বরিস জনসন : বিয়ের পার্টির পরিকল্পনা বদল

আগের সংবাদ

রপ্তানিতে বিরূপ প্রভাবের শঙ্কা : ইউরোপে মন্দার প্রভাব পড়বে রপ্তানি আয়ে, বিদেশি ক্রেতা ধরে রাখার তাগিদ অর্থনীতিবিদদের

পরের সংবাদ

আত্রাইয়ে খাল খননে খুলেছে আর্থসামাজিক উন্নয়নের দ্বার

প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মো. আব্দুল মজিদ মল্লিক, আত্রাই (নওগাঁ) থেকে : উত্তরের খাদ্যভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত নওগাঁ জেলায় ধান ও চাল উৎপাদনের পাশাপাশি মাছের ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত আত্রাই উপজেলা। বিল আর খাল বেষ্টিত এই উপজেলার অধিকাংশ মানুষই নদী ও খাল-বিল থেকে মাছ আহরণ করে এবং পুকুরে মাছ চাষ করে জীবন নির্বাহ করে। মাছের উৎপাদন ও রবিশস্য চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আত্রাই উপজেলার তিনটি খাল পুনঃখননে আর্থসামাজিক উন্নয়নের নতুন দুয়ার উন্মুক্ত হতে চলেছে। রবিশস্য, মৎস্যচাষ, হাঁস পালন, সবজি চাষসহ বিভিন্নভাবে উপকৃত হতে যাচ্ছে প্রায় ১০ হাজার মানুষ। খালে জমে থাকা পানি সেচের মাধ্যমে কৃষিকাজে ব্যবহারের মাধ্যমে দ্বিগুণ পরিমাণ ফসল ও মাছ উৎপাদন করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবেন এই অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ।
উপজেলার তিনটি খালে ১২০০ সদস্য বিশিষ্ট গ্রামীণ পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির অধীনে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে ২৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ১৯ কিমি দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট খালটির খনন কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। উপকারভোগীরা সুফলও পেতে শুরু করেছে। এর ফলে রবিশস্যসহ বছরে তিনবার ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে এ এলাকায়। ২০২১-২২ অর্থবছরে আত্রাই উপজেলার বুড়িগঞ্জ, ইসলামগাথী, মারিয়া, কাশিয়াবাড়ি, চকতেমুখ খালের পুনঃখননের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। খালটি আত্রাই নদীর শাখা গৌড় নদী থেকে শুরু হয়ে মাঠের মধ্য দিয়ে নাগর নদীর সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। খাল খননের পূর্বে বন্যার সময় ভরা নাগর নদীর পানিতে মাঠের ফসল নিমজ্জিত হয়ে থাকত। এর কারণে বছরে বোরো ধান উৎপাদনেও ব্যাঘাত ঘটত। কিন্তু বর্তমানে খালটি পুনঃখনন হওয়ায় কৃষকের ভাগ্য ফিরেছে। গৌড় নদী দিয়ে পানি সরাসরি নিষ্কাশন হওয়ায় ফসল উৎপাদনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় উপকারভোগীরা। উপজেলার ইসলামগাথী গ্রামের চাষি মুজিবর রহমান, মকবুল হোসেনসহ অনেকেই বলেন, পূর্বে জমিতে ধান চাষে সেচ বাবদ ১৫শ থেকে ১৬শ টাকা খরচ করতে হতো চাষিদের। কিন্তু বর্তমানে তা আর করতে হবে না। তাই ধান চাষে তাদের খরচও কম হবে। এতে সব থেকে বেশি উপকার পাবেন চাষিরা। কৃষি কাজের সুবিধার পাশাপাশি গৃহবধূরা হাঁসও পালন করতে পারবেন। এছাড়াও মাছচাষ, সবজি উৎপাদনসহ বিভিন্ন কাজে খালটি ব্যবহার করে গ্রামীণ অর্থনৈতিক উন্নয়নে অনেক ভূমিকা রাখবে খালের এই পুনঃখনন।
আত্রাই এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, আত্রাই নদীর বুড়িগঞ্জগ্রাম হয়ে পাচুপুর বিহারীপুর, শফিকপুর, বাঁশবাড়িয়া, গুড়নাই, জগদশ, নৈদিঘি, পতিসর, কাশিয়াবাড়ি, তেঁতুলিয়া পর্যন্ত এবং বরশাতাগ্রাম হয়ে নন্দীগ্রাম, ইসলামগাথী, খরসতী হয়ে আত্রাই পতিসর রাস্তা পর্যন্ত খালটির পুনঃখনন কাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। খাল পুনঃখননের সুফল ভোগ করতে শুরু করেছেন উপকারভোগীরা। তিনটি খাল খননের ফলে মাল্টিডাইমেশন উপকার পাচ্ছেন তারা। তিনটি খাল থেকে প্রায় ১৮৭৬ হেক্টর জমিতে সারা বছর ফসল ফলানোর সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। যার উপকারভোগীর সংখ্যা ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার। যারা এ বছর অন্যান্য আবাদের পাশাপাশি রবিশস্য উৎপাদনের সম্ভাবনা দেখছেন। খালটি পুনঃখননের ফলে এই উপজেলায় কৃষি খাতে ব্যাপক সফলতার আশা করছেন মানুষ। নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন, এই এলাকার বিশেষ ফসল ধান। সবসময় এই অঞ্চলের মানুষ যেন জমি সেচ দিতে পারে মূলত সেই লক্ষ্যেই এই খালগুলো পুনঃখনন করার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। বিগত দিনে এই অঞ্চলে একটি ফসলও ভালোভাবে উৎপাদিত হতো না। কিন্তু এই খালগুলো খননের ফলে এই অঞ্চলের মানুষ কৃষি কাজে ব্যাপক সফলতা বয়ে আনবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়