ওমর সানীকে গুলি করার হুমকি জায়েদ খানের

আগের সংবাদ

সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ : পাচার হওয়া অর্থ দেশে আনার প্রস্তাবে সমর্থন

পরের সংবাদ

তদন্ত কমিটি সময় চেয়েছে, আরো দুজনের মৃত্যু : সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি

প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ১৩, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনায় আরো দুজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গতকাল রবিবার দুপুর ২টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নুরুল কাদের (২২) নামে একজনের মৃত্যু হয়। এর আগে রবিবার ভোররাতে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মী গাউছুল আজমের (২২) মৃত্যু হয়। সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৪৮ জনে।
এদিকে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটির নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন জমা দেয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। ঘটনা তদন্তে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় থেকে গঠিত কমিটি তদন্তকাজে আরো পাঁচ কর্মদিবস সময় চেয়েছে। গতকাল রবিবার দুপুরে কমিটির প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান তদন্তকাজে আরো পাঁচ দিন সময় চেয়ে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আবেদন করেন। তিনি বলেন, ঘটনা তদন্তে ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে সময় দেয়া হয় পাঁচ কার্যদিবস। তদন্তকাজে আরো পাঁচ কর্মদিবস সময় চেয়ে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। এ তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জাকির হোসেন খান, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের অতিরিক্ত কমিশনার আবু

নুর রাশেদ আহমেদ, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার পরিচালক মুফিদুল আলম, সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নের মেজর আবু হেনা মো. কাউসার জাহান, চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (পরিবহন) এনামুল করিম ও চট্টগ্রামের বিস্ফোরক পরিদর্শক তোফাজ্জল হোসেন। কমিটিতে সদস্য সচিব রাখা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমনী আক্তারকে।
অন্যদিকে এই ঘটনায় জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ করছে। এ কমিটিরও আরো বেশি সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, তাদের প্রতিবেদন সাত কর্মদিবসের মধ্যে জমা দিতে বলা হয়েছে। সেই সময় এখনো শেষ হয়নি।
তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (স্থানীয় সরকার) বদিউল আলম বলেন, তদন্তের কাজ চলছে। এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথাও বলেছি। সময় আরো বাকি রয়েছে। তবে এ সময়ের চেয়ে আরো বেশি সময় লাগতে পারে।
শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এস এম আইউব হোসেন জানান, ঘটনার পরদিন চট্টগ্রাম থেকে হেলিকপ্টারে ফায়ার সার্ভিস কর্মী গাউছুল আজমসহ সাতজনকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। ভর্তি করা হয় আইসিইউতে। অবস্থার অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। মাঝে কিছুটা উন্নতি হলে লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়া হয়। কিন্তু আবার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। তার শরীরের ৭০ শতাংশ দগ্ধ ছিল। তার শ্বাসনালি পুড়ে গিয়েছিল। বর্তমানে ১৯ জন রোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে আইসিইউতে আছেন দুজন।
ফায়ার ফাইটার গাউসুল আজম ২০১৮ সালে চাকরিতে যোগদান করেন। তার গ্রামের বাড়ি যশোর জেলার মনিরামপুরে। বাবার নাম আজগর আলী। গাউসুল আজমের স্ত্রী কাকলি আক্তার ও ছয় মাসের ছেলে সন্তান গ্রামের বাড়িতে থাকে।
অন্যদিকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া নুরুল কাদেরের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আগুনে পোড়া ও মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। আট দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তার মৃত্যু হয়। নুরুল কাদেরের বাড়ি বাঁশখালীর পূর্ব চেচুরিয়া গ্রামে।
প্রসঙ্গত, গত ৪ জুন রাতে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি এলাকায় অবস্থিত বিএম কন্টেইনার ডিপোতে আগুন লেগে বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮ জনে। এছাড়া দগ্ধ হয়ে শতাধিক ফায়ার সার্ভিসের কর্মী, শ্রমিক ও কর্মকর্তা চমেক হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট এবং পার্কভিউ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়