ্ধান্ত হয়, তখন সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়িয়ে দেয়া হয়।

করোনা পরি¯ি’তির উন্নতির পর থেকে ভোজ্যতেলের আন্তর্জাতিক বাজার অ¯ি’র হয়ে উঠে। এক বছরেরও কম সময়ে দাম দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার প্রভাব পড়ে দেশে দেশে।

২০১৯ সালে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের গড় মূল্য ছিল টনপ্রতি ৭৬৫ ডলার। ২০২০ সালে দাম ছিল ৮৩৮ ডলার এবং ২০২১ সালে সয়াবিনের টনপ্রতি দাম ছিল ১ হাজার ৩৮৫ ডলার। চলতি বছরের মার্চে বিশ্ববাজারে প্রতি টন সয়াবিন তেলের দাম হয় ১ হাজার ৯৫৬ ডলার। সে সময় প্রতি ডলার ৮৬ টাকা হিসাবে লিটারপ্রতি দর দাঁড়ায় ১৫৩ টাকা।

এক বছর আগেও বোতলজাত তেলের লিটার ছিল ১৩৪ টাকা করে। এ বছরের ৯ জুন বাজেট ঘোষণার দিন সব শেষ তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল। সেদিন লিটারে ৭ টাকা বাড়িয়ে বোতলজাত তেলের দাম ঠিক করা হয় লিটারে ২০৫ টাকা। খোলা সয়াবিন তেলের দাম ঠিক করা হয় ১৮৫ টাকা।

তেল নিয়ে উৎকণ্ঠার মধ্যে হঠাৎ করেই আন্তর্জাতিক বাজারে দাম নি¤œমুখী হতে থাকে। গত ব”হস্পতিবার এই দর নেমে আসে টনপ্রতি ১ হাজার ৩১৮ ডলারে। বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত ডলারের দরে (৯৩ টাকা ৯৫ পয়সা) লিটারপ্রতি দর দাঁড়ায় ১১৩ টাকা। এর সঙ্গে যোগ হবে জাহাজ ভাড়া, পরিশোধন, বোতলজাতকরণ, বাজারজাতকরণ, আনুষঙ্গিত ব্যয় ও মুনাফা।

তেল ব্যবসায়ীরা জানান, আন্তর্জতিক বাজারে দাম যতটা কমেছে, দেশের বাজারে ততটা কমানো সম্ভব নয় ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতনের কারণে। কয়েক মাস আগেও ডলারের দাম ৮৬ টাকা ধরে ঋণপত্র খোলা যেত। এখন সেটি ৯৪ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এই হিসাবে টাকার দরপতনের কারণে আমদানিতে ১০ শতাংশের বেশি দাম পড়ে যা”েছ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়