ঐক্য পরিষদের বিবৃতি : ধর্ম মন্ত্রণালয়ে বাজেট বরাদ্দে ধর্মীয় বৈষম্য অবসান দাবি

আগের সংবাদ

নিছক দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা : সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি

পরের সংবাদ

চট্টগ্রামে নেই স্বতন্ত্র বার্ন হাসপাতাল

প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম অফিস : অগ্নিঝুঁকি বেশি থাকলেও চট্টগ্রামে পূর্ণাঙ্গ একটি বার্ন হাসপাতাল নেই। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৬ শয্যার একটি বার্ন ইউনিট থাকলেও সেখানে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা এখানে নেই। দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে স্বতন্ত্র একটি বার্ন হাসপাতাল করার চেষ্টা করা হলেও এখনো তা হয়নি। সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও আগুনে দগ্ধদের অনেককেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিতে হয়েছে।
অবশেষে চট্টগ্রামে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট স্বতন্ত্র বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালের নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান ডা. সামন্ত লাল সেন। এ জন্য একটি জায়গাও দেখা হয়েছে বলে জানান তিনি। কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও আগুনে আহতদের দেখতে এসে বিষয়টি জানান তিনি। গতকাল সোমবার সকালে ডা. সামন্ত লাল সেনের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ

টিম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছায়। এরপর তিনি চমেক হাসপাতালে ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া রোগীদের খোঁজ-খবর নেন এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি আশঙ্কাজনক তিন রোগীকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। একই সঙ্গে তিনি রোগীদের স্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনায় এনে হাসপাতালে অহেতুক ভিড় না করতে সবাইকে অনুরোধ করেন।
গতকাল দুপুরে চমেক হাসপাতালের পরিচালকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, চট্টগ্রামে বিশেষায়িত বার্ন হাসপাতাল করার জন্য ১৫ বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। চট্টগ্রামে হাসপাতালের জায়গা নিয়ে সমস্যা হয়েছিল। এখন নতুন করে চারটি জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। তার মধ্যে একটি জায়গা অর্থ সহায়তাকারী চীনের পছন্দ হয়েছে। মেডিকেলের প্রধান ছাত্রাবাসের পাশে গোয়াছি বাগান এলাকায় ১০০ শয্যার হাসপাতালের জন্য জায়গাটি চিহ্নিত করা হয়। শিগগিরই চীন থেকে তাদের প্রতিনিধি আসবে। তিনি বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনায় যারা এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা খারাপ। যদি তাদের স্বজনরা রাজি হয়, তাহলে আমরা তাদের ঢাকা নিয়ে যেতে চাই। চট্টগ্রামে খুব ভালো চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। চমেক হাসপাতালে যারা দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন সেসব চিকিৎসকদের যোগ্যতা ও দক্ষতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। কিন্তু সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা এখানে নেই। বার্ন এর (পুড়ে যাওয়া) রোগীর জন্য আলাদা আইসিইউ দরকার হয়। এখানে জেনারেল আইসিইউতে তাদের রাখা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বার্ন এর রোগীদের জন্য আইসিইউসহ যে অবকাঠামো প্রয়োজন তা চট্টগ্রামে নেই। তবে বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা খুব ভালো সেবা দিচ্ছেন।
দর্শনার্থী এবং রোগীর স্বজনদের উদ্দেশে ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, দগ্ধ রোগীদের জন্য সবচেয়ে ভয়ের কারণ হচ্ছে সংক্রমণ। সংক্রমণ হলে কোনোভাবেই বাঁচানো যায় না। অযথা হাসপাতালে ভিড় করে তাদের ঝুঁকির কারণ হবেন না। রোগীদের দেখতে এসে অহেতুক ভিড় করবেন না। এই রোগীদের শরীর ফুলে যাচ্ছে। তাদের শ্বাসকষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেজন্য বার্ন আইসিইউতে নিতে হতে পারে। তিনি জানান, এখানে অনেকের চোখে সমস্যা আছে। এখানকার চক্ষু বিশেষজ্ঞ দিয়ে ফলোআপ চিকিৎসা দেয়া গেলে ধীরে ধীরে তারা সুস্থ হয়ে যাবেন।
এ সময় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়–য়া, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান ছাড়াও বার্ন ইউনিটের চিকিৎকরা উপস্থিত ছিলেন। শামীম আহসান জানান, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বর্তমানে ১০২ জন রোগী চিকিৎসাধীন। এছাড়া সিএমএইচে ১৪ জন, জেনারেল হাসপাতালে ২ জন ও বেসরকারি হাসপাতালে ১১ জন চিকিৎসাধীন। গত রবিবার ১৪ জন দগ্ধ রোগীকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন আরো তিনজনকে নেয়া হলে সেই সংখ্যা বেড়ে হবে ১৭ জনে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়