গাইবান্ধার নশরৎপুর : আড়াইশ পরিবার পাবে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর

আগের সংবাদ

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ : চ্যালেঞ্জের সামনে দেশের অর্থনীতি

পরের সংবাদ

দুর্গন্ধে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ : কুষ্টিয়ায় বিক্রি না হওয়ায় ফেলে দেয়া হচ্ছে চামড়া

প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নুর আলম দুলাল, কুষ্টিয়া থেকে : কুষ্টিয়ায় এবার ক্রয়কৃত পশুর চামড়া বিক্রি না হওয়ায় রাস্তায় ফেলে দিচ্ছেন আড়তে আসা চামড়া বিক্রেতারা। দিনে-রাতে চামড়াপট্টিতে ফেলে রাখা চামড়া পচে-দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।
জানা যায়, প্রতিবছর ঈদুল আজহায় ত্যাগের মহিমায় লাখ লাখ পশু তথা গরু, ছাগল, ভেড়া কুরবানি করা হয়। ধর্মীয় বিধান মোতাবেক কুরবানিকৃত এসব পশুর চামড়ার টাকা গরিবের হক। অথচ কয়েক বছর ধরে কুরবানির সময় পশুর চামড়া ন্যায্যমূল্যে বিক্রি না হওয়ায় গরিব-দুঃখী, অসহায় ও দুস্থরা তাদের প্রাপ্য হক থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অসাধু ও ‘শক্তিশালী’ সিন্ডিকেটের বেড়াজালে কয়েক বছর ধরে ঈদের আগেই কুরবানির পশুর চামড়ার দাম কমিয়ে মূল্য নির্ধারণ করা হয়ে আসছে। কুষ্টিয়ায় কুরবানির চামড়া ক্রয়-বিক্রয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা শহরের বাবরআলী গেটের চামড়াপট্টি। ঈদের দিন দুপুরের পর থেকে বিভিন্ন উপজেলা পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে চামড়া আসতে থাকে এখানে। সময় যত গড়ায় তত বেচাবিক্রি জমে ওঠে। শুরুতে দাম কিছুটা মিললেও বিকাল যত গড়ায় দাম তত পড়তে থাকে। অধিকাংশ আড়তদার ছোট আকারের গরু ও ছাগলের চামড়া কিনতে অনীহা দেখান। ছোট আকারের গরুর চামড়া কেউ বিক্রি করতে আনলে ১০০-১৫০ টাকা দামও বলছেন আড়তদাররা। আর ছাগলের চামড়া ১০-৩০ টাকার বেশি বিক্রি হয়নি এ আড়তে।
এদিকে ঈদের দিন রাতে প্রায় ২ হাজার পিস ছাগলের চামড়া বিক্রি করার জন্য কুষ্টিয়ার মোকামে আনেন পার্শ্ববর্তী পাবনা জেলার এক মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী। কিন্তু মূল্য না পাওয়ায় রাস্তার ওপরই সেই চামড়া ফেলে চলে যান। প্রক্রিয়াজাত না করার কারণে একদিন পর সেই চামড়া থেকে তীব্র দুর্গন্ধ বের হয়। এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে ঢাকার বাইরে লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৪০ থেকে ৪৪ টাকা নির্ধারণ করে। ছাগলের চামড়া প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ টাকা, বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। তবে কুষ্টিয়ার বাজারে চামড়া বেচা-বিক্রির ক্ষেত্রে বেঁধে দেয়া এ মূল্যের কোনো নিয়ম-নীতি মানা হয়নি বলে জানান চামড়া বিক্রি করতে আসা মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। তবে গত বছরের তুলনায় কুষ্টিয়ায় বেড়েছে কুরবানির পশুর চামড়া।
ঈদের দিন দুপুরে চামড়াপট্টি এলাকায় বড় আকারের গরুর চামড়ার দাম ছিল ৮০০ থেকে ৯৫০ টাকা। গত বছরের তুলনায় বড় গরুর চামড়ার দাম কিছুটা বাড়লেও গত ৪ বছর ক্ষতি হওয়ায় এবার মৌসুমি চামড়া ক্রেতা ছিল খুবই কম। সেভাবে দেখা যায়নি অলিতে-গলিতে চামড়া কেনাকাটা। দাম না পাওয়ার অভিজ্ঞতায় কুরবানিদাতারা মাদ্রাসা ও এতিমখানায় বেশি পরিমাণ দান করেছেন। তবে একাধিক মাদ্রাসার অভিযোগ, ঈদের দিন রাত পর্যন্ত অসাধু সিন্ডিকেটের কারণে গত তিন বছরের মতো এবারো কম মূল্যে চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে তাদের। একাধিক মাদ্রাসা ও এতিমখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, গত বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় এবারো বঞ্চিত।
শহরের ঐতিহ্যবাহী মোমতাজুল উলুম মাদ্রাসার প্রধান মুফতি আরিফুজ্জামান বলেন, গত বছর গরুর চামড়া বিক্রি করেছি ৮০০ থেকে ৯৫০ টাকায় আর ছাগলের চামড়া ৩০-৪০ টাকা। কুষ্টিয়া চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনিস কোরাইশি জানান, চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার লোকবলের অভাব, লবণের মূল্য বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে ছোট গরু ও ছাগলের চামড়ার প্রতি ব্যবসায়ীদের আগ্রহ কম।
অন্যদিকে তার অভিযোগ, বিগত বছরগুলোর মতো ট্যানারি মালিকদের কাছে তাদের মূলধন বকেয়া আটকে আছে, আর এ কারণে নগদ টাকা দিয়ে চামড়া ক্রয় করতে তাদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়