মির্জা ফখরুল : খালেদার কিছু হলে দায় নিতে হবে সরকারকেই

আগের সংবাদ

কুমিল্লায় ইসির ‘এসিড টেস্ট’

পরের সংবাদ

পুলিশ নিয়ে জাতীয় সংসদে এমপিদের যত অভিযোগ

প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৪, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : পুলিশ সদস্যরা অপরাধ-অনিয়মে জড়িয়ে পড়ছেন অভিযোগ তুলে এই বাহিনীকে আরো বেশি জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি সংসদে তুলেছেন বিরোধী দলের সদস্যরা। গতকাল সোমবার সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা এ দাবি তোলেন। জবাবে সরকারের অবস্থান তুলে ধরেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তবে তিনিও স্বীকার করেন, পুলিশে কেউ খারাপ নেই, এটা কেউ হলফ করে বলতে পারবে না।
সম্পূরক বাজেটের আলোচনায় স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু পুলিশ বাহিনীর ভেতরের দুর্নীতিবাজদের ‘অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে’ খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করেন। গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, পুলিশ বাহিনীর কনস্টেবল থেকে শুরু করে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নানা অপরাধে জড়িত হওয়ার যে প্রবণতা বেড়ে গেছে এর কারণ, যেসব পুলিশ অপরাধ করছে তার শাস্তি হচ্ছে না। এ কারণে পুরো পুলিশ বাহিনী প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ছে।
বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেন, এই সরকারের আমলে রাষ্ট্রীয় বাহিনী নয়, পুলিশ পরিণত হয়েছে দলীয় বাহিনীতে। পুলিশের কাছে নতুন সমস্যায় পড়তে হয় কিনা, এই আশঙ্কায় মহাবিপদে পড়লেও পুলিশের কাছে মানুষ যেতে চায় না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিচারবহির্ভূত হত্যা-গুম তো করেই। হেফাজতে নিয়ে নির্যাতন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। এর প্রতিকার চাইতে গেলেও নেমে আসে নির্যাতন।
জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, আজকে পুলিশের কেউ অন্যায় করলে মানবাধিকার কমিশন নিশ্চুপ থাকে। কোনো পুলিশ অন্যায় করলে সব পুলিশ একত্র হয়ে তাকে সাপোর্ট করে। এতে করে জুডিশিয়ারি অসহায় হয়ে যায়। জনগণের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, কিন্তু তাদের যাওয়ার জায়গা নেই। পুলিশকে বুঝতে হবে, ‘পি ফর পোলাইট’। আমাদের পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে জনগণকে তাদের চাকর মনে করেন। পুলিশের দায়বদ্ধতা প্রয়োজন। পুলিশ মনে করে অস্ত্র তার হাতে, তার কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। তারা সীমাহীন ক্ষমতার মালিক।
বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, পুলিশ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলার বাদী ও সাক্ষী হয়, এতে প্রমাণ করে দেশের বিচার ব্যবস্থার অবস্থা কতটা নাজুক। সরকারি দল চায় পুলিশ তাদের কথামতো চলবে। এই ধারা থেকে আমরা বের হয়ে না আসতে পারলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে নিতে পারব না।
জাতীয় পার্টির রওশন আরা মান্নান বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিছু ভালো কাজ করছে। কিছু খারাপ কাজও করছে। এই খারাপগুলোকে শুধরানো দরকার।
স্বতন্ত্র এমপি রেজাউল করীম বাবলু বলেন, পুলিশের মধ্যে ব্যাপক দুর্নীতি ও অপরাধ বোধ গড়ে উঠেছে। তারা এখন রক্ষক থেকে ভক্ষক হয়ে উঠেছে। এসব পুলিশ বাহিনীকে ধরে ধরে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
এসব অভিযোগের জবাবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সংসদকে বলেন, পুলিশ বাহিনীকে নিয়ে যে বক্তব্য দেয়া হয়েছে সেটা তারাই প্রমাণ করেছেন, এটা নেহায়েত রাজনৈতিক বক্তব্য। পুলিশের কাজ দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন। বর্তমান সরকারের অধীনে পুলিশ অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করছে।
মোজাম্মেল হক আরো বলেন, পুলিশে কেউ খারাপ নেই, এটা কেউ হলফ করে বলতে পারবে না। কিন্তু দেখতে হবে যারা অন্যায় করছে, তাদের সরকার বরদাশত করছে কিনা। যদি কারো ক্ষেত্রে অন্যায়-অনিয়মের সত্যতা প্রমাণ হয়, সরকার তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়