রাজধানীর বছিলায় জুতার কারখানায় আগুন

আগের সংবাদ

সংসদে প্রধানমন্ত্রী : দেড় বিলিয়ন ডলার সহায়তা সংগ্রহের চেষ্টা চলছে

পরের সংবাদ

‘মাঙ্কিপক্স’ সন্দেহে ঢাকার হাসপাতালে তুর্কি নাগরিক > চর্মরোগও হতে পারে : চিকিৎসক

প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আফ্রিকার স্থানীয় এক ভাইরাস ‘মাঙ্কিপক্স’। বিশ্বজুড়ে গত কয়েক মাস ধরে এই ভাইরাস নিয়ে শুরু হয়েছে শঙ্কা। বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশে ছড়িয়েছে এই ভাইরাসের সংক্রমণ। এ পর্যন্ত প্রায় ৮০০ জন এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর। এরই মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিদেশ থেকে আসা এক ব্যক্তিকে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত সন্দেহে ঢাকার মহাখালীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে নেয়া হয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ বাড়তে থাকে। তবে সন্দেহভাজন এই ব্যক্তির মধ্যে মাঙ্কিপক্সের কোনো উপসর্গ নেই। তিনি দীর্ঘদিন ধরে চর্মরোগে ভুগছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে নমুনা পরীক্ষায় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ওই বিদেশি নাগরিক আইসোলেশনে থাকবেন।
জানা যায়, ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুপুর ১২টায় টার্কিস এয়ারলাইন্সে আসা তুর্কিয়ের নাগরিক আকসি আলতে (৩২) ইমিগ্রেশন পার হওয়ার সময় ‘মাঙ্কিপক্স’ আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হয়। পরে তাকে বিমানবন্দর হেলথ সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
শাহজালাল বিমানবন্দরের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শাহরিয়ার সাজ্জাদ জানান, মাঙ্কিপক্স সন্দেহে একজন বিদেশি নাগরিককে বিমানবন্দরের হেলথ ডেস্কে আনা হয়। এরপর তাকে সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে তাদের দৃষ্টিতে লক্ষণগুলো মাঙ্কিপক্স মনে হচ্ছে না।
সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান বলেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে বিকাল ৩টার দিকে আমাদের এখানে ভর্তি করা হয়েছে। ১০ বেডের আইসোলেশন ওয়ার্ডে তাকে পর্যবেক্ষণে রেখেছি। তার শরীরে মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ নেই বলেই ধারণা করছি। শরীরে যে রেশের কারণে তাকে মাঙ্কিপক্স রোগী বলে সন্দেহ করা হয়েছে সেগুলো দীর্ঘদিনের চর্মরোগের। ওই ব্যক্তির চিকিৎসার ইতিহাস পর্যালোচনা করে মনে হচ্ছে, এটি পুরনো চর্মরোগ। তারপরও পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার জন্য রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) ওই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করেছে। আরটিপিসিআর টেস্টের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টায় নিশ্চিত হওয়া যাবে ওই রোগী মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত কিনা।
আইইডিসিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন জানান, ওই ব্যক্তিকে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এখনো নিশ্চিত না। যেহেতু এটি আমাদের জন্য নতুন রোগ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে কিছুটা সময় লাগবে।
আইইডিসিআর সূত্রে জানা গেছে, সন্দেহকৃত ব্যক্তির নমুনার রিপোর্ট পেতে ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টা সময় লাগবে। তবে আপাতদৃষ্টিতে লক্ষণ দেখে ওই ব্যক্তি মাঙ্কিপক্সে সংক্রমিত নন বলেই ধারণা করছেন তারা।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে মাঙ্কিপক্সে সংক্রমিত সন্দেহে এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তির পর গতকাল এক বিবৃতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, দেশে মাঙ্কিপক্সে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি আক্রান্ত হননি। ভবিষ্যতে কোনো ব্যক্তির আক্রান্তের ঘটনা কখনো ঘটলে তা গণমাধ্যমকে জানানো হবে।
প্রসঙ্গত, আফ্রিকার বাইরে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী প্রথম শনাক্ত হয় ব্রিটেনে। এরপর ইউরোপের স্পেন, জার্মানি, পর্তুগাল, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, ইতালি ও সুইডেনসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ বাড়ছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এ বিষয়ে বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশের

বিভিন্ন বন্দরকে মাঙ্কিপক্স নিয়ে সতর্ক করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর আগে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়ে দুজন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি হয়েছেন এমন খবর ঘুরে বেড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। পরবর্তী সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায় বিষয়টি নিছক গুজব।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, মাঙ্কিপক্স হারিয়ে যাওয়া গুটি বসন্তের মতো। তবে তুলনামূলক কম গুরুতর এবং সংক্রমণ বেশি ছড়ায় না। এই রোগের প্রাথমিক উপসর্গ হচ্ছে জ¦র, মাথাব্যথা, গাঁট ও মাংসপেশিতে ব্যথা এবং দেহে অবসাদ। জ¦র শুরুর পর দেহে গুটি দেখা দেয়। এসব গুটি শুরুতে দেখা দেয় মুখে। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে হাত, পায়ের পাতাসহ দেহের বিভিন্ন জায়গায়। এই গুটির জন্য রোগী দেহে খুব চুলকানি হয়। পরে গুটি থেকে ক্ষত দেখা দেয়। জলবসন্তের মতোই রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলেও দেহে এসব ক্ষত চিহ্ন রয়ে যায়। রোগ দেখা দেয়ার ১৪ থেকে ২১ দিনের মধ্যে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়