র‌্যাব মহাপরিচালক : নাশকতার তথ্য নেই তবুও সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছি

আগের সংবাদ

বাংলাদেশের গর্ব, বিশ্বের বিস্ময় : জাতীয়-আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে যেভাবে ডানা মেলল স্বপ্নের পদ্মা

পরের সংবাদ

পানি কমলেও এখনো বিপদসীমার উপরে : অপ্রতুল ত্রাণ, নিদারুণ কষ্টে বানভাসিরা

প্রকাশিত: জুন ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : কুড়িগ্রামে নদ নদীর পানি হ্রাস পেতে শুরু করায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি এখনো বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে চরাঞ্চল ও নি¤œাঞ্চলের লাখো ঘরবাড়ি। এ অবস্থায় নিদারুণ কষ্টের মুখে পড়েছে বানভাসী মানুষজন। নেত্রকোনা জেলার সব উপজেলাতেই বন্যার পানি কমছে ধীরগতিতে। তবে কংস ও ধনু নদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়েই বইছে। কিশোরগঞ্জের ১০ উপজেলা প্লাবিত হয়ে লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তারা খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ১৫৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১৩ হাজার বানভাসী আশ্রয় নিয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সরাইল-অরুয়াইল সড়ক। সুনামগঞ্জে ধীরে কমছে বানের পানি। গতকাল বৃহস্পতিবার দুর্গত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণ করেছেন পুলিশের আইজি ও র‌্যাব মহাপরিচালক। এ সম্পর্কে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট-
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি, দুর্ভোগ কমেনি বানভাসীদের : কুড়িগ্রামে নদনদীর পানি হ্রাস পেতে শুরু করায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে চরাঞ্চল ও নি¤œাঞ্চলের লাখো ঘরবাড়ি। এ অবস্থায় নিদারুণ কষ্টের মুখে পড়েছে বানভাসী মানুষজন। দীর্ঘ সময় ধরে পানিবন্দি থাকায় শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে বন্যাকবলিত এলাকায়। এদিকে চারণভূমি তলিয়ে থাকায় ও গো-খাদ্য নষ্ট হয়ে যাওয়ায় নিজেদের খাবারের পাশাপাশি গবাদিপশু নিয়েও বিপাকে পড়েছেন বানভাসী মানুষরা। এবারের বন্যায় জেলার ৫০টি ইউনিয়নের ২৮৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। সরকারি হিসাবে এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে সোয়া লাখ মানুষ। বন্যাকবলিত এলাকায় ২৯৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৩০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এখনো বন্ধ রয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে জেলায় ১৪ হাজার হেক্টর জমির চিনা, পটোল, মরিচসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেত ও পাট এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বন্যার পানিতে নিমজ্জিত থাকায় তা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুর রশিদ জেলায় ১৪ হাজার হেক্টর

