প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৩০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
দারিদ্র্যের দিক দিয়ে শীর্ষ জেলা কুড়িগ্রাম। সরকারি তথ্যমতে জেলার দারিদ্র্যের হার প্রায় ৭০ শতাংশের বেশি। যার প্রধান কারণ নদীভাঙনে বসতভিটা ও জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া। কুড়িগ্রাম জেলার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত বড় নদী ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার, ফুলকুমার, জিঞ্জিরাম ছাড়াও প্রায় ১৬টি নদনদী রয়েছে যার প্রায় প্রতিটি ভাঙনপ্রবণ, যা শুধু বর্ষাকালে নয় শুকনো মৌসুমেও ভাঙে। ফলে লোকজন বসতভিটাসহ আবাদি জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়, যার পর্যাপ্ত পরিকল্পনা ও দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার ব্যবস্থা না থাকায় বাস্তুহারা মানুষ মাথা গোঁজার ঠাঁই হিসেবে সড়কের পাশে, নতুন চর ও ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় কোনোরকমে দিনাতিপাত করে যাচ্ছে। ২০২০ সালের তথ্য মতে, ওই বছরে প্রায় ৬৯৯৫টি পরিবার নদী ভাঙনের ফলে বাস্তুহারা হয়েছে, ২০২১ সালেও প্রায় একই রকম। ২০২২ সালেও বন্যা আক্রান্ত কয়েক লাখ মানুষ।
বৃহৎ নদীর তীব্র ভাঙন রোধে সরকারি-বেসরকারি বৃহত্তর অবকাঠামো নির্মাণের বিকল্প নেই। ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ সালের পরিকল্পনায় এসবের মধ্যে শুধু তিস্তা নদীর অন্তর্ভুক্তি রয়েছে মাত্র। ফলে প্রতি বছর নদী ভাঙনের শিকার হাজার হাজার মানুষ সহায় সম্পদ হারিয়ে অসহায় জীবনযাপন করে। কেউ রাস্তার পাশে, কেউ শহরের কানাগলিতে, কেউবা দিশাহারা হয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। পুনর্বাসন প্রক্রিয়া হিসেবে গুচ্ছগ্রাম ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ হলেও তা সত্যিকার অর্থে বসবাস অনুপযোগী। সঠিক গবেষণা ও পরিকল্পনার অভাবে অনেক সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে বাস করা দুরূহ হয়ে পড়ে। মানুষ সহায় সম্বল ও কর্ম হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়ে। এভাবে দ্রুত বেড়ে চলেছে কুড়িগ্রাম জেলার দারিদ্র্যের হার।
এসব নদ-নদীর ভাঙন প্রতিরোধ ও দারিদ্র্য দূরীকরণের স্থায়ী প্রতিকার হিসেবে প্রয়োজন সমন্বিত ও টেকসই পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন। টেকসই নদী শাসনের সঠিক কাজ হিসেবে বোল্ডার বাঁধ ও পরিকল্পিত বেড়িবাঁধের বিকল্প নেই। তাই বৃহৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দরকার সরকারের আন্তরিকতা, অর্থায়ন ও বাস্তবায়ন। তবেই কুড়িগ্রাম জেলা নদীভাঙন থেকে রেহাই পাবে এবং দারিদ্র্য কমে যাবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।