পদ্মা সেতুর উদ্বোধন : সারাদেশে উৎসব হাতিরঝিলে হবে লেজার শো

আগের সংবাদ

সর্বনাশা ধ্বংসযজ্ঞের দায়ভার কার : নিহত অর্ধশত, দগ্ধ-আহত আড়াইশর বেশি, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড মজুতের অনুমতি ছিল না, ২৫ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে

পরের সংবাদ

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদ : রাজবাড়ী জেলার সভাপতি ও সম্পাদককে অব্যাহতি

প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জুন ৫, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

লিটন চক্রবর্তী, রাজবাড়ী থেকে : রাজবাড়ী পৌর এলাকার ভবানীপুর গ্রামের অলোকেন্দু মজুমদারের বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ভেঙে নারীসহ পাঁচজনকে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ইসকন, রাজবাড়ী জেলা শাখার সভাপতি ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদের রাজবাড়ী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জয়দেব কর্মকারের বিরুদ্ধে। তিনি শহরের বিনোদপুর কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা। হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে রাজবাড়ী সদর থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ হয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদ রাজবাড়ী জেলা শাখার সভাপতি এডভোকেট গণেশ নারায়ণ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক জয়দেব কর্মকারকে কেন্দ্র থেকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়ে জানিয়েছে, ঘটনার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত তাদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হলো। ইসকনের মন্দিরে যাওয়ার রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার এ হামলার ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী অলোকেন্দু মজুমদার জানান, ভবানীপুর এলাকায় জয়দেব কর্মকারের নিজের জমি আছে। সেখানে তিনি হাউজিং প্লট করছেন। ইসকন মন্দিরটিকে সামনে রেখে ব্যবহার করছেন। ওই জমিতে যাওয়ার জন্য অনেক দিন ধরেই তার কাছে জমি কিনতে চাইছেন। কিন্তু জমিটি নিয়ে মামলা থাকায় তা বিক্রির উপায় নেই। এ কথা তাকে বহুবার বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জয়দেব কর্মকারসহ ৩০-৩৫ জন লোক চাপাতি, দা, কুড়াল, লাঠিসোটা নিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ফেলে। এ সময় বাধা দিতে গেলে তার বড় ভাই অমরেন্দু মজুমদার, সেজ ভাই অমিতেন্দু মজুমদার, তার স্ত্রী সম্পা দত্ত, ভ্রাতৃবধূ মিতা মজুমদার এবং ছোট বোন অপর্ণা মজুমদারকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। তারা সবাই রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ইসকনের রাজবাড়ী জেলা শাখার সভাপতি ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ থেকে সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত অভিযুক্ত জয়দেব কর্মকার বলেন, আমরা দুই বছর আগে ভবানীপুর এলাকায় ইসকন মন্দিরের জন্য জায়গা কিনেছি। বিভিন্নজনের কাছ থেকে ভিক্ষার টাকায় মন্দির নির্মাণ করেছি।

মন্দিরের অর্ধেক কাজ হওয়ার পর অলোকেন্দু মজুমদার যেখান দিয়ে মন্দিরে যাওয়ার রাস্তা ছিল সেখানে বাঁশের বেড়া দেয়। তখনই তাকে বলেছিলাম এটা আপনি করতে পারেন না। বিষয়টি নিয়ে এমপিসহ অনেকের কাছেই গেছেন। এ নিয়ে সালিশও হয়। সে সালিশের রায়ও মানে না। আমি তাদের বলেছি রাস্তার জন্য যে টাকা বাজার মূল্য তা আমি দেব। কিন্তু সেসব না শুনে তারা সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করে। বিভিন্ন দপ্তরে দরখাস্ত দিয়েও যখন কোনো সুরাহা হলো না তখন এমপি জিল্লুল হাকিম সীমানাপ্রাচীর অপসারণ করার পরামর্শ দেন। সেটা করতে কৃষ্ণভক্তদের নিয়ে বৃহস্পতিবার সেখানে গিয়েছিলেন। তবে কাউকে মারধর করা হয়নি।
রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য জিল্লুল হাকিমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কখনোই সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ফেলার পরামর্শ দেইনি। রাজবাড়ী সদর থানার ওসি শাহাদত হোসেন জানান, এ বিষয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি চিঠি বৃহস্পতিবার রাতে এডভোকেট গণেশ নারায়ণ চৌধুরী ও জয়দেব কর্মকার বরাবর পাঠানো হয়। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, গঠনতন্ত্রের ৭(ঙ)(২) ধারার বিধানুযায়ী কেন আপনার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তা পত্র প্রাপ্তির সাত দিনের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক বরাবর জানানোর জন্য নির্দেশ দেয়া হলো। অভিযোগের সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত আপনার দায়িত্ব স্থগিত করা হলো। পত্রে ডা. পারিজাত কুমার পাল ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং এডভোকেট উমা সেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করবেন বলে উল্লেখ করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়