জমির ফসল তলিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কালিপদ রায় জানান, জেলায় ১ হাজার ১৫৭টি মাছের খামার ভেসে যায়। এতে ১ হাজার ১৬৩ জন মাছ চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হন। ক্ষতির পরিমাণ ১৮০ কোটি টাকা।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বন্যা কবলিতদের জন্য ৫৩৮ টন চাল, ৩৬ লাখ ৫০ হাজার নগদ টাকা, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ১৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকার শিশুখাদ্য ও ১৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা গো-খাদ্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিতরণ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
নেত্রকোনায় পানি কমছে ধীরগতিতে, রেল চলাচল স্বাভাবিক :
জেলার সব উপজেলাতেই বন্যার পানি কমছে ধীরগতিতে। তবে কংস ও ধনু নদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়েই বইছে। এদিকে বন্যাকবলিত জেলার কেন্দুয়া উপজেলার উপজেলার আশুজিয়া ইউনিয়নের হাসুয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আপৎকালীন আশ্রমে অবস্থান করা একই গ্রামের কলেজ মিয়ার স্ত্রী নীলুফা (৪০) স্ট্রোক করে গতকাল মারা যান।
এদিকে ঢাকা-মোহনগঞ্জ রেলপথে বারহাট্টায় ৩৪ নাম্বার ব্রিজ মেরামতের ফলে পাঁচদিন বন্ধ থাকার পর পুনরায় ঢাকা-ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা-মোহনগঞ্জ রেলপথে আন্তঃনগর ও লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। জেলার ৭৭টি ইউনিয়নে পানিবন্দি রয়েছে ৮২ হাজার ২২০টি পরিবারের মোট ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৮০০ মানুষ। অন্যদিকে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহনলাল সৈকত জানান,পানি কমছে। গতকাল কলমাকান্দা উব্ধাখালী পয়েন্টে পানি হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানান, এপর্যন্ত নগদ ১১ লাখ টাকা প্রদানসহ জেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত আছে। সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে বন্যার্ত সব মানুষের কাছে সরকারি সাহায্য পৌঁছানোর।
কিশোরগঞ্জে ১০ উপজেলা প্লাবিত হয়ে লাখো মানুষ পানিবন্দি : কিশোরগঞ্জের ১০ উপজেলা প্লাবিত হয়ে লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তারা খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। ১৫৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১৩ হাজার বানভাসী আশ্রয় নিয়েছেন। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে শুকনো খাবার ও চাল-ডাল, তেল পেলেও গবাদিপশুর খাবার সংগ্রহ করতে পারছে না তারা। এদিকে কিশোরগঞ্জের ধনু ও কালনী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে দুদিন স্থিতিশীল থাকার পর বুধবার রাত থেকে পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে।
সরজমিন গিয়ে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাত থেকে কিশোরগঞ্জে বন্যার পানি বাড়তে শুরু করে। এসব এলাকায় অন্তত ৬ ফুট পানি বেড়েছে। এতে জেলার ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম, নিকলী, করিমগঞ্জ, তাড়াইল, কটিয়াদী, কুরিয়ারচর ও ভৈরব উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১ লাখ ৭ হাজার মানুষ। অনেকেই আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। আর ১৫৪টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১৩ হাজার বানভাসী আশ্রয় নিয়েছেন। তারা খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবযাপন করছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে বন্যার্তদের মাঝে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পুরোদমে চলছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও বানভাসীদের সহায়তায় সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। ব্যক্তি উদ্যোগেও অনেকেই ত্রাণ নিয়ে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, এ পর্যন্ত ১৭০ টন চাল, নগদ ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও দুই হাজার চারশ শুকনো খাবারেরর প্যাকেট বরাদ্দ করা হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে বলে তিনি জানান।
জামালপুরে কমছে যমুনা নদীর পানি : জামালপুরে কমতে শুরু করেছে যমুনা নদীর পানি। তবে ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক আব্দুল মান্নান জানান, দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে গত ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে যমুনা নদীর পানি ১৪ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
জামালপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন জানান, জেলার ৬ উপজেলার ৩৬টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এতে ১৬৫টি গ্রামের ৮৫ হাজার ৭৩২ জন বাসিন্দা বন্যাকবলিত হয়েছে। জেলার ৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ৫৮২ জন। এবারের বন্যায় ২১৫ মিটার বাঁধ, ৮৫টি মৎস্য খামার ও ৩ হাজার ০৫০ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্ধ রয়েছে ১২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান।
গতকাল বৃহস্পতিবার জেলার ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলি ইউনিয়নের চিনাডুলি এলাকায় সরজমিন গিয়ে দেখা যায়- বন্যার পানি কমতে থাকলেও এখনো বাড়িঘর তলিয়ে আছে। সেই তলিয়ে থাকা ঘরবাড়িতে কোনো রকম আশ্রয় নিয়ে আছে সেখানকার বাসিন্দারা।
সেখানকার গৃহিণী জবেদা বেগম বলেন, আমার গ্রামটা নদীর কাছে থাকায় এ এলাকায় পানি ঢোকে সবার আগে। আমরা কষ্টও করি সবার থেকে বেশি। এখন পানি কমতে শুরু করেছে। একই এলাকার কালাম মিয়া বলেন,আমরা কিছু ত্রাণ পাইছি। কিন্তু এই কয়ডা ত্রাণে কয়দিন চলে? তাই আমরা যারা বন্যা এলাকায় আছি তাগর জন্য অন্য এলাকায় কিছু কাম কাইজের ব্যবস্থা করলে ভালো হইত। তাইলে আমরা বন্যার কয়ডা দিন চলবার পাইতাম।
চিনাডুলি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম বলেন, প্রতিবারের বন্যায় আমার ইউনিয়ন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমার এলাকার জনগন সবচেয়ে বেশি কষ্ট করে। উপজেলা পরিষদ থেকে আমার ইউনিয়নের জন্য কিছু ত্রাণ দেয়া হয়েছে। এই ত্রাণ চাহিদার তুলনায় খুবই কম। তাই আমার আরো ত্রাণ প্রয়োজন।
