মাদকবিরোধী অভিযানে রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৪৪

আগের সংবাদ

উদ্ধারের অপেক্ষা আর ত্রাণের আকুতি : পানিবন্দি লাখ লাখ মানুষ > ভেসে উঠছে বানভাসি মানুষের লাশ > এখনই সচল হচ্ছে না ওসমানী বিমানবন্দর

পরের সংবাদ

বন্যার খবর নিয়মিত রাখছি : প্রধানমন্ত্রী > বন্যার সময় পদ্মা সেতু জাতির জন্য আশীর্বাদ

প্রকাশিত: জুন ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ২০, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : পদ্মা সেতুটি বন্যার প্রেক্ষাপটে সহজ যোগাযোগের ক্ষেত্রে জাতির জন্য আশীর্বাদ হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ২৫ জুন বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু উদ্বোধনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেছেন, আমি মনে করি, পদ্মা সেতু এমন একটা সময় উদ্বোধন করতে যাচ্ছি সে সময় বন্যা শুরু হয়ে গেছে এবং এই বন্যা দক্ষিণাঞ্চলেও যাবে। সে সময় পণ্য পরিবহন, বন্যা মোকাবিলা, বন্যার সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের সহযোগিতা করার একটা বিরাট সুযোগ আসবে। বন্যার্তদের ত্রাণ দেয়া থেকে ওষুধ সরবরাহ এবং খাদ্য সরবরাহের বিষয়টি আরো সহজতর হবে। ’৮৮ সালের বন্যায় গোপালগঞ্জে আটকা পড়ার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, তখন এরকম পদ্মা সেতু থাকলে সহজেই চলে আসা সম্ভব হতো।
গতকাল রবিবার প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের শাপলা হলে আন্তর্জাতিক ক্রীড়াক্ষেত্রে দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনা ক্রীড়াবিদদের মাঝে সম্মাননার চেক বিতরণকালে দেয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
’৯৮ সালে বাংলাদেশের সব থেকে ভয়াবহ এবং দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঠিক সেই বন্যার আগেই আমরা যমুনা নদীর উপর বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু উদ্বোধন করেছিলাম। আর সেটা করেছিলাম বলেই উত্তরবঙ্গ থেকে পণ্য পরিবহনসহ সব কাজের সুবিধা হয়।
সরকারপ্রধান বলেন, বন্যায় নদীগুলো আরো ভয়ংকর হয়ে উঠলে প্লাবিত দক্ষিণাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার উত্তরাঞ্চল থেকে সুবিধাটা পায়। যার ফলে বন্যা সফলভাবে মোকাবিলা সম্ভব হয়। ওই সময় বিবিসি, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রচার ছিল- সে বন্যায় প্রায় দুই কোটি লোক না খেতে পেয়ে মারা যাবে। কিন্তু আমরা বলেছিলাম, ‘একজন মানুষকেও সরকার না খেয়ে মরতে দেবে না’ এবং সেটা সম্ভব হয়েছিল। আর এই কাজে সেই সেতুটা তখন বিরাট কাজে এসেছিল।
সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার খবর নিয়মিত রাখছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি মোকাবিলার সব ধরনের প্রস্তুতি সরকারের রয়েছে। প্রশাসন, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী থেকে শুরু করে আমাদের অন্য সব প্রতিষ্ঠাগুলো মানুষকে উদ্ধার করা, তাদের ত্রাণ দেয়ার সব ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। এছাড়া আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, প্রত্যেক নেতাকর্মী, বিভিন্ন এলাকায় তারাও সহযোগিতা করছেন। খাবার বিতরণ থেকে শুরু করে উদ্ধার কাজে ব্যবস্থা নিচ্ছেন। স্যালাইনের ব্যবস্থা, পানির ব্যবস্থাসহ অন্যান্য যা যা দরকার হতে পারে তার প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি।
বন্যার সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুনামগঞ্জ থেকে পানি এখন কিছুটা নামতে শুরু করেছে। কিন্তু পানি যখন নামবে, তখন আমাদের অন্যান্য অঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। এটা আমাদের প্রাকৃতিক নিয়ম। কাজেই আমাদের বিশেষ করে ময়মনসিংহ বিভাগ, রংপুর বিভাগেও বন্যার সম্ভাবনা আছে। সেটা আগে থেকেই সতর্কতা আমরা নিচ্ছি এবং

সেই ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। পানি নিষ্কাশনের জন্য যা যা করণীয় আমরা সেটাও করে যাচ্ছি।
প্রকৃতির নিয়ম মেনেই ‘বাঁচতে হবে’ মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা পারি, এটা আমি অন্তত বলতে পারি। দুর্যোগ মোকাবিলারও ব্যবস্থা নিতে পারি, আবার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের জীবন তো চলতে হবে।
খেলাধুলাকে এগিয়ে নেয়ার মাধ্যমে দেশে বিশ্বমানের ক্রীড়াবিদ তৈরিতে তার সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্যা আমরা মোকাবিলা করব এবং খেলাধুলাও আমাদের চলবে, সবই আমাদের চলবে। এটাই আমাদের জীবন এটাকেই মেনে নিতে হবে। এই বাস্তব এবং বাস্তবতার সঙ্গে তাল মিলিয়েই আমাদের চলতে হবে এবং বিশ্বসভায় আমরা মাথা উঁচু করেই চলব।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাফ-২০২১ চ্যাম্পিয়ন মহিলা অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় ফুটবল দলের ৩৩ জন সদস্যসহ মোট ৮৮ জন ক্রীড়াবিদকে আর্থিক সম্মাননা দেয়া হয়। অপর ৫৫ জন খেলোয়াড়ের মধ্যে মুজিববর্ষ ফিফা আন্তর্জাতিক ফুটবল সিরিজ ২০২০-এর ৩৩ জন এবং বঙ্গবন্ধু ৪-জাতি ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০২২-এর বিজয়ী ২২ জন খেলোয়াড় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। অনুষ্ঠানে সাফ-২০২১ চ্যাম্পিয়ন মহিলা অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন মারিয়া মান্ডা, খেলোয়াড় মনিকা চাকমা এবং প্রধান প্রশিক্ষক গোলাম রব্বানী ছোটন, বাংলাদেশ শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন ফয়সাল খান এবং বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন জামাল ভূঁইয়ার হাতে আর্থিক সম্মানীর চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানের শুরুতে তিন শ্রেণির ক্রীড়া দলের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি (বাফুফে) কাজী মো. সালাহউদ্দিন, মহিলা অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা এবং বাংলাদেশ শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ফয়সাল খান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। স্বাগত বক্তৃতা করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়