ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ : পরীমনির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী নাসিরের ফের মামলা

আগের সংবাদ

কে কোথায় কুরবানি দিচ্ছেন

পরের সংবাদ

এমপিওভুক্তি বাড়ছে : শিক্ষার গুণগত মানও বাড়াতে হবে

প্রকাশিত: জুলাই ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুলাই ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি বাড়লেও শৃঙ্খলা ফেরেনি শিক্ষক-কর্মচারী এমপিওভুক্তিতে। মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। এমতাবস্থায় নতুন করে দেশের আরো ২ হাজার ৭১৬ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আওতায় ২ হাজার ৫১টি স্কুল ও কলেজ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে ৬৬৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির দাবিতে বহুদিন ধরে শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলন করে আসছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদের আগে শিক্ষকদের এ উপহার দেয়াতে স্বাভাবিকভাবে তারা আনন্দিত। জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ৩০ হাজার পাঁচশ’র মতো এমপিওভুক্তি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে পাঁচ লাখের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী এমপিও অর্থাৎ সরকার থেকে পূর্ণ বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। এর মধ্যে যারা অবসরে যাচ্ছেন তাদের শূন্য পদে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও দিতে হয়। এই এমপিওভুক্তি নিয়েই শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে দীর্ঘদিন ধরে দুর্নীতি, বিশৃঙ্খলার অভিযোগ পুরনো। এমপিও মূলত শিক্ষকদের বেতন-ভাতার বিষয়। তাতে শিক্ষকরা পাঠদানে আরো মনোযোগী হওয়ার প্রণোদনা পান কি-না, শিক্ষার মান উন্নয়ন হয় কি-না সে নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। আমাদের দেশে গত কয়েক দশকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে, শিক্ষার হারও বেড়েছে এবং একই সঙ্গে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাও বেড়েছে। আনুষ্ঠানিক শিক্ষাধারার সঙ্গে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষাধারাও প্রাথমিক শিক্ষার অগ্রগতি সাধনে এগিয়ে এসেছে। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে বলা চলে, দেশে শিক্ষার পরিমাণগত বিকাশ অনেকটা হয়েছে বটে, তবে গুণগত উন্নয়ন তেমন ঘটেনি। উল্টো জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রায় নিয়মিত বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির দাবিতে দফায় দফায় আন্দোলন, ধর্মঘটসহ আমরণ অনশনে নামেন, যা কাক্সিক্ষত নয় কোনো অবস্থাতেই। শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন ও শিক্ষা উপকরণ দেয়া হয় সত্য। কিন্তু শিক্ষকের মানোন্নয়ন ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়। সে জন্য প্রয়োজন প্রগতিশীল, মেধাবী ও সৃজনশীল ব্যক্তিদের শিক্ষকতায় আকৃষ্ট করা। শিক্ষককে জ্ঞানসমৃদ্ধ, কুশলী ও দক্ষ রূপে গড়ে তোলার জন্য শিক্ষকতা জীবনের প্রথম থেকেই প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও গবেষণাকর্মের প্রয়োজনীয় সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। গত দুই দশকে শিক্ষার গুণগত মানের নিম্নমুখী ধারা দেশবাসীকে ভাবিয়ে তুলেছে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা কিছুদিন আগে পর্যন্ত গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির ওপর ন্যস্ত ছিল। অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্থানীয় সংসদ সদস্য বা তার মনোনীত ব্যক্তিরাই ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। যদিও এখন আর তা আইনসিদ্ধ নয়। শিক্ষা ক্ষেত্রে সব অনিয়ম দুর্নীতি কঠোর হস্তে দমন করা জরুরি। শিক্ষার গুণগত মানের ক্রমাবনতি ঠেকাতে শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতিতে রাজনৈতিক বিবেচনা নয়, বরং মেধা ও যোগ্যতাকে গুরুত্ব দিতে হবে। গবেষণা ও শিক্ষক প্রশিক্ষণে বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে। অন্যথায় দেশের শিক্ষার মানের ক্রমাবনতি ঠেকানো যাবে না। রাতারাতি এসব গড়ে তোলাও সম্ভব নয়। ঢালাওভাবে এমপিওভুক্তি সমর্থনযোগ্য নয়। এ নিয়ে রাজনীতিও কাম্য নয় কোনো পক্ষের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়