সোহেল চৌধুরী হত্যা : শেষ দিনেও দাখিল হয়নি কেস ডকেট

আগের সংবাদ

ভয়াবহ বন্যায় দিশাহারা মানুষ

পরের সংবাদ

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন জেলায় জেলায় উৎসব : প্রধানমন্ত্রী > মানুষের অভূতপূর্ব সাড়াই পদ্মা সেতু নির্মাণে সাহস জুগিয়েছিল

প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : দেশবাসীর অভূতপূর্ব সাড়ার ফলেই নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে জানিয়ে দেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেজন্য এই পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী দিনের আনন্দ শুধু পদ্মা পাড়েই সীমাবদ্ধ না রেখে প্রত্যেক জেলায় উৎসব করার কথা জানান তিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রংপুরের পল্লী জনপদ এবং গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্যবিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বাপার্ড) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন ঘোষণা দিয়েছিলাম আমাদের নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করব। তখন দেশের সাধারণ মানুষ আমার পাশে দাঁড়িয়েছিল। তারা বলেছিল- আমাদের যার যা আছে আমরা দেব। নিজের টাকায় সেতু করব। অনেকে চেকও পাঠিয়েছেন। এই যে মানুষের অভূতপূর্ব সাড়া, সেটাই আমার সাহস জুগিয়েছিল। শক্তি জুগিয়েছিল। কারণ মানুষের শক্তিতে আমি বিশ্বাস করি।
তিনি বলেন, এত বাধাবিঘœ অতিক্রম করে পদ্মা সেতু সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি করতে পেরেছি। এই পদ্মা সেতু নিয়ে কত কথা কত অপবাদ দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কানাডা কোর্ট রায় দিয়েছে, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক যেসব অভিযোগ এনেছে সব ভুয়া মিথ্যা, দুর্নীতির কোনো অভিযোগই এখানে টেকে নাই। সরকারপ্রধান বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়ে গেছে। যে দক্ষিণাঞ্চল সারাজীবন অবহেলিত ছিল। এখন আর অবহেলিত থাকবে না। যোগাযোগ ব্যবস্থা যদি একটা জায়গায় হয়, সেখানকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন এমনিতেই হয়ে যায়। আমরা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। পদ্মা পাড়ের মানুষ সবসময় তো অবহেলিত ছিলাম। দারিদ্র্য আমাদের নিত্যসঙ্গী ছিল। আর সেটা থাকবে না। আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করতে যাচ্ছি। সবাইকে অনুরোধ করব একটু ধৈর্য ধরে চলবেন। গাড়ি নিয়ে কেউ প্রতিযোগিতা করবেন না। কে আগে গেল পরে গেল এসব করবেন না। অর্থাৎ কোনো রকম দুর্ঘটনা যেন না ঘটে সেদিকে খেয়াল রেখে সবাই চলাচল করবেন। উৎসবটা পদ্মাপাড়ই শুধু হবে না সারা বাংলাদেশ করবে। আমি চাচ্ছি প্রত্যেক জেলায় জেলায় উৎসব হোক, কারণ এটা আমাদের জন্য এক বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে খরস্রোতা নদী আমাজন, তারপর হচ্ছে পদ্মা। এই পদ্মায় এখানে একটা সেতু করতে পারি সেটা অনেকেরই ধারণা ছিল না। তার উপর এই সেতুটা হচ্ছে দ্বিতল সেতু। নিচ দিয়ে ট্রেন যাবে উপর দিয়ে গাড়ি যাবে, এটা একটা কঠিন কাজ। পৃথিবীতে এই ধরনের কাজ বোধহয় এটাই প্রথম। এখানে যে

সমস্ত মেশিনারিজ ব্যবহার করা হয় এটা বোধহয় আর কোথাও হয়নি। আর যে কথাটা ছিল সেটাও জানেন। এই সেতু করতে গিয়ে আমাদের ওপর মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। যেটা আমি চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম। আমরা এখানে দুর্নীতি করতে বসিনি, নিজেদের ভাগ্য করতে বসিনি। দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি, দেশের উন্নয়ন করতে এসেছি।
ড. ইউনূসের বেইমানির কারণে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বিশ্বব্যাংক বন্ধ করে দিয়েছে অভিযোগ করে সরকার প্রধান বলেন, আমাদের দেশেরই একজন যে আমার কাছ থেকে সব থেকে বেশি সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে। আর তারই বেইমানির কারণে এই পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ হয়ে যায়। গ্রামীণ ব্যাংক যখন একেবারেই বসে যাচ্ছিল। তখন ব্যাংক চালু রাখার জন্য ১৯৯৭-৯৮ সালে আমাদের খুব খারাপ সময় ছিল। কারণ বিশাল বন্যা ছিল। রিজার্ভ খুব কম ছিল। অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই নাজুক ছিল। একদিকে অর্থনৈতিক মন্দা অন্যদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত। সে অবস্থায়ও ব্যাংকটা যেন চালু রাখতে পারে সেজন্য প্রথমে ১০০ কোটি পরে ২০০ কোটি আরো পরে ১০০ কোটি মোট ৪০০ কোটি টাকা দিয়ে ব্যবসা চালু রাখার সুযোগ করে দিই। গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবসাটা দেই যাতে গ্রামীণ ব্যাংকের লভ্যাংশটা গ্রামীণ ব্যাংকে যায়। জীবনে একটা পয়সাও দেয় নাই। শ্রমিকদের পাওনা টাকা দেয় না আর কি দেবে? সেটা হচ্ছে আমাদের দেশের নোবেল লরিয়েট ডক্টর ইউনূস। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের এমডির পদ ছাড়বেন না। যদিও আইন আছে ৬০ বছর, তার তখন ৭০ বছর পার হয়ে গেছে। ১০ বছর তিনি বেআইনিভাবে এমডি থেকেছেন। তারপর আরো থাকবেন। তাকে আমাদের তরফ থেকে বলা হয়েছে আপনি উপদেষ্টা থাকেন, আপনাকে সেই সম্মান দিয়ে রাখা হবে। সেটাও তিনি মানেন নাই। সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন আর মামলায় যথাযথভাবে হেরেও গিয়েছিলেন?। কোর্ট আর যাই পারুক তার বয়স তো দশ বছর কমাতে পারে নাই। মামলায় হেরেও গিয়েছিলেন তিনি। পরে তদবির করে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকে দিয়ে হিলারি ক্লিনটন তার বন্ধু ছিল সে তখন আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ক্লিনটন ফাউন্ডেশনকে ইউনূস মোটা অঙ্কের চাঁদাও দিয়েছিলেন, অনুদান দিয়েছেন। জানিনা এত টাকা তিনি কোথায় পেলেন সেটাও দিয়েছিল।
তিনি আরো বলেন, ইউনূস আমেরিকার সরকারকে ধরে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক আমার পদ্মার টাকা বন্ধ করে দেয়। আমাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দেয় কানাডার কোর্টে। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম ওয়ার্ল্ড ব্যাংককে দুর্নীতির প্রমাণ দিতে হবে। আমি এমনিতে মেনে নেব না, প্রমাণ দিতে হবে। প্রমাণ দিতে পারে নাই। তখন বলেছিলাম টাকা লাগবে না আমরা নিজের টাকায় করব। আজকে সেটা আমরা করতে পেরেছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়