সোহেল চৌধুরী হত্যা : শেষ দিনেও দাখিল হয়নি কেস ডকেট

আগের সংবাদ

ভয়াবহ বন্যায় দিশাহারা মানুষ

পরের সংবাদ

কুতুবদিয়ায় জেলেদের চাল সহায়তা : ৫৬ কেজিতে টিপসই মেলে ৪৯ কেজি

প্রকাশিত: জুন ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এম এ মান্নান, কুতুবদিয়া (কক্সবাজার) থেকে : সাগরে মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। এখন জেলেদের মাছ ধরা বন্ধ, তাই বলে বন্ধ নেই আহার। এই ৬৫ দিনে মানবিক সহায়তা হিসেবে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় সরকার খাদ্যশস্য (চাল) বিতরণ শুরু করেছে। তবে এই চাল বিতরণে চলছে নানা অনিয়ম। জেলেরা ৫৬ কেজিতে চালের বিপরীতে টিপসই দিলেও বাস্তবে মেলে ৪৯ কেজি।
স্থানীয় মৎস্য অফিসের তালিকা অনুযায়ী উপজেলায় ১০ হাজার ৯৫৯ জন জেলে পরিবার চাল পাবে। এর মধ্যে উত্তর ধুরুং ইউনিয়নে ২ হাজার ৮৭৫ জন, দক্ষিণ ধুরুংয়ে ১ হাজার ৫১১ জন, লেমশীখালীতে ৯৭৬ জন, কৈয়ারবিল ইউনিয়নে ৭৫২ জন, বড়ঘোপে ২ হাজার ৪১২ জন ও আলী আকবর ডেইলে ২ হাজার ৪৩৩ জন জেলে রয়েছেন। জেলে নিবন্ধনের শুরু থেকেই রয়েছে নানা অনিয়ম-স্বজনপ্রীতির অভিযোগ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও মৎস্য অফিসের সমন্বয়ে তালিকা হলেও গতবছর যারা চাল পেয়েছেন তাদের অনেকের নাম নেই মাস্টাররোলের তালিকায়। আবার উপজেলা মৎস্য অফিসের তালিকায় সর্বশেষ নিবন্ধন থাকলেও অনেক ইউপি সদস্য তাদের পছন্দমত তালিকা করে মাস্টার রোল করেছেন। এতে ভোগান্তি বেড়েছে শত শত জেলের।
দক্ষিণ ধুরুং ৩নং ওয়ার্ডের জেলে মো. আলমগীর ও মো. মানিক জানান, তাদের নাম উপজেলা মৎস্য অফিসে আছে কিন্তু স্থানীয় মেম্বারের তালিকায় নেই। এর ফলে তারা চাল পাননি। ২০১৭ সালে কার্ড ইস্যু হয় সাদ্দাম হোসেনের নামে। তিনি গত বছর চাল পেয়েছেন। এবার তার নাম নেই। একই ইউনিয়নে ২০১৬ সালে নিবন্ধন পাওয়া রসিদ ও ৫নং ওয়ার্ডের জোবাইরের টোকেন থাকলেও সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যের মাস্টাররোলে নাম নেই। পেশা বদল, মৃত্যুবরণ, ও স্বজনপ্রীতির কারণে এসব গোঁজামিল দেখা দিয়েছে।
দক্ষিণ ধুরুং ৮নং ওয়ার্ডের মুছার পাড়ার জহির আলম জানান, মৎস্য অফিসের তালিকায় নাম থাকলেও মাস্টার রোলে নেই। আগের দিন ফেরত গেছেন। এক হাজার টাকায় তালিকায় নাম উঠেছে। চাল ৫৬ কেজি নয়, পেলেন ৫০ কেজি। এ ধরনের অনিয়ম আরো রয়েছে বলে ওই ব্যক্তি জানান।
দক্ষিণ ধুরুং ইউপির চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আল আজাদ জানান, কার্ডধারী ও মৎস্য অফিসের তালিকায় নিবন্ধনের স্লিপ নিয়ে যারা আসছেন তাদের বিষয়টি তিনি বিশেষ বিবেচনায় রেখেছেন। মৎস্য অফিসের তালিকা হরেক রকমের। মিল খুঁজে পাচ্ছেন না জেলেরা। জেলেদের অসংখ্য কার্ড সংশোধনের দরকার হওয়ায় তিনি বারবার উপজেলা সমন্বয় সভায় দাবি জানালেও কোনো কাজ হয়নি। দীর্ঘদিনের গরমিল দেখা যাচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।
একইভাবে বড়ঘোপ ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, তিনি ৩ রকম তালিকা পেয়েছেন। একটির সঙ্গে আরেকটির মিল নেই। কীভাবে সঠিক জেলেদের তালিকা বের করবেন তা বুঝতে পারছেন না। তিনিও বলেন তালিকা তৈরিতে নানা অনিয়ম দেখা যাচ্ছে। তবে নিবন্ধিত তালিকা যেভাবে আছে তিনি সে অনুযায়ীই চাল বিতরণ করবেন বলে জানান। উপজেলা মেরিন ফিসারিজ কর্মকর্তা মো.

নাজমুস সাকিব বলেন, জেলেদের তালিকা নিবন্ধনে মৎস্য অফিসের কোনো অনিয়ম নেই। পেশা বদলসহ নানা কারণেই সংশোধন করা প্রয়োজন। বিষয়টি দীর্ঘদিন ঝুলে থাকায় ঝামেলা বাড়ছেই।
দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তবে মৎস্য অফিসের প্রকাশিত তালিকা মোতাবেক চাল বিতরণ হলে সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে বলে তিনি মনে করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়