বিশেষ অধিকার ক্ষুণ্ন : এমপি হারুনের নোটিস নাকচ করলেন স্পিকার

আগের সংবাদ

ঢাকার তৃণমূলে আ.লীগের পদ পেলেন ৫৪ হাজার কর্মী : থানা-ওয়ার্ডে পদ পাচ্ছেন আরো সাড়ে ১২ হাজার > সংগঠন গোছাতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন নগর নেতারা

পরের সংবাদ

টঙ্গিবাড়ীতে তিন স্থানে সড়ক সংস্কারে অনিয়ম

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৯, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

মোহাম্মদ সেলিম, মুন্সীগঞ্জ থেকে : মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার আব্দুল্লাপুর ইউনিয়নের প্রধান সড়কের ৩টি স্থানে পৃথক সংস্কারকাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, আব্দুল্লাপুর বাজারে যাওয়ার পথে সেতুর কাছ থেকে পানাম পোলঘাটা পর্যন্ত, আব্দুল্লাপুর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের পর নাসিরের বাড়ি থেকে পুলিন্দারপাড় বটতলা বিন্দুসার বিবিআই কলোনি পর্যন্ত এবং আব্দুল্লাপুর ইউনিয়নের পশ্চিমের বটতলা বিন্দুসার কালভার্ট থেকে রামিশা হিমাগার পর্যন্ত পৃথকভাবে সংস্কারকাজ চলছে। এ সড়কের সংস্কারকাজে নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। একাধিকবার গ্রামবাসী ও আব্দুল্লাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বাধার মুখে ঠিকাদার নি¤œমানের সামগ্রী বদলাতে বাধ্য হন। তারপরও সুযোগ বুঝে ঠিকাদার দুর্নীতি ও অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নি¤œমানের ইট দিয়ে কাজ করায় গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এ সড়কের প্রধান ঠিকাদার এ কাজের অংশটি আরেকজনের কাছে সাব-ঠিকাদারি দিয়েছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। এভাবে লাভের অংশ ভাগাভাগির কারণে নানা রকমের অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হচ্ছে।
এদিকে সংস্কারকাজ করা হলেও সড়কে পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি বলে গ্রামবাসী অভিযোগ করেছেন। সড়কের দুপাশে অনেক বসতি রয়েছে। বাড়িঘর আর রাস্তার উচ্চতা প্রায় সমান সমান। আবার কোথাও কোথাও বাড়িঘর উঁচুতে। আর রাস্তা তা থেকে নিচুতে। তাতে সামান্য বৃষ্টি হলেই বাড়িঘরের পানি উপচে রাস্তায় জমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে এ পিচের রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। টঙ্গিবাড়ী এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, আব্দুল্লাপুর ইউনিয়নের পশ্চিমের বটতলা বিন্দুসার কালভার্ট থেকে রামিশা কোল্ড স্টোরেজ পর্যন্ত মোট ৩২০ মিটারের কাজ চলমান রয়েছে। পানাম পোলঘাট থেকে ৩৬০ মিটার ও আব্দুল্লাপুর ইউপি কার্যালয় পর্যন্ত ৩৭৯ মিটার রাস্তা সংস্কার করা হচ্ছে। এই তিন কাজের ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৪ লাখ ৭৭ হাজার ৬২০ টাকা। এ কাজটি বাস্তবায়নে রয়েছেন মেসার্স আবিদ এন্টারপ্রাইজ নামের এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সংস্কারকাজে যে মালামাল ব্যবহার করা হয়েছে তা সম্পূর্ণভাবেই ব্যবহারের অযোগ্য। কার্পেটিং সড়ক সংস্কারে নি¤œমানের ইট ও ইটের খোয়া ফেলা হয়েছে। তাছাড়া অনেক জায়গায় সমানভাবে বালু না ফেলে ইটের খোয়া ফেলা হয়েছে। ইট ও খোয়া খুবই নি¤œমানের। এই সড়কে পা রাখলেই ভেঙে যাচ্ছে। এমন মনগড়া কাজে এ সড়ক কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে এমন প্রশ্ন জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে।
স্থানীয় সত্তার মিয়া জানান, রোলারের আগে যে ইটগুলো দিয়ে কাজ করা হয়েছে এবং যে খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে তা সঠিক হয়নি। কাজের সময় আমরা কয়েকজন বেশ কয়েকবার বলেছিলাম কাজটি সঠিকভাবে হয়নি। কিন্তু ঠিকাদার আমাদের কথা শুনেননি। তাছাড়া বিন্দুসার বটতলায় ছোট একটি কালভার্ট রয়েছে। কালভার্টটির একাংশ অ্যাপ্রোচ সড়কের ৯০ শতাংশ জায়গা ইতোমধ্যে ধসে গেছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরেও তারা পাত্তা না দিয়ে চলে গেছেন। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুরো কার্পেটিংয়ের সড়কটিতে কোনো প্রকার ভাঙা কিংবা খানাখন্দ রাস্তা ছিল না। তারা বলেন, আমাদের আগের সড়কটি খুব ভালো ছিল। সম্পূর্ণ ভালো রাস্তাটির পিচ তুলে সংস্কার করা হচ্ছে। তাতে এখানে সরকারি অর্থের অপচয় হচ্ছে বলে তারা দাবি করেন। আর এখন সংস্কারকাজে আবার নি¤œমানের সামগ্রীর ব্যবহার করা হচ্ছে। আব্দুল্লাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আকরাম হোসেন বলেন, এখানে যতটুকু সংস্কারকাজ হাতে নেয়া হয়েছে তাতে নি¤œমানের সামগ্রীর ব্যবহার করা হয়েছে। আব্দুল্লাপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন বলেন, ভালো রাস্তা কেটে সংস্কার করা বৃহত্তর স্বার্থ ছাড়া আর কিছু নয়, যা সংস্কার করা হচ্ছে তাও আবার নি¤œমানের সামগ্রী।
আব্দুল্লাপুর ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বলেন, আমি একাধিবার গিয়ে নি¤œমানের কাজে বাধা দিয়েছি। কিন্তু আমি চলে গেলেই ঠিকাদার নি¤œমানের কাজ করতে থাকে। ঠিকাদারকে কত আর পাহাড়া দিয়ে রাখা যায়। মেসার্স আবিদ এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর মো. হানিফ জানান, সংস্কারকাজে কোনো প্রকার অনিয়ম বা নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি। শিডিউলে যেভাবে আছে আমি সেভাবেই কাজ করেছি।
টঙ্গিবাড়ী এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী শাহ মোয়াজ্জেম রাজু জানান, আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের যে রাস্তাগুলোর সংস্কারকাজ করা হচ্ছে, সে রাস্তাগুলো অনেক আগের। তাছাড়া রাস্তাগুলোর দুপাশ অনেক ঢালু। তাই ওই রাস্তাগুলো ভেঙে পুনরায় সংস্কার করা হচ্ছে যান চলাচলে উপযোগী করার জন্য। আর রাস্তার কাজে কোনো প্রকার নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার হয়ে থাকলে আমরা বিষয়টি দেখে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়