তবে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন জানান, এ পর্যন্ত বন্যার্তদের মাঝে ১১৬.১০০ টন চাল ও ৯৯০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ধীরে ধীরে সব বন্যার্তকে আরো ত্রাণ বিতরণ করা হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ জানান, যমুনা নদীর পানি আর বাড়ার আশঙ্কা নেই। এভাবে যমুনা নদীর পানি আরো কয়েকদিন কমতে থাকবে। এতে করে ৪-৫ দিনের মধ্যে বন্যার পানি একদম নেমে যাবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পানিতে তলিয়ে সরাইল-অরুয়াইল সড়ক : বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল-অরুয়াাইল সড়ক। এই সড়কটির ৩টি পয়েন্ট পানিতে ডুবে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে। এতে প্রভাব পড়ছে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ জনজীবনে।
এব্রুকিা ঘুরে দেখা গেছে, ৩টি পয়েন্টে সড়কের উপর দিয়ে প্রবল স্রোতে প্রবাহিত হচ্ছে বন্যার পানি। কোথাও কোথাও বুঝবার উপায় নেই এটি সড়ক নাকি হাওর। তীব্র স্রোতের কারণে উভয় পাশ দিয়ে ভাঙছে সড়ক। ভাঙন অব্যাহত থাকলে সড়কটি হাওরে বিলীন হয়ে যেতে পারে। সরাইল উপজেলার চুন্টা গ্রামের মোড়ে সড়কটির একটি অংশ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। পানি উপচে সড়ক-হাওর একাকার হয়ে যাওয়ায় এখন সড়ক চেনা দায়।
পাকশিমুল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কাওছার হোসেন বলেন, গত দুদিন ধরে পানি বাড়ছে। এভাবে বাড়তে থাকলে সরাইল উপজেলা সদরের সঙ্গে পাকশিমুল ও অরুয়াাইল ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পানি উন্নয়নন বোর্ডের তথ্য মতে, তিতাস নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ অবস্থায় প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বিশেষ করে নাসিরনগর,সরাইল ও নবীনগর এলাকার নি¤œাঞ্চল বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে।
এলজিইডির সরাইল উপজেলা প্রকৌশলী নিলুফা ইয়াছমিন বলেন, সড়কের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আমরা ওয়াকিবহাল। আমরা এটি নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করছি। প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর পর কর্তৃপক্ষ বন্যা পরবর্তীতে সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেবে।
হাওরবেষ্টিত সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ও পাকশিমুল ইউনিয়নের সঙ্গে সরাইল উপজেলা সদরের যোগাযোগ স্থাপন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে ২০১০ সালে সড়কটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর থেকে প্রতি বছর বর্ষা এলেই সড়কটি ভেঙে যায়। তবে এবারের বন্যায় ভয়াবহ ভাঙন শুরু হওয়ায় সককটির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত এলাকাবাসী।
সুনামগঞ্জে দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে আইজিপি ও র‌্যাব মহাপরিচালক : হাওর বেষ্টিত ভাটির জনপদ সুনামগঞ্জে বানের পানি কমছে ধীর গতিতে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সুনামগঞ্জ জেলা শহরসহ কয়েকটি উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ এখনো রয়েছেন পানিবন্দি।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সুনামগঞ্জের বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন ও বানভাসিদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করেছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ পিপিএম (বার) ও র‌্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে এগারোটায় তিনি র‌্যাবের একটি হেলিকপ্টারে করে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ফুটবল খেলার মাঠে অবতরণ করেন। এরপর তিনি বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্যাশ্রয় কেন্দ্রে দুর্গতের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন। পরে স্পিডবোট যোগে তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বিভিন্ন বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- পুলিশ হেড কোয়ার্টারের ডিআইজি (লজিস্টিক) তৌফিক মাহবুব চৌধুরী, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহাম্মেদ পিপিএম (বার), অতিরিক্ত ডিআইজি বিপ্লব বিজয় সরকার, সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার (পদোনতিপ্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. মিজানুর রহমান বিপিএম, নৌ পুলিশ সিলেট অঞ্চলের পুলিশ সুপার শম্পা ইয়াসমিন, সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের ইন সাভির্স ট্রেনিং সেন্টারের পুলিশ সুপার নিকুলিন চাকমা, অরিক্ত সুপার জয়নাল আবেদীন, সুমন মিয়া, সহকারী পুলিশ সুপার তাহিরপুর সার্কেল শাহিদুর রহমান, তাহিরপুর থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ তরফদার, ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন, আজাদ হোসেন, মাসুক মিয়া প্রমুখ।
অপরদিকে দুপুর ২টায় সুনামগঞ্জের বন্যাদুর্গত এলাকা বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর ও সুনামগঞ্জ সদও উপজেলার বানভাসিদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন র‌্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। এসময় উপস্থিত ছিলেন- র‌্যাব সদর দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, র‌্যাব ৯ সিলেটের অধিনায়ক উইং কমান্ডার মোমিনুল হক, সুনামগঞ্জ সিপিসি ৩ এর কোম্পানী কমান্ডার লে. কমান্ডার সিঞ্চন আহমেদ প্রমুখ।
এদিকে সুনামগঞ্জের দুর্গম ও বন্যাদুর্গত এলাকাগুলোতে সেনা, নৌ, বিমান, কোস্টগার্ড, পুলিশ ও বিজিবির উদ্ধার এবং ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
বাসায় উঠেছেন।
সুনামগঞ্জ স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জাকির হোসেন ভোরের কাগজকে জানান, জেলা সদর, তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জ, ধরমপাশা, ছাতক, দোয়ারাবাজার ও জগন্নাথপুর উপজেলাসহ জেলার সবকটি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাচ্ছে তবে পানি কমছে ধীর গতিতে। তিনি আরো বলেন, আশ্রয়কেন্দ্র গুলোসহ বন্যাকবলিত সব উপজেলায় ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়