ঐক্য পরিষদের বিবৃতি : ধর্ম মন্ত্রণালয়ে বাজেট বরাদ্দে ধর্মীয় বৈষম্য অবসান দাবি

আগের সংবাদ

নিছক দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা : সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি

পরের সংবাদ

বিএম ডিপো ট্র্যাজেডি : দায়ীদের কোনোভাবেই ছাড় নয়, সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি

প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে গড়ে ওঠা শিল্প-কারখানাগুলোর বেশিরভাগই নজরদারির বাইরে রয়েছে। ফলে কারখানায় আগুন নির্বাপণের ব্যবস্থা আছে কিনা, কোথায় বিস্ফোরক রাখা হচ্ছে, দাহ্য পদার্থ নিয়ম মেনে রাখা হচ্ছে কিনা এসবই থেকে যায় নজরের আড়ালে। বেশকিছু ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড দগদগে দাগ রেখে গেছে দেশের মানুষের মনে। সেই তালিকায় গত বছরের জুলাই মাসে যুক্ত হয়েছে হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সেজান জুস কারখানায় অগ্নিকাণ্ড। সেখানে মারা গেছেন ৫২ জন। সবশেষ শনিবার রাতে সীতাকুণ্ডের ডিপোতে ভয়াবহ এমন অগ্নিদুর্ঘটনা প্রত্যক্ষ করল দেশবাসী। ধারণা করা হচ্ছে, কন্টেইনারে রপ্তানির উদ্দেশ্যে দীর্ঘদিন মজুত রাখা হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের রাসায়নিক ক্রিয়ার কারণে শনিবার মধ্যরাতে কোনোভাবে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। বদ্ধ কন্টেইনারে থাকা ভয়ংকর এ রাসায়নিকটি অন্য কোনো দাহ্য পদার্থের সংস্পর্শে আসায় এক সময় বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর আগুন ভয়ংকর হয়ে ঘটায় মানবিক বিপর্যয়। কর্তৃপক্ষের অবহেলায় পুড়ল অর্ধশত প্রাণ। দগ্ধ ও আহত হয়েছেন আরো চার শতাধিক মানুষ। দগ্ধ ও আহত ৯০ জনকে ভর্তি করা হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। ওই হাসপাতালের আইসিইউতে আছেন চারজন। এছাড়া গুরুতর আহত ও দগ্ধ কয়েকজনকে চট্টগ্রাম ও ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) এবং শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। আহত ও দগ্ধ রোগীদের অনেকের অবস্থাই আশঙ্কাজনক। ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় এখনো কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। প্রশ্ন উঠছে বিএম ডিপোর কার্যক্রম নিয়ে। বিস্ফোরক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছিল না এ ডিপোর। প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রাম বন্দরের অনুমতি নিয়েই তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছিল। ডিপোতে প্রচুর পরিমাণে ‘হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড’ নামের দাহ্য রাসায়নিকের মজুত থাকার কথা বলেছেন উদ্ধারকর্মীরা। সেখানকার ডিপোর পাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নীল রঙের বেশকিছু ফেটে বা গলে যাওয়া জারের গায়ে সতর্কবাণী লেখা, ‘হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড; তাপ পেলে সেগুলো বিস্ফোরণের কারণ হতে পারে।’ হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড মূলত একটি রাসায়নিক যৌগ। যদি হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডকে উত্তপ্ত করা হয়, তাহলে তাপীয় বিয়োজনে তা বিস্ফোরক হিসেবে আচরণ করে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড নিজে পোড়ে না কিন্তু পুড়তে সাহায্য করে। এই কেমিক্যালটি আগুনটিকে খুবই বিপজ্জনক করে তোলে, এখানে সেটাই ঘটেছে। যার কারণে দুদিন ধরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। বিস্ফোরণের এ ঘটনাটিকে দুর্ঘটনা বলা হচ্ছে, এটা হত্যাকাণ্ড। বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করে এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে কারা আছে তাদের খুঁজে বের করতে হবে। এর জন্য যারা দায়ী তাদের আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে। কোথাও শ্রমিকরা নিরাপদ নয়। এর আগে সংঘটিত আগুন দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের বিচার ও শাস্তি না হওয়ায় একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটছে। সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডির হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়