ঐক্য পরিষদের বিবৃতি : ধর্ম মন্ত্রণালয়ে বাজেট বরাদ্দে ধর্মীয় বৈষম্য অবসান দাবি

আগের সংবাদ

নিছক দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা : সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি

পরের সংবাদ

অপরিকল্পিতভাবে বাস্তবায়ন : রৌমারীতে ‘লজিক’ প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন না কৃষকরা

প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলায় সোলার প্যানেলের মাধ্যমে কৃষিজমিতে সেচ সুবিধা, বন্যাকালে নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানীয় জলের সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, বন্যা সহনীয় পানি শোধনাগার ও উঁচুকরণ টিউবওয়েল স্থাপনে প্রকল্পের জন্য প্রায় কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। স্থানীয় সরকার বিভাগের লোকাল গভর্মেন্ট ইনিশিয়েটিভ অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (লজিক) নামের এ প্রকল্প অপরিকল্পিতভাবে বাস্তবায়ন করায় এর সুফল পাচ্ছেন না কৃষকরা। স্থাপন করা বিভিন্ন যন্ত্রাংশ বর্তমানে এলাকাবাসীর কোনো কাজেই আসছে না বলে জানা গেছে।
স¤প্রতি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, তড়িঘড়ি করে বিল উত্তোলন করার কারণে অপরিকল্পিতভাবে এই কাজগুলো করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। তবে তদন্তপূর্বক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তারা।
সূত্র জানায়, রৌমারী উপজেলায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে লজিক প্রকল্পের শৌলমারী ইউনিয়নে ২০ লাখ ৬৯ হাজার ৩৪৭ টাকা, রৌমারী সদর ইউনিয়নে ৩১ লাখ ৪০ হাজার ৬০০ টাকা, বন্দবেড় ইউনিয়নে ৪৩ লাখ ৯৫ হাজার ৬৩২ টাকা ও দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নে ২৪ লাখ ৮৫ হাজার ২৭২ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- সোলার প্যানেলের মাধ্যমে কৃষিজমিতে সেচ সুবিধা, বন্যার সময়ে নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানীয় জলের সরবরাহ নিশ্চিতকরণে বন্যা সহিষ্ণু পানি শোধনাগার স্থাপন ও বন্যাকালে বিশুদ্ধ পানীয় জলের সরবরাহ নিশ্চিতকরণে বন্যা সহিষ্ণু নলকূপ স্থাপন। দেখা গেছে, শৌলমারী ইউনিয়নের চেংটাপাড়া গ্রামে গুচ্ছগ্রাম অফিসসংলগ্ন, রৌমারী সদর ইউনিয়নের ভূন্দুরচর গ্রাম, বন্দবেড় ইউনিয়নে ফলুয়ারচর গ্রাম ও দাঁতভাঙ্গা শালুর মোড় নামক স্থানে ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী সোলার প্যানেলের মাধ্যমে কৃষিজমিতে সেচ সুবিধা ও রৌমারী সদর ইউনিয়নের রৌমারী গ্রাম আমিনুলের বাড়িসহ অন্যান্য ইউনিয়নে ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে বন্যাকালে নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানীয় জলের সরবরাহ নিশ্চিতকরণে বন্যা সহিষ্ণু পানি শোধনাগার স্থাপন করা হয়। প্রতিটি ইউনিয়নে পানীয় জলের সরবরাহ নিশ্চিতকরণে বন্যা সহিষ্ণু উঁচুকরণ নলকূপ স্থাপন অপরিকল্পিতভাবে স্থাপন করা হয়েছে, যা কোনো কাজে আসছে না এলাকার কৃষক ও জনসাধারণের।
কিন্তু প্রকল্পগুলো টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ করার কথা থাকলেও প্রকল্পগুলো ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরাই হচ্ছেন ঠিকাদার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইউপি সদস্য ও এলাকার কৃষক বলেন, সোলারের মাধ্যমে কৃষিজমিতে সেচ সুবিধা ও বন্যা সহিষ্ণু পানি শোধনাগার স্থাপনের স্থান সঠিক জায়গায় হয়নি এবং এমন স্থান থেকে কৃষক বা নিম্নাঞ্চল বন্যায় প্লাবিত কোনো জনসাধারণের কাজে আসবে না এসব কাজের। এ প্রকল্পের কাজগুলো সম্পন্ন নিয়ন্ত্রণ করেন চেয়ারম্যানরা ও লজিক প্রকল্পের কর্মকর্তারা।
শৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, বিগত চেয়ারম্যানরা কাজগুলো করেছেন। কিছু কাজ মানুষের কাজে আসছে না দেখিনি তবে শুনেছি। প্রকল্প কর্মকর্তারা এলে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবহারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দাঁতভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম জানান, আমার ইউনিয়নে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে যে সেচ পাম্প দেয়া হয়েছে তা কিছু কিছু চালু রয়েছে। বন্দবেড় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের সরকার বলেন, সোলার প্যানেলের মাধ্যমে কৃষি সেচের জন্য যে পাম্পগুলো দেয়া হয়েছে সেগুলো চলমান আছে।
প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর খোকন কুমার কুণ্ডু জানান, ওই সময় অন্য কোথাও জায়গা না পাওয়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ইউপি চেয়ারম্যানরা ও এলাকার মানুষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে স্থান নির্ধারণ করে স্থাপন করা হয়েছে। কেউ যদি সেগুলো ব্যবহার না করেন তা হলে ইউপি চেয়ারম্যান এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে স্থানান্তর করে ব্যবহার করা সম্ভব। লজিক প্রকল্পের কুড়িগ্রাম জেলা কো-অর্ডিনেটর মুছা বলেন, আমরা ওই সময় বুঝতে পারিনি বর্তমানে এমন অবস্থা হবে। তবে চেষ্টায় আছি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও চেয়ারম্যানদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং চেয়ারম্যান যদি সহযোগিতা করেন তাহলে স্থানান্তর করে কৃষি সেচের আওতায় আনা যাবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আশরাফুল আলম রাসেল ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বলেন, আমি নতুন এসেছি। বিষয়গুলো জানি না। তবে বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যান বা প্রকল্প পরিচালনার লোকজন যদি আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে সহযোগিতা করেন তাহলে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়