প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
জিকরুল হক, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে : সৈয়দপুর পৌর কসাইখানার পাশে ফেলা হচ্ছে বর্জ্য। ফলে রোগজীবাণু ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন সাধারণ নাগরিকরা। দেশের প্রথম শ্রেণির পৌরসভার এমন অরুচিকর কসাইখানা নিয়ে নানা মহলে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, কসাইখানার চত্বর ঘিরে পৌর কর্তৃপক্ষ সেখানে বর্জ্যরে ভাগাড় গড়ে তোলা হয়েছে। বর্জ্যরে পচা দুর্গন্ধে কসাইখানার চারপাশ বিষিয়ে উঠেছে। মাংস পরিবহনের ভ্যানগুলোতে ঝাঁকে ঝাঁকে কাক বসছে।
স্বাস্থ্যবিধি মতে, কসাইখানায় একজন পশু চিকিৎসক, জবাইকারী ও পরিচ্ছন্ন কর্মী থাকার কথা। কিন্তু সব কাজই সেখানে করছে মাংস ব্যবসায়ীরা। কিন্তু পৌর কসাইখানার এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ভাবিয়ে তুলছে সচেতন নাগরিকদের।
প্রতি বছর কসাইখানা থেকে পৌর কর্তৃপক্ষ লাখ লাখ টাকা আয় করলেও এর উন্নয়নে কানাকড়িও খরচ করে না বলে অভিযোগ উঠেছে। পুরোপুরি কসাইখানাটি অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। কথা হয় মাংস ব্যবসায়ী রবি, রব্বানী ও হানিফ কোরাইশীর সঙ্গে। তারা অভিযোগ করে বলেন, কসাইখানাটির অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিয়ে অনেক আবেদন-নিবেদন করেও কোনো ফল মিলছে না। পৌর কর্তৃপক্ষ কসাইখানার উন্নয়নে নিচ্ছে না কোনো ব্যবস্থা। পুরোদমে এ কসাইখানাটি অস্বাস্থ্যকর হয়ে উঠেছে। তাদের মতে, কসাইখানার চারদিক বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে ঘেরা দেয়া হলে অনেকাংশে স্বাস্থ্যকর হয়ে উঠবে।
কথা হয় সৈয়দপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আখতার হোসেন ফেকুর সঙ্গে। তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, প্রথম শ্রেণির পৌরসভার নাগরিকরা প্রথম শ্রেণির সুযোগ-সুবিধা পাওয়া তো দূরের কথা, ন্যূনতম সেবা থেকেও বঞ্চিত। সমাজের অযোগ্য ব্যক্তিরা এখন সমাজ নিয়ন্ত্রণ করছে। যার কারণে সমাজের পরিবেশও অরুচিকর হয়ে পড়েছে।
তিনি দ্রুত স্বাস্থ্যকর কসাইখানা নির্মাণে পৌর কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
কথা হয় স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সৈয়দপুর সাংগঠনিক জেলা শাখার সভাপতি ডা. শেখ নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান, কসাইখানায় পশু জবাইয়ের সময় অবশ্যই পশু চিকিৎসক দিয়ে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জবাইকৃত পশুর মাংসের মাধ্যমে রোগজীবাণু ছড়াতে পারে। এমনকি যে রাঁধুনি ওই মাংস রান্না করবে তার হাত দিয়েও ছড়িয়ে পড়তে পারে রোগজীবাণু। স্বাস্থ্যহীন স্থানের জবাইকৃত পশুর মাংস খেয়ে ডায়রিয়াসহ নানাবিধ পেটের রোগ মানুষের দেখা দিতে পারে। সে কারণে কখনই ময়লা আবর্জনাযুক্ত স্থানে জবাইকৃত পশুর মাংস মানবদেহের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত নয় বলে জানান।
পৌরসভার কসাইখানা বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে কথা হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম হোসাইনের সঙ্গে। তিনি জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। কসাইখানার অব্যবস্থাপনা নিয়ে জানতে কথা হয় মেয়র রাফিকা আকতার জাহান বেবীর সঙ্গে। তিনি মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি আমি জানি না। এখন শুনলাম ব্যবস্থা নেব।
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।