রাজধানীর বছিলায় জুতার কারখানায় আগুন

আগের সংবাদ

সংসদে প্রধানমন্ত্রী : দেড় বিলিয়ন ডলার সহায়তা সংগ্রহের চেষ্টা চলছে

পরের সংবাদ

এখনো ঝুঁকিমুক্ত নয় ডিপো কন্টেইনারে আগুন জ্বলছে > তদন্ত প্রতিবেদন পেলে আইনি ব্যবস্থা : আইজিপি

প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৮, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে অগ্নিকাণ্ডের তিন দিন পেরিয়ে গেলেও আগুন এখনো পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়নি। এখনো বিভিন্ন কন্টেইনারে জ্বলছে আগুন। উঠছে ধোঁয়া। ডিপোটি এখনো ঝুঁকিমুক্ত নয়। আগুন নেভাতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। পাশাপাশি বিএম ডিপোতে দায়িত্ব পালন করছে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ডিপো এলাকায় ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মো. আনিসুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। কিছু কন্টেইনার থেকে এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। এখন না জেনে যদি ফায়ার ফাইটিং করতে যাই, তাহলে কন্টেইনারের ভেতরে দাহ্য বস্তু থাকলে আগুন বাড়তে পারে। যাতে আর কোনো দুর্ঘটনা না হয়, সেজন্য রাসায়নিকের কন্টেইনার রিমুভ করে ডিপোর অন্য অংশে নিতে বলা

হয়েছে।
গত রবিবার ডিপোতে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট কাজ করলেও গতকাল থেকে ২টি ইউনিট কাজ করছে। আশপাশের প্রায় সব পুকুরের পানি শেষ হয়ে যাওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের পানির গাড়িতে করে দূর থেকে পানি এনে আগুন নেভানোর কাজ চলছে।
ডিপোতে রাসায়নিকের কতটি কন্টেইনার আছে জানতে চাইলে আনিসুর রহমান বলেন, কন্টেইনারের বিষয়ে এখনো ডিপোর মালিকপক্ষ নিশ্চিত করেনি। কখনো ২৮টি, কখনো ৩০টি বলছে। তাদের বলেছি, রাসায়নিকের কন্টেইনারগুলো সরিয়ে নিতে। মালিকপক্ষ বলেছে- তারা চেষ্টা করছে। তবে রিমুভ করাও ঝুঁকিপূর্ণ, দ্রুত করা সম্ভব নয়।
এদিকে সেই ডিপোর ধ্বংসস্তূপ থেকে গতকাল দুপুরে আরো ২টি মরদেহের অংশবিশেষ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। এ নিয়ে গত তিন দিনে ৪৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হলো। এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মো. আনিসুর রহমান বলেন, দুজনের দেহাবশেষ আমরা পেয়েছি আজ। দুটো লাশের মধ্যে একটির পাশে ফায়ার সার্ভিসের পিপি পাওয়া গেছে। তাই সেটি আমাদের ফায়ারের কর্মী বলে মনে হচ্ছে। আরেকটির পাশে ছিল সিকিউরিটি গার্ডের ড্রেস। সেটি তখন ডিউটিতে থাকা ডিপোর সিকিউরিটি বিভাগের কর্মী বলে মনে হচ্ছে। ডিএনএ টেস্টের পর চূড়ান্ত হওয়া যাবে।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ৯ জন নিহতের তথ্য নিশ্চিত। আরো ৩ জন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের পরিবারের সদস্যরা এসে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়ে গেছেন। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের ১২ জন সিএমএইচে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ঘটনাস্থলের মূল অংশ থেকে গতকাল উদ্ধার করা হয়েছে পুড়ে যাওয়া ৬টি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন। তবে এসব মোবাইল ফোনের মালিক কারা, তা জানা যায়নি। ফায়ার সার্ভিস কর্মী আল-আমিন হোসেন বলেন, মোবাইলগুলো বিস্ফোরণের কারণে পুড়ে গেছে। ৬টি মোবাইলের মধ্যে ৪টিতে সিম লাগানো ছিল। সিমগুলোও পুড়ে গেছে। ফরেনসিক করার পর এসব মোবাইলের প্রকৃত মালিককে শনাক্ত করা যেতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, ডিপোতে কেমিক্যালের কন্টেইনারে বিস্ফোরণের আগে ফায়ার সার্ভিসের যেসব কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছিলেন অথবা উৎসুক যারা আগুন নিয়ন্ত্রণ দেখছিলেন এই মোবাইলগুলো তাদের হতে পারে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে আইনি ব্যবস্থা- আইজিপি : ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে আহতদের দেখতে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোর ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পরেই যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সীতাকুণ্ডের অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনাস্থল থেকে সিআইডিকে সব ধরনের আলামত সংগ্রহ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, তদন্তের জন্য ২টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। একটি সরকারিভাবে আরেকটি ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে। দুই কমিটিতে সিআইডি থেকে বিশেষজ্ঞ দেয়া হবে। ডিপোতে কাজ করতে গিয়ে কর্মীরা আহত হয়েছেন এবং ফায়ারম্যান ও পুলিশ উদ্ধার করতে গিয়ে আহত হয়েছেন। এত ফায়ারম্যান এখন পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনায় মারা যাননি। এখনো ঘটনাস্থল থেকে ধোঁয়া নির্গত হচ্ছে। অতএব স্থানটি এখনো নিরাপদ না। আশা করছি, সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে সম্পূর্ণ কাজ শেষ করতে পারব।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়